খানাখন্দে বেহাল ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতাল সড়ক: চরম দুর্ভোগে রোগী ও পথচারীরা

হোছাইন মুহাম্মদ তারেক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২৫, ০৬:৩৩ পিএম
খানাখন্দে বেহাল ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতাল সড়ক: চরম দুর্ভোগে রোগী ও পথচারীরা

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ‘হাসপাতাল সড়ক’ বর্তমানে চরম বেহাল অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় পৌর সদর চৌরাস্তার মোড় থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘেঁষে নয়শিমুল পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। 

বিটুমিন, ইট ও সুরকি উঠে গিয়ে সড়কটি যেন রীতিমতো মিনি পুকুরে পরিণত হয়েছে।

উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার হাজারো মানুষ প্রতিদিন এই সড়ক ব্যবহার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যান। 

ধামদী এলাকায় দক্ষিণ পাশে জলাবদ্ধতার কারণে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিদিন শতাধিক অ্যাম্বুলেন্স, রিকশা, অটোরিকশা ও অন্যান্য যানবাহন কাদা পানি পার হয়ে কোনো রকমে রোগী নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে বাধ্য হচ্ছে।

গত সপ্তাহের টানা বর্ষণে সড়কটির অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। বর্তমানে এটি প্রায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ রাজেশ চক্রবর্তী বলেন, “উপজেলাবাসীর চিকিৎসাসেবার একমাত্র ভরসা আমাদের হাসপাতাল। ঈশ্বরগঞ্জ ছাড়াও গৌরীপুর, নান্দাইল ও কেন্দুয়া থেকেও রোগীরা আসেন। কিন্তু এই সড়কের বেহাল দশা তাদের চিকিৎসাপথকে যন্ত্রণাময় করে তুলছে।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাদিয়া তাসনিম মুনমুন জানান, “আমাদের হাসপাতালে প্রতি মাসে শতাধিক গর্ভবতী নারীকে সিজারসহ বিভিন্ন চিকিৎসা দিতে হয়। বেহাল সড়কে ঝাঁকুনি খেয়ে অনেকের প্রসব ব্যথা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়, জটিলতার আশঙ্কাও থাকে। কেউ কেউ যানবাহনের মধ্যেই সন্তান প্রসব করেছেন। শ্বাসকষ্ট বা হৃদরোগীদের ক্ষেত্রেও বিপদের ঝুঁকি থাকে। তাই দ্রুত সড়ক সংস্কার প্রয়োজন।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ঈশ্বরগঞ্জ শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সালাম বলেন, “২০২০ সালে ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পৌর সদর চৌরাস্তা থেকে আঠারবাড়ি পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে কাজ পায় তাহের ব্রাদার্স। তারা ১২ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন করলেও নয়শিমুল থেকে পৌর সদর পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার এবং সোহাগী ইউনিয়নের বগাপুতা অংশের ১ কিলোমিটার কাজ ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতায় আটকে যায়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হাসপাতালটি এই অংশেই পড়েছে, ফলে রোগী ও পথচারীরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ছেন।”

তিনি আরও জানান, “গত ৮ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সাড়ে ১৪ কোটি টাকার প্রাক্কলন তৈরি করে অনুমোদনের জন্য যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে ভূমি অধিগ্রহণ ও নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”

ইএইচ