বিষখালী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হতে বসেছে বরগুনার বামনা উপজেলার ঐতিহাসিক রামনা লঞ্চঘাট। এক সময়ের ব্যস্ততম এই বাণিজ্যিক কেন্দ্রটি এখন নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার প্রহর গুনছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত কয়েক বছরে ভাঙন ক্রমেই তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে ২০১৭ সালের পর থেকে নদীভাঙন ভয়াবহ রূপ নেয়। শুধু ঘরবাড়ি নয়, শত শত দোকানপাট, ঘাটের অবকাঠামো, এমনকি বাজারের বড় অংশ ইতিমধ্যে নদীতে তলিয়ে গেছে।
রামনা লঞ্চঘাট ছিল বামনা উপজেলার অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পণ্যবাহী ট্রলার ভিড়ত এখানে। স্থানীয় কৃষক ও জেলেদের জন্যও এটি ছিল বেচাকেনার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।
রামনা বাজারের পুরাতন এক ব্যবসায়ী অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, “আমাদের তিন প্রজন্ম এখানে ব্যবসা করেছে। আজ সব কিছু চোখের সামনে শেষ হয়ে যাচ্ছে। যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে মানচিত্র থেকেই রামনা মুছে যাবে।”
ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলোতে এখনও যারা রয়ে গেছেন, তারা প্রতিদিন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। দোকান সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী। এলাকাবাসীরা বলছেন, প্রতি বর্ষায় তারা নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েন—এই বুঝি শেষ ভিটেমাটাটুকুও হারিয়ে যাবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন ও নদীর স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণেই ভাঙন বেড়েছে। তারা শুধু জিও ব্যাগ ফেলে সাময়িক সমাধান চান না—চান স্থায়ী নদী শাসন।
স্থানীয়দের দাবি, রামনা শুধু একটি বাজার নয়, এটি হাজারো মানুষের জীবন-জীবিকার কেন্দ্র। এর ধ্বংস মানে ওই জনপদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোর ধস। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি তাদের আহ্বান—দ্রুত, টেকসই ও কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে এই জনপদকে রক্ষা করুন।
বিআরইউ