নীলফামারী সদর উপজেলার ইটাখোলা মাস্টার পাড়ায় আদালতের রায় উপেক্ষা করে একটি জনচলাচলের রাস্তা টিনের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রাখায় বিপাকে পড়েছেন দশটি পরিবার।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মহুবার রহমান নামের এক ব্যক্তি গত ২৫ মার্চ ২০২১ তারিখে হঠাৎ করে টিনের বেড়া দিয়ে এলাকার প্রধান চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেন। এরপর থেকেই এলাকাবাসী অসহনীয় ভোগান্তির মধ্যে পড়ে। এলাকাবাসীর দাবি, দীর্ঘদিন ধরে চলা এই অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে প্রশাসন যেন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
জানা যায়, রাস্তা বন্ধের ঘটনায় এলাকাবাসীর পক্ষ হয়ে স্থানীয় বাসিন্দা বুলবুল হোসেন ৩১ মার্চ ২০২১ তারিখে নীলফামারী এডিএম কোর্টে মামলা (মামলা নং ২১০/২১) দায়ের করেন। আদালতে জমা দেওয়া রাস্তাটির সরকারি নকশা ও নীলফামারী সদর এসিল্যান্ডের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী এডিএম কোর্ট জনস্বার্থে রায় প্রদান করে রাস্তা খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু অভিযুক্ত মহুবার রহমান উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল জেলা জজ আদালতে রিভিশন মামলা (মামলা নং ৭৮/২২) দায়ের করেন। জেলা জজ আদালতও এডিএম কোর্টের রায় বহাল রাখে।
এরপর বিবাদী পক্ষ উচ্চতর আদালত হাইকোর্টে টেন্ডার নম্বর ৭৫৩১৭ এর মাধ্যমে আবেদন করলে হাইকোর্টে কৌশলী আইনজীবীর দীর্ঘ যুক্তিতর্কের পর মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। হাইকোর্টে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির বিষয়টি জুলফিকার অ্যাসোসিয়েটস নামক একটি আইনজীবী প্রতিষ্ঠান চিঠির মাধ্যমে এডিএম কোর্টকে অবহিত করলে, ২০২৫ সালের ১০ এপ্রিল স্মারক নং ৬৯০-এর মাধ্যমে নীলফামারী সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে রাস্তা খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, এতসব রায় ও আদেশ সত্ত্বেও রাস্তা এখনও সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি।
এলাকাবাসীরা বলছেন, এটি তাঁদের একমাত্র চলাচলের রাস্তা। স্কুল, বাজার, হাসপাতালসহ সকল দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের জন্য এই রাস্তাটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অথচ একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির একতরফা অবস্থানের কারণে পিছনে থাকা দশটি পরিবার বছরের পর বছর ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় জীবনযাপন করছে।
এ বিষয়ে নীলফামারী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এম. আর. সাইদ জানান, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর আমরা তদন্ত করছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরএস