ফেনী পৌরসভার ‘ভিআইপি ওয়ার্ড’ হিসেবে পরিচিত ১০নং ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ পাঠান বাড়ি রোড ও মনির উদ্দিন সড়কের ওয়াজেদ মজুমদার বাড়ি সংলগ্ন অংশটি সামান্য বৃষ্টিতেই পানিতে তলিয়ে যায়। অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বছরের বেশিরভাগ সময়ই এ এলাকায় জলাবদ্ধতা লেগেই থাকে।
দীর্ঘদিন ধরে সড়কের বেহাল দশা ও পানি নিষ্কাশনের সমস্যার কারণে এলাকাবাসী ও পথচারীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ওয়াজেদ মজুমদার বাড়ি সংলগ্ন সড়কটি নিচু এবং ড্রেন থাকলেও তা সরু ও ময়লা-আবর্জনায় ভরা, যার ফলে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বৃষ্টির সময় এই ড্রেনের পানি উপচে বাসাবাড়িতে ঢুকে পড়ে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পাঠান বাড়ি রোডের করুণ অবস্থা। ওই সময় সড়কটি সাময়িকভাবে সুরকি ও বালি দিয়ে মেরামত করা হলেও কয়েক দফা বৃষ্টিতে তা আবারও ভেঙে পড়েছে।
সড়কটির করুণ দশায় সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এই ওয়ার্ডেই রয়েছে দেশের স্বনামধন্য আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসা, হোপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, এবং আরও প্রায় ১৪-১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নিয়মিত যাতায়াত করতে গিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তির সীমা থাকে না।
স্থানীয় এক গৃহবধূ বলেন, পাঠান বাড়ি এলাকায় রিকশা বা সিএনজি অটোরিকশা আসতে চায় না। যদি আসেও, অতিরিক্ত ভাড়া নেয়। রাস্তাঘাটের এই অবস্থায় এখানে বাস করা খুবই কষ্টকর।
এক রিকশাচালক বলেন, খানাখন্দে ভরা রাস্তায় চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। বৃষ্টি হলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
পানিনিষ্কাশনের প্রধান ভরসা পাঠান বাড়ি সংলগ্ন একটি পুরাতন সরু কালভার্ট, যেটি দিয়ে শহরের ট্রাংক রোড, কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ড, শান্তি কোম্পানী রোড, ফালাহিয়া মাদ্রাসা, পোড়া মসজিদ ও হোপ স্কুলের বিস্তীর্ণ এলাকার পানি নিষ্কাশন হয়। ফলে অতিরিক্ত চাপ সামলাতে না পেরে প্রায়ই রাস্তায় পানি জমে যায়।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (উপসচিব) গোলাম মোহাম্মদ বাতেন বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ১০নং ওয়ার্ড পরিদর্শন করেছি। অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণ জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত ড্রেন সংস্কার, সড়ক উন্নয়ন ও পুরাতন কালভার্টটি সম্প্রসারণ করা না হলে আসন্ন বর্ষায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
বিআরইউ