পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে মঙ্গলবার থেকে লঞ্চের বিশেষ সার্ভিস চালু হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে রোটেশন পদ্ধতিতে সীমিতসংখ্যক লঞ্চ চলাচল করলেও, ঈদে যাত্রী চাহিদা বাড়ায় এবার রুটে ১০ থেকে ১২টি লঞ্চ যাত্রী পরিবহনে নিয়োজিত থাকবে।
লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীসংখ্যা অনুযায়ী লঞ্চের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। যদিও বর্ষাকালীন ঝড়-ঝঞ্ঝার শঙ্কা রয়েছে, তবুও ঈদকে কেন্দ্র করে যাত্রীদের আগ্রহ বাড়ায় লঞ্চ মালিকরা আশাবাদী।
পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চের যাত্রী সংখ্যা অনেকটা কমে গিয়েছিল। সে কারণে রোটেশন ভিত্তিতে মাত্র দুটি বা তিনটি লঞ্চ চলাচল করছিল। তবে ঈদের সময় যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় ফিরে আসে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
বরিশাল নগরীর বিভিন্ন লঞ্চ বুকিং কাউন্টার ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা থেকে বরিশালে আগত টিকিটের চাহিদা বেড়েছে। যদিও এখনো ভয়াবহ সংকটের পর্যায়ে পৌঁছায়নি, তবুও আগেভাগেই টিকিট নিশ্চিত করছেন অনেকে।
সুন্দরবন লঞ্চের কাউন্টার ম্যানেজার জাকির হোসেন জানান, টিকিটের চাপ আছে।
যাত্রী মিলন তালুকদার বলেন, “আমার ভাইয়ের পরিবার ঈদে ঢাকা থেকে আসবে, তাই আগেই টিকিট বুক করতে এসেছি।”
সুন্দরবন লঞ্চের মাস্টার মো. আলম এবং কুয়াকাটা লঞ্চের মাস্টার মো. মানিক বলেন, “সারা বছর যাত্রী সংকট থাকলেও ঈদ এলেই কিছুটা স্বস্তি মেলে। রোটেশন পদ্ধতি তুলে দেওয়ায় এবার যাত্রী বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।”
লঞ্চ মালিকদের প্রস্তুতি ও ভাড়া নির্ধারণ
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল (লঞ্চ) মালিক সমিতির মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জানান, ঈদ উপলক্ষে রোটেশন তুলে দিয়ে অতিরিক্ত লঞ্চ চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। “ঈদের আগ পর্যন্ত প্রতিদিনই কয়েকটি লঞ্চ চলবে। তবে যাত্রীদের সুবিধার্থে ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে না। সরকার নির্ধারিত ভাড়াই কার্যকর থাকবে—সিঙ্গেল কেবিন এক হাজার, ডাবল দুই হাজার ও ডেকে জনপ্রতি ৪০০ টাকা।”
নৌ নিরাপত্তা ও সরকারি প্রস্তুতি
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ঈদের তিন দিন আগে এবং তিন দিন পরে মালবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে, যাতে যাত্রীবাহী লঞ্চ নির্বিঘ্নে চলতে পারে।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, “ঈদে যাত্রীসেবা নিশ্চিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে সমন্বয় সভায় নিরাপত্তা ও সেবার বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “যাত্রী নিরাপত্তায় আনসার সদস্যদের পাশাপাশি ক্যাডেট সদস্যরাও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবেন। এ ছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে লঞ্চ চালকদের সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
ইএইচ