কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আব্দালপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আব্দালপুর থেকে থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী মো. জাহান বক্সকে বাড়ির সামনে ফেলে গেছেন অপহরণকারীরা। সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মোটরসাইকেলে দুই ব্যক্তি চোখ ও মুখ বেঁধে তাকে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় বলে পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
পরিবারের ভাষ্য, জাহানবক্স জীবিত ফিরে এসেছেন, এতেই তারা সন্তুষ্ট। তাদের কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। এ ব্যাপারে জাহাবক্স এখন কারও সঙ্গে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই বলে জানায় তার পরিবার।
জাহাবক্স উপজেলার আব্দালপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামের মৃত কুদ্দুস আলীর ছেলে। তিনি বাড়ির পাশেই প্রান্ত স্টোর নামের একটি দোকান চালাতেন। গত রবিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ টাকাসহ জাহানবক্স অপহৃত হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। অপহরণকারীরা চিঠিতে লিখে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পাঁচ দিনের মধ্যে নির্দিষ্ট ঠিকানায় টাকা না পৌঁছালে জাহাবক্সকে গুম করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। আলী হায়দার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জাসদ গণবাহিনীর আঞ্চলিক নেতা দাবি করা আলী রেজা সিদ্দিক কালুর ভাই।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টায় জাহাবক্সের ছেলে প্রান্ত বলেন, ‘বাবা ফিরে এসেছেন। রাত ১২টার দিকে আমাদের বাড়ির বারান্দায় কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পাই। বাইরে বেরিয়ে দেখি অচেতন অবস্থায় বাবা পড়ে আছেন। তাঁর মুখ ও চোখ বাঁধা ছিল। পরে জানতে পারি, দুই ব্যক্তি মোটরসাইকেলে করে বাড়ির সামনে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে গেছে। বাবাকে মারধর করা হয়েছে। মাথায় একটু দাগ আছে। তিনি কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।’ প্রান্ত আরও বলেন, ‘অপহরণের রাতে যে ব্যক্তি স্যালাইন নেওয়ার জন্য বাবাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল, তাকে বাবা পরিচিত কেউ মনে করেছিল। পরে বাইরে বেরিয়ে দেখেন অপরিচিত। প্রথমে একজন থাকলেও পরে আরও একজনকে দেখতে পেয়েছিলেন। দোকান খোলার সাথে সাথে পেছন থেকে বাবাকে মুখ, চোখ ও হাত বেঁধে তারা মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে বাবা আর কিছু বলতে পারেননি। দোকানে ক্যাশবাক্সের নিচে যে টাকা ছিল, তাও নিয়ে গেছে। রাতেই বাড়িতে থানার পুলিশ এসে কথা বলে গেছে। আমাদের কিছু দরকার নেই। কারোর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও নেই।’ বাবা জীবিত ফিরে এসেছে এটাই তাঁদের পরিবারের জন্য যথেষ্ট বলে জানান প্রান্ত।
এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, জাহাবক্সকে উদ্ধার করতে পুলিশ, ডিবিসহ অন্যান্য বাহিনী ব্যাপক তৎপর ছিল। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। পুলিশের তত্ত্বাবধানে আছেন। সুস্থ হলে তাঁকে সার্বিক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আটক হওয়া ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যাপারে ওসি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
আরএস