বরগুনার পাথরঘাটায় সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরার পথে দুটি ট্রলার জব্দ করে দক্ষিণ স্টেশনের কোস্টগার্ড। এ ঘটনায় চাঁদা দাবি, গুলি বর্ষণ ও জেলেদের নিখোঁজ হওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর সংযোগস্থল বাড়ানী খালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর আগে সকাল ৯টার দিকে আলম কোম্পানি ও মাসুম কোম্পানির দুটি মডিফাইড ট্রলার জব্দ করে কোস্টগার্ড সদস্যরা।
স্থানীয় মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, জব্দ করা ট্রলার থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে কোস্টগার্ড। চাঁদা না দেওয়ায় ট্রলারের মাছ ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি গুলিবর্ষণও করে তারা। এতে দুই জেলে আহত হন এবং আতঙ্কে খালে লাফিয়ে পড়া চার জেলে নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
পাথরঘাটা ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুম আকন বলেন, “বৈধ কাগজপত্র দেখালেও কোস্টগার্ড ট্রলার ছাড়েনি। ঈদের আগে এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ঈদের পর আরও মোটা অঙ্কের টাকা চাওয়া হয়।” তিনি আরও দাবি করেন, কোস্টগার্ড ট্রলার ধ্বংসের চেষ্টা চালায়।
ঘটনার সময় উত্তেজনা চরমে পৌঁছালে কোস্টগার্ড সদস্যরা প্রায় ২৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। জেলেরা পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে কোস্টগার্ডের একটি পিকআপ ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন উত্তেজিত জেলেরা।
খবর পেয়ে পাথরঘাটা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মেহেদী হাসান বলেন, “উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
এদিকে, পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, “ঘটনাটি মূলত ভুল বোঝাবুঝি থেকে সৃষ্টি হয়েছে। সমঝোতার লক্ষ্যে আগামীকাল একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে।”
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোস্টগার্ড কিংবা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইএইচ