লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া ছাত্রদল নেত্রীর মরদেহ ৪ দিন পর উদ্ধার

ভোলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২৫, ০৮:২০ পিএম
লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া ছাত্রদল নেত্রীর মরদেহ ৪ দিন পর উদ্ধার

ভোলা থেকে ঢাকাগামী কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হওয়া ভোলা সরকারি কলেজ ছাত্রদল নেত্রী সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতার মরদেহ চার দিন পর লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। 

পরিবার দাবি করছে—এটি আত্মহত্যা না কি হত্যাকাণ্ড, তা নিরপেক্ষ তদন্তেই প্রমাণিত হোক।

ইপ্সিতার বাবা মো. মাসুদ রানা জানিয়েছেন, ২২ জুন বিকেলে লক্ষ্মীপুরের নদীতে একটি নারী মরদেহ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা নৌপুলিশকে খবর দেয়। পরে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহটি দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। পরদিন ছবি দেখে ইপ্সিতার পরিবার নিশ্চিত হয়—এটি তাদের মেয়ের মরদেহ। ১৭ জুন সকালে “প্রাইভেট পড়াতে যাচ্ছেন” বলে বাসা থেকে বের হন ইপ্সিতা।

কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ ভোলার ইলিশা ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে। কিছুক্ষণ পর লঞ্চের তৃতীয় তলা থেকে এক নারী নদীতে ঝাঁপ দেন বলে জানান সুপারভাইজার নান্টু বাবু। তখন লঞ্চ থামিয়ে লাইফবয়া ফেলে উদ্ধার চেষ্টা চালানো হলেও ইপ্সিতাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এক নারী যাত্রী ৯৯৯-এ কল দিয়ে অভিযোগ করেন, এক তরুণী লঞ্চে ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ অভিযোগে মুন্সিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ লঞ্চ থেকে দুইজন স্টাফ ও অভিযোগকারীকে হেফাজতে নেয়।

ওসি এম সাইফুল আলম জানান, প্রাথমিক তদন্তে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

পরিবার বলছে আমরা কাউকে দায়ী করছি না। তবে আমাদের মেয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে কি না, আত্মহত্যা করেছে কি না—তা তদন্ত করে বের করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। প্রমাণ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ হোক।” 

ইপ্সিতার সহপাঠীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনাটিকে ঘিরে নানান প্রশ্ন তুলছেন। কেউ বলছেন, এটি পরিকল্পিত হত্যা, কেউ বা বলছেন, ধর্ষণের পর আত্মহত্যা। অনেকে লঞ্চে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশের দাবিও জানাচ্ছেন। 

ইপ্সিতার এই রহস্যজনক মৃত্যু শুধু এক পরিবারের শোক নয়—এটি একটি সামাজিক বার্তা। নারীর নিরাপত্তা, গণপরিবহনে ধর্ষণ প্রতিরোধ, এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে রাষ্ট্র ও সমাজের আরও দায়িত্বশীল হওয়া জরুরি।

আরএস