ফেনীতে মুহুরী-কহুয়া-সিলোনিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে ৩০ গ্রাম প্লাবিত

ফেনী প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০২:৩৪ পিএম
ফেনীতে মুহুরী-কহুয়া-সিলোনিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে ৩০ গ্রাম প্লাবিত

ফেনীতে গত দু’দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির চাপে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর ফলে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার সীমান্তবর্তী প্রায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

বুধবার সকাল পর্যন্ত দুই উপজেলা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙেছে পরশুরামের জঙ্গলঘোনায় দুটি, অলকায় তিনটি ও শালধরে একটি স্থানে এবং ফুলগাজীর উত্তর শ্রীপুর এলাকায় একটি স্থানে। সিলোনিয়া নদীর বাঁধ ভেঙেছে পরশুরামের গদানগর এবং ফুলগাজীর দেড়পড়া এলাকার দুটি স্থানে।

এছাড়া কহুয়া নদীর বাঁধ ভেঙেছে পরশুরামের সাতকুচিয়ায় দুটি, বেড়াবাড়িয়ায় একটি এবং ফুলগাজীর দৌলতপুর এলাকায় একটি স্থানে। এসব ভাঙনের ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

ফুলগাজীর বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন মিন্টু জানান, “বৃষ্টিপাত কিছুটা কমলেও যেসব স্থানে বাঁধ ভেঙেছে, সেসব জায়গা দিয়ে এখনও পানি ঢুকছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। মোবাইল নেটওয়ার্কেও সমস্যা হচ্ছে, গেল বছরের অভিজ্ঞতা থেকে কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি।”

পরশুরামের তুলাতলী এলাকার বাসিন্দা আরিফ হোসেন বলেন, “মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে পানি বাড়ছে। চারদিক পানিতে থইথই করছে। অনেক সড়ক ডুবে যাওয়ায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষ পানিবন্দি হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এখনও কোনো শুকনো খাবার বা ত্রাণ সহায়তা আসেনি।”

পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, “গত রাত থেকে নতুন করে কোনো স্থানে বাঁধ ভাঙেনি। তবে লোকালয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছি।”

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, “এখন পর্যন্ত ১১টি ভাঙনের তথ্য পেয়েছি। নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রাত থেকে পানি কিছুটা কমেছে। উজানে বৃষ্টি বন্ধ থাকলে নতুন করে ভাঙন নাও হতে পারে।”

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান জানান, “জেলায় টানা তিন দিন ধরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে গতকালের তুলনায় বৃষ্টিপাত কিছুটা কমেছে। আগামীকালও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।”

ইএইচ