জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক দলিল লেখকের বিরুদ্ধে নামজারি, খারিজ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জালিয়াতি করে দলিল সম্পাদনের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভুয়া নামজারি (ডিসিআর), খাজনা রসিদ ও খতিয়ান তৈরি করে দলিল সম্পাদন করেছেন।
জালিয়াতির বিষয়টি জানার পর আক্কেলপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)–এর দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুরুল আলম গত ২২ জুলাই সংশ্লিষ্ট দলিলের তথ্য চেয়ে সাব-রেজিস্ট্রারকে চিঠি পাঠান। এরপর বিষয়টি জনসমক্ষে আসে এবং সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও ওঠে।
অভিযুক্ত দলিল লেখকের নাম হুমায়ুন কবির ওরফে রানা। তিনি গোপীনাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
জানা গেছে, গত ৭ জুলাই আক্কেলপুর সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে ২১৬৪/২৫ নম্বর দলিলটি সম্পাদিত হয়। এতে দাতা ছিলেন তাহমিনা বিবি এবং গ্রহিতা তাঁর দুই ছেলে আব্দুল মুমিন মন্ডল ও আব্দুল আলিম মন্ডল। এই দলিল সম্পাদনে ভুয়া খাজনা রসিদ, নামজারি ও খতিয়ান ব্যবহার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দাতার মেয়ে মোছা. নাছিমা বেগম ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
ইউএনও মনজুরুল আলম সংশ্লিষ্ট দলিল নম্বর উল্লেখ করে সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে বিস্তারিত তথ্য চান এবং তিনি সে অনুযায়ী তথ্য সরবরাহ করেন।
অভিযোগকারী নাছিমা বেগম বলেন, “আমাকে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতেই ভুয়া ডিসিআর ও বণ্টননামা তৈরি করে জমির দলিল সম্পাদন করা হয়েছে। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।”
দলিল গ্রহিতা আব্দুল মুমিন মন্ডল বলেন, “আমি দলিল লেখক হুমায়ুন কবির রানার কাছে গিয়েছিলাম। তিনি আমার কাছ থেকে দলিল সম্পাদনের জন্য ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তিনিই সংগ্রহ করে দিয়েছেন।”
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য হুমায়ুন কবির রানার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে। তিনি ঘটনার পর থেকে সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়েও আর আসেননি।
সাব-রেজিস্ট্রার এস.এম. কামরুল ইসলাম বলেন, “হেবা দলিলে সাধারণত নামজারির প্রয়োজন হয় না। তবে প্রকৃত মালিক যাচাইয়ের জন্য অনেক সময় এসব কাগজ দেখা হয়।”
ইউএনও মনজুরুল আলম বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট দলিলের তথ্য চেয়ে সাব-রেজিস্ট্রারকে পত্র দেওয়া হয়। তিনি যে তথ্য দিয়েছেন, তাতে দেখা গেছে, নামজারি, খাজনা রসিদ ও খতিয়ান—সবই জাল। বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ইএইচ