ফরিদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শ্রমিক লীগের সভাপতি নাছির গ্রেফতার

ফরিদপুর প্রতিনিধি: প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ০৩:৫১ পিএম
ফরিদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী  শ্রমিক লীগের সভাপতি নাছির গ্রেফতার

ফরিদপুরের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি গোলাম নাছিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

শনিবার বেলা ১১ টার দিকে তাকে ফরিদপুরের আদালতে নেয়া হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এর আগে গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পল্লবীতে স্থানীয় জনতা তাকে আটকের পর গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। 

পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, চব্বিশের জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরাসরি তাঁর বাহিনী নিয়ে হামলায় অংশ নেন নাছির। গত বছরের ৩ ও ৪ আগস্ট ফরিদপুরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে নাছিরের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীদের নিয়ে সশস্ত্র হামলা চালানো হয়। ঐআন্দোলন চলাকালে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতেও দলবল নিয়ে অংশ নিতেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা ও ফরিদপুর জেলায় ছাত্র হত্যা ও হামলার ৫টি মামলা হয়েছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরে আত্মগোপনে চলে যায় এই ক্যাডার।

ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলায় আহতদের পক্ষ থেকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের অধিগ্রহণকৃত জমির অবকাঠামোর ক্ষতিপূরণের ৮৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইউনিয়নের তৎকালীন সভাপতি জুবায়ের জাকির ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম নাছিরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত ১ নভেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় মামলাটি করেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক। 
এদিকে, আওয়ামী লীগের পতনের পর ভোল পাল্টানোর চেষ্টা চালায় গোলাম নাছির। গত ১৬ জানুয়ারী বেলা ১১টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত কেন্দ্রীয় কমিটির যোগ দিতে দেখা যায় গোলাম নাছিরকে। ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুর রহিম বক্স দুদুর সভাপতিত্বে ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। এই অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় উঠে।

এদিকে, দুর্ধর্ষ এই সন্ত্রাসীর গ্রেফতারে ফরিদপুরের জনমনে স্বস্তি নেমে এসেছে। ফরিদপুর জেলা পুলিশের এক সময়ের তালিকাভুক্ত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর অন্যতম গোলাম নাছির জাতীয় পার্টির ক্যাডার হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করে। এরপর কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে বাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা বনে যায়। বিশাল ক্যাডার বাহিনী ও অস্ত্র ভান্ডার গড়ে তুলে গোলাম নাছির এরপর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি পদ বাগিয়ে নেয়। তার বিশাল অস্ত্র ভান্ডারে সন্ধানের পাশাপাশি অধস্তন ক্যাডারদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানানো হয়েছে।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, পল্লবী থানা পুলিশেরৃ সহযোগিতায় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ শনিবার ভোরে গোলাম নাছিরকে ফরিদপুরে নিয়ে আসে। ফরিদপুরের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

জেএইচআর