‘সাধারণের মধ্যে অসাধারণ ছিলেন বঙ্গবন্ধু‍‍`

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৩, ০৫:১২ পিএম
‘সাধারণের মধ্যে অসাধারণ ছিলেন বঙ্গবন্ধু‍‍`

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেছেন, ইতিহাসে কোনো কোনো শাসক, যারা ছিলেন নিজের জনগণের জন্য কাতর-উদ্বিগ্ন এবং তাদের দুর্দশা লাঘবের জন্য সব ছেড়ে-ছুঁড়ে সংগ্রাম করেছেন, তেমন রাজার আগমন, বাঙালির জীবনেও ঘটেছে একবার। তবে সেদিনের রাজা কোনো প্রাসাদের অধিকারী ছিলেন না। তিনি ছিলেন সাধারণ। তবে নেতৃত্ব, মানবিক গুনাবলী, দেশপ্রেম, একনিষ্ঠতা ও সততা তাঁকে করে তুলেছিল অসাধারণ। তিনি বাঙালির জীবনে মুক্তিদাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

শুক্রবার (১৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর সুবজবাগ ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের অনাথলয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সুষম খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

উপকমিটির সদস্য আখলাকুর রহমান মাইনুর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি প্রকৌশলী দিব্যেন্দু বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সাধারণ সম্পাদক ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের পানি সম্পদ সম্পাদক রাহুলা বড়ুয়া প্রমুখ। পরে আজিমপুর এতিম খানাসহ আরো একটি স্থানে খাদ্য বিতরণ করা হয়।

আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, পরাধীনতার নিকষ অন্ধকারে নিমজ্জিত বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে মুক্তির প্রভাকর রূপে জন্ম নেওয়া ‘খোকা’ নামের সেই শিশুটি শিক্ষা-দীক্ষা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী, মহত্তম জীবনবোধ সততা, সাহস, দক্ষতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে হয়ে ওঠেন বাংলাদেশ নামক স্বাধীন-সার্বভৌম জাতি-রাষ্ট্রের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান টুঙ্গিপাড়ার চিরায়ত গ্রামীণ সমাজের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আবেগ-অনুভূতি শিশুকাল থেকে গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন। গ্রামের মাটি আর মানুষ তাঁকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করতো। শৈশব থেকে তৎকালীন সমাজ জীবনে তিনি জমিদার, তালুকদার ও মহাজনদের অত্যাচার, শোষণ ও প্রজা পীড়ন দেখে চরমভাবে ব্যথিত হতেন। গ্রামের হিন্দু, মুসলমানদের সম্মিলিত সম্প্রীতির সামাজিক আবহে তিনি দীক্ষা পান অসাম্প্রদায়িক চেতনার।

নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে আমি বলেন, নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর সত্তা ও আদর্শের শিক্ষা দিতে হবে। তাদের জানাতে হবে বঙ্গবন্ধুর মানসিকতা কী ছিল, তাঁর দেশপ্রেম কেমন ছিল, তার অসাম্প্রদায়িকতা কেমন ছিল। বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করে আমাদের অস্তিত্বের শেকড়ে ফিরে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মতিথিতে তাই মানুষের কল্যাণে আত্মোৎসর্গের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। এ প্রতিজ্ঞায় সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে, স্বাধীনতাবিরোধীদের রুখে দিতে হবে, বহির্বিশ্বে বাঙালির স্বতন্ত্র সত্তার পরিচয় তুলে ধরতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের মধ্যে নেই। তবে তার আদর্শ আমাদের চিরন্তন প্রেরণার উৎস। তার নীতি ও আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে পড়ুক, গড়ে উঠুক সাহসী, ত্যাগী ও আদর্শবাদী নেতৃত্ব— এ প্রত্যাশা করি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করাই হোক বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে সবার অঙ্গীকার।

এআরএস