সাম্য হত্যার বিচার দাবি

শাহবাগ অবরোধ করলো ছাত্রদল

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ১৮, ২০২৫, ০৬:৪৩ পিএম
শাহবাগ অবরোধ করলো ছাত্রদল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলার তদন্তে গাফিলতি ও ‘মূল হত্যাকারী’ গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকার শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা৷

রোববার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন তারা। এতে শাহবাগসহ আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

শাহবাগ থেকে কাটাবন মোড় পর্যন্ত যান চলাচল পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়ার তথ্য দেন চালকরা।

শাহবাগ মোড়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, প্রাইমএশিয়ার শিক্ষার্থী পারভেজের মতো একই কায়দায় চুরিকাঘাতে সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে। এখনো পারভেজ হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি।

“আমরা আজকের এ অবস্থান কর্মসূচি থেকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, আমাদের আর কোনো কর্মীর ওপর এরকম হামলা হলে আমরা আর বসে থাকব না।”

তিনি বলেন, আমরা এ অথর্ব প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করছি। আপনারা দেখেছেন, মাননীয় উপাচার্য কী রকম হৃদয় বিদারক আচরণ করেছেন। তিনি সাম্যকে এখনও হৃদয়ে ধারণ করতে পারেননি।

“আমরা প্রক্টরকে একইভাবে দেখেছি। তোফাজ্জলকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তার যদি আজ বিচার হত, তাহলে এমন হত্যাকাণ্ড আর দেখতে হত না।”

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় প্রশাসন এখনও তাদের দায় স্বীকার আর নিরাপত্তার গাফিলতির কথা স্বীকার করছে না। তারা আজকের দিন পর্যন্ত আমাদের আশ্বস্ত করতে পারেনি, তারা সাম্য হত্যার বিচার করবে কি না।

“তাই আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কর্মসূচির সঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।”

অন্তর্বর্তী সরকার ও জুলাই অভ্যু্ত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের সমালোচনাও করেন ছাত্রদল সভাপতি।

তিনি বলেন, “আমরা সাম্য হত্যার পর থেকে সামান্য সহানূভূতিমূলক বক্তব্য এ সরকারের কাছ থেকে শুনিনি।

“এমনকি সাম্যের জানাযায় আমরা জুলাই-অগাস্টের যারা কৃতিত্ব দাবি করেন, তাদেরকেও দেখি নাই। তারা বিভিন্ন সময় বলে, তারা সবসময় ঐক্য চায়। তারা কীসের ঐক্য চায়?”

সরকারকে উদ্দেশ করে রাকিব বলেন,“বিগত ১৬ বছর যারা আওয়ামী লীগ সরকারের গুমের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য ইউনূস সরকার কোনো সহানূভুতি জানায়নি। এমনকি জুলাইয়ের পর থেকে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের জন্যও কোনো সহানূভুতি আমরা দেখি নাই।

‘আপনাকে আজ আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, আমরা যদি শাহবাগ থেকে যমুনায় পদযাত্রা করি, তাহলে আমাদের রুখে দেওয়ার কেউ নাই। আমরা এমন অবহেলা যদি আর দেখি, তাহলে যমুনায় কর্মসূচি দেব।”

এর আগে দুপুর বেলা ১টার দিকে সাম্য হত্যার বিচার, উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যাগ ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘ছুরিকাঘাতে’ আহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় বুধবার সকালে নিহতের বড় ভাই শরীফুল আলম শাহবাগ থানায় ‘১০ থেকে ১২ জনকে’ আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করার তথ্য দিয়েছে পুলিশ।

সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন তিনি। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে।

আরএস