আমীর খসরু

ফ্যাসিস্ট সরকারের পুরোনো মডেলেই বাজেট দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম
ফ্যাসিস্ট সরকারের পুরোনো মডেলেই বাজেট দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অতীতের ফ্যাসিস্ট সরকারের পুরোনো মডেলেই নতুন অর্থবছরের বাজেট দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বাজেটে দেশের অর্থনীতি ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট কতটুকু মাথায় রাখা হয়েছে? আমরা কি পুরোনো ইকোনমিক মডেল ফলো করবো এখন? যদি পুরোনো মডেলের ওপর বাজেট করা হয় তবে আমাদের পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা তা বাস্তবায়ন হবে না। ভুল তথ্যের ওপর বাজেট ও পলিসি প্রণীত হলে জনআকাঙ্ক্ষারও কোনো প্রতিফলন হবে না।

সোমবার (১৯ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৫-২৬: নীতি সংস্কার ও জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক বহুপাক্ষিক অংশীজনের বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। সিপিডি ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম এ বৈঠক আয়োজন করে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ইন্টেরিম সরকারের ওপর খুব বেশি প্রত্যাশাও নেই। কারণ, এ ধরনের সরকারের কিছু লিমিটেশন আছে। তারা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে দেশ পরিচালনা করছে না। তারা পাবলিক ফিডব্যাক, জনগণ ও বিজনেস কমিউনিটির নার্ভ ফিল করতে পারে না।

তিনি বলেন, এই সরকারের ওপর মানুষের যেটুকু এক্সপেকটেশন সেটা একটু ভিন্ন। ডেমোক্রেটিভ অর্ডারে ফিরে যাওয়ার জন্য যে কাজগুলো করা দরকার সেটাই হচ্ছে এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু আমরা সেখানে কতটুকু এগোচ্ছি? আনসারটেনিটির মাধ্যমে যেখানে স্থিতিশীলতা থাকবে না, সেখানে মানুষ ইনভেস্টমেন্টেও ভরসা পাবে না। আগামী দিনের বাংলাদেশ কেমন হবে, এ সরকার কতদিন থাকবে, নির্বাচন কবে হবে, আগামী নির্বাচনের পর বাংলাদেশ কোথায় যাবে, এ বিষয়গুলো সবার মনে কাজ করছে। কিন্তু আমরা কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।

তিনি আরও বলেন, এই যে একটা ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম হলো, আমরা স্বাগত জানাই। তবে আমরা মনে করি ইনভেসমেন্ট ফোরাম কোনো সরকারের দায়িত্ব না, বরং আমাদের সবার দায়িত্ব। এখানে ইনভেসমেন্টের অবশ্যই দরকার আছে। নির্বাচিত সরকার ছাড়া তো সেভাবে ইনভেস্টমেন্ট আসবে না। ইনভেস্টমেন্ট ছাড়া কোনো দেশই চলতে পারবে না। কারণ, ইনভেস্টমেন্ট ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো দেশই উন্নতি করতে পারে না।

‘এমপ্লয়মেন্ট ক্রিয়েট করতে হলে আপনাকে প্রথমেই আমাদের প্রাইভেট সেক্টরে ইনভেস্ট করতে হবে। সেটা দেশে হোক বা বিদেশে। সেই জায়গাটিতে যে কনফিডেন্স দরকার, যে রোডম্যাপ দরকার, যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা দরকার, শর্টটার্ম, মিডটার্ম বা লংটার্ম সেটা তো কেউ করতে পারছে না। সবাই অপেক্ষা করছে, পরবর্তী পদক্ষেপ কী কেউ বুঝতে পারছে না। কারণ, দেশে এখন না কোনো ইলেকটেড সরকার আছে, না কোনো রোডম্যাপ আছে, যার ওপর ভরসা করে মানুষ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মপরিধি উল্লেখ করে আমীর খসরু আরও বলেন, এখন মানবিক করিডোরের কথা বলছেন। এটি সেনসেটিভ ইস্যু, বাংলাদেশের সিকিউরিটির প্রশ্ন। জিও স্ট্যাটিজিক ডিসিশন। আপনারা তো এই ডিসিশনের দিকে যেতে পারেন না। চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে ডিসিশনে যাচ্ছেন। একটা নন-পলিটিক্যাল গভর্নমেন্ট, একটা ইন্টেরিম গভর্নমেন্টের কি এসব সিদ্ধান্তে যাওয়ার দরকার আছে?

তিনি বলেন, একটা ডেমোক্রেটিভ সিদ্ধান্তের জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে। দেশের মালিকানা ফেরানোর জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, সেই আলোচনা বাদ দিয়ে বাকি সবকিছু আমরা করছি। এসবের মাধ্যমে আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) কী প্রমাণ করতে চাচ্ছেন?

আরএস