‘বিএনপি তার প্রতিশ্রুতির বিরোধিতা করছে’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিএনপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আজকের বিএনপি সেই প্রতিশ্রুতিরই বিরোধিতা করছে। 

শুক্রবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ডা. তাসনিম জারা বলেন, ঈদের আগে ঐকমত্য কমিশনে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন সংক্রান্ত প্রস্তাব উত্থাপন করলে বিএনপির প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রস্তাবটি তারা সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং নারীদের অগ্রগতি বিবেচনায় সমর্থন করছেন না।

তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করা হোক এবং আগের মতোই পার্টির প্রধানরা নির্ধারণ করবেন কে হবেন সংরক্ষিত নারী এমপি। ভবিষ্যতে নারীদের অগ্রগতি পর্যাপ্ত হলে তখন সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা বিবেচনা করা যেতে পারে।

তাসনিম জারা আরও বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি তাদের ইশতেহারকে ‘নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি’ নামে অভিহিত করেছিল, যা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। সে সময় বেগম খালেদা জিয়া ইশতেহারে উল্লেখ করেছিলেন— “সংসদে নারীদের আরও কার্যকরী ভূমিকা ও ক্ষমতায়নের জন্য তাদের আসনসংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে এবং মহিলা আসনে সরাসরি নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া এটিও ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, দেশের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা নারী হওয়া সত্ত্বেও তারা যুগ যুগ ধরে পশ্চাদপদ রয়ে গেছেন। তাদের যথার্থ সামাজিক অবস্থান ও মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত না করলে কোনো জাতি সার্বিক উন্নয়ন অর্জন করতে পারে না।”

তাসনিম জারা বলেন, “এই প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতেই মানুষ বিএনপিকে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু তারা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। আজ ২০২৫ সালে ঐতিহাসিক সুযোগ সামনে থাকা সত্ত্বেও বিএনপি বলছে, সময় এখনো হয়নি। তারা বলছে, হয়তো আরও ১০ বছর পরে নারীদের নির্বাচন করার উপযোগী অবস্থা তৈরি হবে। কিন্তু তারা ব্যাখ্যা করছে না, সেই অবস্থা কীভাবে বা কী দেখে বোঝা যাবে, কিংবা নারীদের নির্বাচনের জন্য তারা কী প্রস্তুতি নেবে।”

তিনি অভিযোগ করেন, “বিএনপি চাচ্ছে এমন একটি কাঠামোই বহাল থাক, যেখানে দলের প্রধান নির্ধারণ করবেন কে হবেন নারী সাংসদ। এই সাংসদদের নিজস্ব কোনো এলাকা, ভোটার বা জনগণের প্রতি জবাবদিহিতা থাকবে না— কেবল দলের প্রতিই থাকবে জবাবদিহি।”

ফেসবুক পোস্টে ডা. তাসনিম জারা বলেন, “এখন প্রশ্ন হলো, আমরা কী করতে পারি? যদি এখনই নারীদের সরাসরি নির্বাচনের সুযোগ সৃষ্টি না করি, তবে আমরা আরও কয়েক দশক পিছিয়ে পড়ব। তাই এখনই আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে। সফল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের থামা চলবে না।”

তিনি জানান, এ বিষয়ে একটি ইভেন্ট চালু করা হয়েছে, যেখানে স্বাক্ষর সংগ্রহ, খোলা চিঠি প্রেরণসহ নানা কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে। ইভেন্ট লিংক: https://www.facebook.com/share/19ZDWP7JZb/। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও বিভিন্ন কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। যারা এই উদ্যোগে যুক্ত হতে চান, বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা, তাদেরকে মেসেজ পাঠানোর আহ্বান জানান তিনি।

ইএইচ