আমার সংবাদ ডেস্ক
মে ৯, ২০১৮, ০৬:২২ এএম
বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণীর আছে কিন্তু মানব পুরুষাঙ্গে হাড় নেই কেন! এমন প্রশ্ন মানুষের অনেক দিন ধরেই ছিল। সম্প্রতি এক সন্তোষজনক ব্যাখ্যা উঠে এসেছে একটি গবেষণা থেকে। ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ লন্ডন এর গবেষক মাটিল্ডা ব্রিন্ডল জানিয়েছেন, ১৪৫ থেকে ৯৫ মিলিয়ন বছর আগেকার স্তন্যপায়ীদের মধ্যে ‘লিঙ্গ-হাড়’ বা ‘ব্যাক্যুলাম’ ছিল এবং তা রীতিমতো কাজেও লাগতো। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা লুপ্ত হয়।
মাটিল্ডার মতে, পেনিস বোন-এর উপযোগ ছিল মানুষের পূর্বপুরুষদের আমলে। সেই প্রাণীদের যৌনসঙ্গমের সময় ছিল তিন মিনিট বা তার চাইতে সামান্য বেশি। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে তা দুই মিনিটে নেমে আসে। ফলে, ক্রমশ উপযোগ হারাতে থাকে এই হাড়। উদাহরণ হিসেবে তিনি আই-আই নামের এক নিশাচর লেমুরের কথা বলেছেন। তার সঙ্গম-সময় প্রায় ১ ঘণ্টা। এবং তার পেনিস বোন-এর দৈর্ঘ্যও খুব বেশি। মাটিল্ডা জানিয়েছেন, যেসব প্রাণীর সঙ্গম বিশেষ ঋতু-নির্ভর এবং যারা চরিত্রগতভাবে বহুগামী, তাদেরই এই হাড় থেকে গেছে।
প্রচলিত ধারনা মতে এটিকে মাংসপেশি মনে করা হলেও পুরুষাঙ্গ কোন পেশি নয়। একারণে উত্তেজিত অবস্থায় আপনি এটিকে বিশেষ নাড়াতে পারেন না। পুরুষাঙ্গে একধরনের স্পঞ্জের মত টিস্যু দিয়ে তৈরি যা পুরুষেরা যৌন উত্তেজনা অনুভব করলে রক্ত দিয়ে ভর্তি হয়ে যায়। দুইটি সিলিন্ডার আকৃতির প্রকোষ্ঠের ভেতর রক্ত এসে জমা হয় যাতে পুরুষাঙ্গটি ফুলে ওঠে ও শক্ত হয়ে যায়। ফুলে ওঠার কারণে সাধারণ অবস্থায় যে সব শিরার মাধ্যমে রক্ত পুরুষাঙ্গ থেকে বেরিয়ে যায় সেগুলো বন্ধ হয়ে যায়। উত্তেজনা চলে গেলে প্রকোষ্ঠ দুইটির ধমনিগুলো আবার সরু হয়ে যায় এবং পুরুষাঙ্গ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসতে পারে।
আপনার পুরুষাঙ্গ বিষয়ে কিছু তথ্য:
আপনার পুরুষাঙ্গটি ভেঙে যেতে পারে: শক্ত হয়ে থাকা অবস্থায় পুরুষাঙ্গে অত্যন্ত জোরে মোচড় দিলে তা ভেঙে যেতে পারে। ছেলেদের লিঙ্গে কোন হাড় থাকে না, তবে যেসব নলের মত জায়গায় রক্ত জমা হয়ে পুরুষাঙ্গটি শক্ত হয়ে ওঠে সেগুলো ফেটে যেতে পারে। তখন সেগুলো থেকে রক্ত বেরিয়ে পুরুষাঙ্গে চলে আসে এবং সেটি ফুলে যায় ও তীব্রভাবে ব্যাথা করে। এ ধরনের ঘটনার একতৃতীয়াংশ ঘটে পুরুষেরা যৌনক্রিয়ার সময় নিচে থাকলে। সাধারণত সঙ্গিনীর দেহ থেকে পুরুষাঙ্গটি পিছলে বেরিয়ে আসলে এবং তারপর জোরে চাপ খেলে সেটি ভেঙে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটে।
পুরুষদের রাতে কয়েকবার যৌন উত্তেজনা আসতে পারে: রাতে ঘুমানোর সময় একজন সাধারণ পুরুষ মানুষের পুরুষাঙ্গ গড়ে তিন থেকে পাঁচ বার সুদৃঢ় হয়ে উঠতে পারে, এবং প্রতিবার সেটি ২৫-৩৫ মিনিট সুদৃঢ় হয়ে থাকে। ছেলেদের ক্ষেত্রে সকালে উত্তেজিত পুরুষাঙ্গ নিয়ে ঘুম ভাঙ্গাটা সাধারণ একটি বিষয়। রাত্রে পুরুষাঙ্গ শক্ত হয়ে ওঠার নির্দিষ্ট কারণ জানা যায় না। গবেষণায় দেখা গেছে যে স্বপ্ন দেখার সঙ্গে এর সম্পর্ক থাকতে পারে। কারণ যাই হোক বেশিরভাগ ডাক্তারই একমত যে রাতে পুরুষাঙ্গ শক্ত হয়ে ওঠা হচ্ছে সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে চলার লক্ষণ।
পায়ের মাপের সাথে পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্যের কোন সম্পর্ক নেই: আপনার লিঙ্গের আকার আপনার জুতোর মাপের সমানুপাতিক এই ধারনাটি মিথ্যা। গবেষণায় পায়ের মাপের সাথে পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্যের কোন সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
ছোট আকারের পুরুষাঙ্গ সুদৃঢ় হলে অনেক বেশি দীর্ঘ হয়: ছোট আকারের পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্য উত্তেজিত অবস্থায় অনেক বেশি বেশি বেড়ে যায়। ২,৭৭০ জন পুরুষের লিঙ্গের আকারের উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে ছোট আকারের পুরুষাঙ্গ উত্তেজিত অবস্থায় ৮৬% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়, যা বড় আকারের পুরুষাঙ্গের আকার বৃদ্ধির তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ (বড় আকারের পুরুষাঙ্গ উত্তেজিত অবস্থায় ৪৭% বাড়ে)। গবেষণায় আরও দেখা গেছে উত্তেজিত অবস্থায় দুজন পুরুষের লিঙ্গের দৈর্ঘ্যের পার্থক্য অনুত্তেজিত অবস্থায় তাদের দৈর্ঘ্যের পার্থক্যের চাইতে কম হয়। অতএব দেখা যাচ্ছে যে উত্তেজিত অবস্থায় যদি পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্যের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য না থাকে তার মানে হচ্ছে অনুত্তেজিত অবস্থায় যেগুলোর আকার ছোট সেগুলো উত্তেজিত অবস্থায় অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।
বীর্যপাতের সময় আপনি মূত্রত্যাগ করতে পারেন না: অনেক মানুষ বিশ্বাস করেন যে বীর্যপাতের সময় মূত্রত্যাগ করা সম্ভব। এটি সত্যি নয়। আপনার ব্লাডার বা মূত্রাশয় ভর্তি থাকলেও বীর্যপাতের সময় কেবল বীর্যই বেরিয়ে আসবে। তবে যৌনক্রিয়ার সময় ব্লাডার খালি থাকাই বাঞ্ছনীয়।