Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪,

সত্যি কী হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছিল গ্রাম! (ভিডিও)

জানুয়ারি ১৩, ২০২১, ১২:২৫ পিএম


সত্যি কী হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছিল গ্রাম! (ভিডিও)

ভৌতিক সিনেমায় দেখা যায় হুট করেই ভুতের জাদুতে উধাও হয়ে যায় মানুষ। গা ছমেছমে দৃশ্য। সেই মুহুর্তে উধাও হওয়া মানুষটিকে খুঁজে না পাওয়া গেলেও, সিনেমার শেষ দৃশ্যে কিন্তু উধাও হওয়ার রহস্য উন্মোচন হয়। কিন্তু জানেন কী পৃথিবীতে এমনই একটি গ্রাম রয়েছে যে গ্রাম থেকে উধাও হয়ে গেছে প্রায় ২০০০ মানুষ। কিন্তু সেই রহস্যের উন্মোচন হয়নি আজও। 

ঘটনাটি ঘটেছিল কানাডার আজকুনি গ্রামে। কানাডার উত্তরে আজকুনি হ্রদের পাশে অবস্থান হওয়ায় গ্রামটির নাম ছিল আজকুনি। প্রায় ২ হাজার আদিবাসীর বসবাস ছিল এই গ্রামে।

এই গ্রামের মানুষের উপার্জনের মাধ্যম ছিল পশু পালন এবং পশুর পশম বিক্রী করা। পশু এবং পশুর লোম ক্রয়ের জন্য গুটিকয়েক ব্যবসায়ী যাতায়াত করত এই গ্রামটিতে। সেখানে তেমন কোনো কোলাহল ছিল না।

একদিন জো লেবেল নামের একজন পশম ব্যাবসায়ী আঞ্জিকুনি গ্রামে এসে উপস্থিত হন। জো লেবেল এর আগেও বিশেষ কাজে বেশ কয়েকবার এই গ্রামে এসেছিলেন এবং গ্রামের মানুষদের সাথে তার চেনাজানা ছিল। কিন্তু এবার আসার পর জো দেখলো পুরো ভিন্ন চিত্র। 

জো দেখলো পুরো গ্রামটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কোথাও কোন জনমানব নেই। একেবারে কর্পুরের মত হাওয়া – যেন বাতাসে মিলিয়ে গিয়েছিল সবাই।  গ্রামে অনেক দোকান-পাট, রাইফেল বা অস্ত্র-সস্ত্র এবং ঘরবাড়ি ছিল – কিন্তু কোন গ্রামবাসীকে কখনও খুজে পাওয়া যায়নি।

শুধু তাই নয়, তারা যে শার্টগুলো বুনছিল সেগুলো অসমাপ্ত অবস্থায় ছিল।  চুলায়  খাবারগুলো তখনো গরম হচ্ছিল, মনে হচ্ছিলো যেন একটু আগেও এখানে অনেক মানুষের উপস্থিতি ছিল। যেই অবস্থা দেখে তার মনে হয়েছিল গ্রামের সবাই আকস্মিকভাবে গ্রাম ছেড়ে অন্য কোথাও চলে গেছেন।

প্রত্যেকটি বাড়ি ঘুরেও কোনো মানুষের দেখা পেলেন না সেই ব্যবসায়ী। হঠাৎ সাতটি কুকুরকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান তিনি । এ ছাড়া গ্রামের একমাত্র কবরস্থানের সবগুলো কবর পাওয়া গেল খোদিত অবস্থায়! কিন্তু কবরস্থানের ভেতরে কোনো লাশের দেখা মিলল না। ভেতরের সবগুলো লাশ কোথায় যেন উধাও হয়ে গেছে।

এটা কোনো প্রাণীর কাজ নয়, কারণ কবরের সঙ্গে যে পাথরের ফলক ছিল সেগুলো যথাস্থানেই ছিল। এমন ঘটনা দেখে বিচলিত হয়ে পড়েন লবেল। তিনি দ্রুত দ্য রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেইন পুলিশকে খবর দেন।

মেজর থিওডোর লিস্টোর্টের নেতৃত্বে দ্য রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেইন পুলিশ পুরো গ্রাম ও আশপাশের এলাকা তন্ন তন্ন করে খুঁজে কিন্তু কোনো গ্রামবাসীকে আর দেখতে পাওয়া যায় নি। যদিও এই খোঁজা খুঁজির ফলে পুলিশ আরও ভয়াবহ ঘটনার সন্ধান পায়।

পুলিশ দেখে ওই গ্রামের এস্কিমোদের পূর্বপুরুষদের সবগুলো কবর খোদিত অবস্থায় আছে এবং সেগুলোর ভেতর থেকে লাশগুলো গায়েব! কে বা কী এই লাশ সহ পুরো গ্রামবাসীকে গায়েব করেছে তার কোনো সন্ধান মেলেনি হাজার তদন্তের পরও। শুধু মাত্র অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিলো ওই গ্রামের সবচেয়ে প্রাচীন গোত্র প্রধানের কবরটি।

জো লেবেলের মাধ্যেমে ১৯৩০ সালের পর একজন সাংবাদিক এই গ্রামের একটি ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করলে  গ্রামটি পুরো বিশ্বের নজরে চলে আসে।

এরপর ১৯৩১ সালে জর্জ সাভারভিও নামে একজন লেখক নর্থওয়েস্ট জার্নালে এ গ্রাম সংক্রান্ত ৫ পর্বের একটি নিবন্ধ লিখেন। এই নিবন্ধে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা রহস্যময় এই গ্রামটি সম্পর্কে লেখা থাকলেও  কানাডার ভিলেজ অফ ডেড গ্রামের রহস্য উন্মোচন হয়নি আজও।

[embed]<iframe width="727" height="409" src="https://www.youtube.com/embed/-Y5knoh6c98" frameborder="0" allow="accelerometer; autoplay; clipboard-write; encrypted-media; gyroscope; picture-in-picture" allowfullscreen></iframe>[/embed]

 

আমারসংবাদ/এডি