আমার সংবাদ ডেস্ক
জানুয়ারি ২০, ২০২১, ১১:১৫ এএম
রোজ ঘড়ির এলার্মে ঘুম থেকে উঠা। সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে বাড়ি ফেরা, সব মিলিয়ে একঘেয়েমী জীবন। এরই মাঝে আছে আবার সমাজের নানা প্রতিবন্ধকতা। মাঝে মাঝে মনে হয় একটু অন্য রকম হতো যদি জীবনটা। মোগলি কিংবা টারজানের মতো স্বাধীন ভাবে নিজের মতো করে পাহাড়ে কিংবা সমুদ্রে কাটাতে পারতাম জীবন। কিন্তু এই ভাবনা গুলো শুধু ভাবনাতেই রয়ে যায়। ঠিক যেমন মোগলি কিংবা টারজান থাকে গল্পের পাতায়।
তবে জেসনের জীবনের গল্পটা কিন্তু ভিন্ন। কোনো ধরাবাধা নিয়ম তাকে আটকে রাখতে পারেনি। গতানুগতিক নিয়মের বাইরে যেয়ে স্বাধীনভাবে হংকং-এর সমুদ্রের পাশের এক জঙ্গলে বাস করেন তিনি।
নেচে, গেয়ে, পাহাড়ে চড়ে এবং বিশাল সমুদ্রে সাঁতার কেটেই সময় কাটে তার। সেই সাথে অদ্ভুত অদ্ভুত শখও পেলে রেখেছে জেসন।
তার অদ্ভুত শখের মধ্যে একটি তিনি চুল কাটেন না। বিস্ময়কর হলেও সত্যি, গত ২৪ বছরে কখনো চুল কাটেনি জেসন। জেসনের ধারণা, তার চুলই তার শক্তির উৎস।
এছাড়াও জেসন তার সুস্থ জীবন যাপনের জন্য নিজেই নিজের খাবার উৎপাদন করেন যা সম্পূর্ণ অর্গানিক।
এক বন্ধুর সাহায্যে সমুদ্র সৈকতের আবর্জনা, পুরোনো প্লাস্টিকের বোতল এবং গাছের ডাল দিয়ে নির্মাণ করেছেন একটি বাড়ি। এই অদ্ভত জিনিস দিয়ে বাড়ি বানানোর কারণ তিনি গর্বের সাথে বলেন বাড়ি তৈরির জন্য একটি গাছও কাটা হয়নি।
তবে এই স্বাধীনচেতা মানুষটির ছোটবেলা কেটছে ভীষণই কঠিন সময়র মধ্যে দিয়ে। ছোটবেলায় মাকে হারিয়ে গৃহহীন জেসন বড় হন গীর্জা চত্ত্বরে এবং মেট্রো স্টেশনে রাত কাটিয়ে। অনেক চাকরি খোঁজার চেষ্টা করেও, কোথাও কোনো কাজ পাননি জেসন।
অবশষে বহু কষ্ট এবং সংঘর্ষের পর জন্মস্থান ফিলিপিনস থেকে জেসন আসেন হংকং-এ। এরপর হংকং-এ তিনি এমন এক জীবন বেছে নেন, যে জীবনের খোঁজ তিনি করেছেন সারা জীবন ধরে।
শহুরে নাগরিকের জীবন তার পছন্দ নয়। তিনি শহরে বাস করার চেষ্টা করলেও শহরের ব্যস্ত জীবন তার সহ্য হয়নি। বরং সমুদ্রে অফুরন্ত সাঁতার কেটে, পাহাড়ে চড়ে, জঙ্গলের গাছেদের সঙ্গে সময় কাটিয়েই ভালো আছেন তিনি।
কোনো কাল্পনিক চরিত্র কিংবা বইয়ের পাতায় লেখা নায়ক নয় জেসন, বরং তিনি একজন বাস্তবের টারজান।
আমারসংবাদ/এডি