Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

গৃহিণী থেকে বডিবিল্ডার: কিরণ ডেমবলার জীবন বদলানোর গল্প

আমার সংবাদ ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২১, ০৫:৪০ এএম


গৃহিণী থেকে বডিবিল্ডার: কিরণ ডেমবলার জীবন বদলানোর গল্প

আমরা এমন একটি সমাজে বাস করি যেখানে নারীর ভবিতব্য কেবল বউ হয়ে সংসার সামলানো কিংবা মা হয়ে সন্তানকে লালন পালন করা। আসলেও কী তাই? না, একদমই তাই নয়। যে রাধে সে চুলও বাঁধে। নারী যেমন গৃহিণী হয়ে সংসার সামলাতে পারে, মা হয়ে সন্তানকে লালন করতে পারে তেমনই ৪৫ বছর বয়সে হতে পারে একজন বডি বিল্ডার। ঠিক যেমন হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা কিরণ ডেমবলা। তিনি একদিকে যেমন সিক্স প্যাকের অধিকারিনী, একজন সেলিব্রিটি ফিটনেস ট্রেনার সেই সাথে তিনি একজন নামকরা ডিজে, পর্বতারোহী ও ফটোগ্রাফার।

৩৩ বছর বয়স পর্যন্ত একজন সাধারণ নারীর মতোই চলছিল তার জীবন। গৃহিণী ও দুই বাচ্চার মা কিরণের দিন কাটত সংসার নিয়েই। তার স্বামী শহরের একটি বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করছিলেন।

গানের প্রতি আগ্রহ থাকায় সংগীত বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছিল কিরণ। ইচ্ছে ছিল শিল্পী হবে। 

কিন্তু কিরণের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় একটি দুঃসংবাদ। কিরণ জানতে পারে তার মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধেছে। সেই সময় তার ওজন ছিল ৭৫ কেজি। এই সময় শরীর নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন তিনি। 

সেই সময় কেবল সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাকেই আগলে রেখে শুরু করেন শরীরচর্চা। অসুস্থকালীন সময়ের পর ২০০৭ সালে প্রথম তিনি বন্ধুদের সঙ্গে একটি ইয়োগা সেন্টারে যোগ দেন। এরপর শরীরচর্চার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করায় এলাকার এক জিমে ভর্তি হন। ৬ মাসের মধ্যে ২৪ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন তিনি। 

এরপর তিনি জিম ট্রেইনিংয়ের উপর একটি কোর্স করেন। অবশেষে ২০০৮ সালে বেগমপেটে নিজস্ব জিম খুলেন তিনি। 

এতো দ্রুত এতো ওজন কমানোর পর  কিরণের বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তার নিজের জিমে তখন ক্লাইন্টের সংখ্যাও বাড়তে শুরু করে। এরপর অভিনেতা রাম চরণের স্ত্রী অভিনেত্রী উপাসনা কামিনেনির ট্রেনার হিসেবে কাজ শুরু করেন কিরণ।

উপাসনা কামিনেনির পরে তামান্নাহ ও আনুশকা শেঠিকে ‘মিরচি’ ও ‘বাহুবলী’ সিনেমার জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি। এরপর থেকে তিনি সেলিব্রিটি ফিটনেস প্রশিক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি পেতে শুরু করেন। রাজামৌলি, প্রকাশ রাজ এবং আরও কয়েকজন তার ক্লায়েন্ট ছিলেন। 

তবে প্রথমে তার সিক্স প্যাক তৈরি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। কেবল শরীরচর্চার প্রতিই নজর দিয়েছিলেন তিনি। ২০১২ সালের দিকে তিনি সিক্স প্যাক করার সিদ্ধান্ত নেন এবং আট মাসের মধ্যে তিনি সিক্স প্যাক সম্পন্ন করেন। ২০১৩ সালে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড বডি বিল্ডিং চ্যাম্পিয়নশিপে নারীদের মধ্যে তিনি সরাসরি প্রবেশ করেছিলেন। সেখানে চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি ষষ্ঠ স্থান অর্জন করেন এবং জিতে নেন সবচেয়ে সুন্দর শরীরের খেতাব। 

এ ছাড়াও তিনি একজন ডিস্কো জকি (ডিজে) এবং মাউন্টেইনার; যিনি এখনও পর্যন্ত তিনবার মাউন্ট এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে ভ্রমণ করেছেন। তার পেশাগুলোর কথা জেনে সবাই হাঁপিয়ে উঠলেও, গত এক দশকের বেশি সময় ধরে এসবের মধ্যেই নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন দুই সন্তানের জননী।

আমারসংবাদ/এডি