Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪,

বুড়ো-বুড়ির এ কেমন বিয়ে!

আমার সংবাদ ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২১, ০৯:০০ এএম


বুড়ো-বুড়ির এ কেমন বিয়ে!

বিয়ে মানে আনন্দ, বিয়ে মানে উচ্ছ্বাস। সেই বিয়ে যুবক-যুবতীর হোক কিংবা বুড়ো-বুড়ির। তাইতো ১০৭ বছরের বর আর ৯৮ বছরের কনের বিয়েতেও নেই আনন্দ-উৎসবের কমতি। ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজনে উৎসবের আমেজে কমতি নেই পাড়া-প্রতিবেশীদেরও।

তবে এইটা বৈদ্যনাথ দেব শর্মা ও পঞ্চবালা দেব শর্মার দ্বিতীয় বিয়ে। তাদের প্রথম বিয়ে হয়েছিল ৭৪ বছর আগে। বৈদ্যনাথ দেবশর্মার বয়স যখন ১৮ তখন তার বাবা স্বর্গীয় ভেলশু দেবশর্মা একই এলাকার স্বর্গীয় বিদ্যামন্ডল দেবশর্মার হাতে ১৩ টাকা পণ দিয়ে ঘরে তুলে আনেন তার ৮ বছর বয়সী কন্যা পঞ্চবালা দেবশর্মাকে।   

এই ৭৪ বছরে তাদের একমাত্র মেয়ের বিয়ের পর সন্তান, নাতি-নাতনি এবং তাদের ঘরের সন্তান মিলে পাঁচ প্রজন্ম পেরিয়েছে। বৈদ্যনাথ-পঞ্চবালার একমাত্র মেয়ে ঝিলকো বালার তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ে। তাদের প্রত্যেকের ঘরে ছেলে মেয়ে শুধু নয়, নাতি-পুতিও আছে। বৈদ্যনাথ-পঞ্চবালার সৌভাগ্য পাঁচ প্রজন্মের উত্তরসূরি দেখে ফেলেছেন তারা। তাদের বংশের রেওয়াজ আছে যদি কারও পাঁচ সিঁড়ি দেখার সৌভাগ্য হয় তাহলে ভগবানের তুষ্টির জন্য পুনর্বিবাহের আয়োজন করতে হয়। আর সেই অনুযায়ী গত এক মাস ধরেই চলছিল এই প্রবীণ জুটির পুনর্বিবাহের আয়োজন।

দিনাজপুরে বিরলে গত ২১ ফেব্রুয়ারি বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন বৈদ্যনাথের নাতি ফটিকচন্দ্র দেব শর্মা। বিবাহ কাজে পুরোহিতের দায়িত্বে ছিলেন মহাদেব ভট্টাচার্য। 

বৈদ্যনাথ তাঁর বয়স ১০৭ বছর জানালেও জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তাঁর বয়স ৯২ বছর। তবে বৈদ্যনাথ দাবি করলেন, তাঁর বাবা ভেলেগু দেব শর্মার হাতে লিখে যাওয়া জন্মতারিখ অনুযায়ী তাঁর বয়স ১০৭ বছর। বৈদ্যনাথ পেশায় কৃষিজীবী। ১৯৭২ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ছিলেন। এখন তার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৫৪ জন।

বিয়ের প্রসঙ্গে বৈদ্যনাথ বলেন, ‘আমাদের সন্তান হয়েছে। সন্তান থেকে নাতি-নাতনি। তাদেরও সন্তানাদি হয়েছে। এভাবে পাঁচপিড়ি (পাঁচ প্রজন্ম) হয়ে গেছে। পাঁচপিড়ি হওয়ার পর স্বামী-স্ত্রী বেঁচে থাকলে তাদের বিয়ে করতে হয়। এতে বংশের মঙ্গল হয়। নাতির সঙ্গে আলাপ করলে সে বিয়ের সব আয়োজন করে। আমার মতো পরবর্তী বংশধরেরাও যেন দীর্ঘ জীবন পায়।’
 
স্ত্রী পঞ্চবালা দেবশর্মা বলেন, আমার যখন বিয়ে হয়েছে তখন আমি কিছুই বলতে পারি না। এখন আবার নাতিপুতিরা বিয়ে দিল। আমার স্বামী আমাকে অনেক ভালোবাসে, তাকে ছাড়া আমি থাকতে পারি না, আমাকে ছাড়াও সে থাকতে পারে না। 

স্ত্রী পঞ্চবালা দেবশর্মা বলেন, আমার যখন বিয়ে হয়েছে তখন আমি কিছুই বলতে পারি না। এখন আবার নাতিপুতিরা বিয়ে দিল। আমার স্বামী আমাকে অনেক ভালোবাসে, তাকে ছাড়া আমি থাকতে পারি না, আমাকে ছাড়াও সে থাকতে পারে না। 

বাবা-মায়ের আবারও বিয়ে দিতে পেরে খুশি তাদের একমাত্র মেয়ে ঝিলকো বালা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। 

এ বিষয়ে বিয়ের আয়োজক নাতি ফটিক চন্দ্র সরকার বলেন, এক মাস আগে এই আলোচনা করি। পরে পরিবারের সদস্যরা একমত হলে এই বিয়ের আয়োজন করি। এর আগে আমরা ধর্মীয় রীতিনীতির বিষয়গুলো নিয়ে পুরোহিতের সঙ্গে কথা বলেছি। আমার দাদুর পাঁচ সিঁড়ি পার হয়ে গেছে। আমরা তার নাতি, আবার আমাদেরও নাতি হয়েছে। বিয়েতে অনেক লোকসমাগম হয়েছিল।

এই বিয়েতে বর ও কনের সন্তান, তাদের নাতি-নাতনি মিলে ৪ প্রজন্মের আত্মীয়-স্বজনসহ অংশগ্রহণ করেন আশপাশের প্রতিবেশীরাও। 

আমারসংবাদ/এডি