Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

যে সেতুর ওপর স্টিমার-লঞ্চ চলে

নিজস্ব প্রতিবেদক

এপ্রিল ২, ২০২১, ১১:১৫ এএম


যে সেতুর ওপর স্টিমার-লঞ্চ চলে

সেতু তৈরি হয় মানুষ অথবা যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে। তবে ‘ম্যাগডেবারগ ওয়াটার ব্রিজ’র বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন। এই ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছিল নৌযান চলাচলের জন্য। যে নদীর ওপর এই ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছিল তার ওপর আড়াআড়ি বয়ে গেছে আরেকটি নদী!

জার্মানির রাজধানী বার্লিন হতে ১০০ মাইল পশ্চিমে ম্যাগডেবারগ শহরের অবস্থান। এই শহরের কোল ঘেঁষে বয়ে চলেছে স্বচ্ছ জলধারার মিডেল অ্যান্ড নদী। এই নদীর ওপর সেতুটি তৈরির মূল উদ্দেশ্য বার্লিনের সাথে রিনল্যান্ডের যোগাযোগ সহজ করা। এবং সে উদ্দেশ্যেই সেতুটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয় ১৮৭০ সালে। তবে পরিকল্পনা হলেও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে তখন সেতুটি নির্মাণ করা যায়নি। 

এরপর ১৯৩০ সালের দিকে আবার সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে বন্ধ হয়ে যায় কাজ। এরপর ১৯৯৭ সালে তৃতীয়বারের মতো সেতুর কাজ পুনরায় শুরু হয়। এবং সব বাধা পেরিয়ে কাজ শেষ হয় ২০০৩ সালে।

সেতুটির দৈর্ঘ্য ৯১৮ মিটার, উচ্চতা ৬৯০ মিটার। এটি মোটেই কোনো সাধারণ সেতু নয়। এর উপর দিয়ে পানি প্রবাহের জন্য একটি কৃত্রিম খাল রয়েছে। খালের দৈর্ঘ্য ৩৪ মিটার এবং গভীরতা ও ৪.২৫ মিটার। এর নির্মাণযজ্ঞও বিশাল। বলা হয়ে থাকে, সেতু তৈরিতে প্রায় ২৪ হাজার মেট্রিক টন স্টিল এবং ৬৮ হাজার ঘনমিটার কংক্রিট ব্যবহার করা হয়েছিল। খরচ পড়েছে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ইউরো।

সেতুটি মূলত এলবি এবং মিডেল অ্যান্ড নামক দু’টি নদীকে সংযুক্ত করেছে। এটি রিনল্যান্ড ও বার্লিনের মধ্যে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করার অন্যতম মাধ্যম। অর্থাৎ এই সেতু দিয়ে ভারী কোনো যানবাহন নয়, চলাচল করে বাণিজ্যিক জাহাজ, স্টিমার, লঞ্চ ইত্যাদি। ‘ওয়াটার ব্রিজ’ মূলত যেসব নৌপথে বিভিন্ন মালামাল পরিবহন করা হয় সেগুলোকে বলে। সেদিক দিয়ে ম্যাগডেবারগ ওয়াটার ব্রিজ কিছুটা ভিন্ন। কারণ এর নিচ দিয়ে বয়ে গেছে আরেকটি নদী। 

গুরুত্বপূর্ণ এই সেতু শুধু বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে না, ভূমিকা রাখছে পর্যটন খাতেও। দেশী-বিদেশী পর্যটক এই সেতু দেখতে ভিড় জমান এবং বিষয়টি উপভোগ করেন।

আমারসংবাদ/জেআই