Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

হালুয়াঘাটে পর্যটনের হাতছানি

এমএ খালেক, হালুয়াঘাট

নভেম্বর ২৪, ২০২০, ০৮:০০ পিএম


হালুয়াঘাটে পর্যটনের হাতছানি

বইছে ফাল্গুনি হাওয়া। মনটাও যেন উরু উরু। চলো না ঘুরে আসি। কোথায়? গাবরাখালী পাহাড়ে। এমনটা যারা ভাবছেন, তারা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আসতে পারেন নির্জনে। মেটাতে পারেন ভ্রমণপিয়াসা। অনেক উৎসুক মানুষ আসেন।

তবে কেন আসেন? এ প্রশ্ন আসবেই। এটি পাহাড় আর নদীঘেরা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী ৫নং গাজিরভিটা ইউনিয়নের  গাবরাখালী পাহাড়। যেনো সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি।

মেঘালয়ঘেঁষা অবারিত সবুজের সমারোহে গাবরাখালী পাহাড়ের অবস্থান। এখানে ছোট-বড় অসংখ্য টিলা। কত যে মনোমুগ্ধকর না দেখলে হয়তো বা বিশ্বাস হবে না। যারা একবার দৃশ্যগুলো অবলোকন করেছেন তারাই অনুভব করেছেন। এটি গারো পাহাড়ের পাদদেশে অন্যতম আকর্ষণীয় সম্ভাবনাময় পর্যটনকেন্দ্র গাবরাখালী।

ময়মনসিংহ জেলা প্রসাশন ও হালুয়াঘাট উপজেলা যৌথভাবে প্রায় ১২৫ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হচ্ছে পর্যটন এলাকা। ইতোমধ্যে হালুয়াঘাট উপজেলা পরিষদ থেকে ৩৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অপার সম্ভাবনাময় পর্যটনকেন্দ্রটির সংস্কারের জমির মাপজোক, রাস্তার কাজ এগিয়ে চলছে।

গাবরাখালী পর্যটনকেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান, হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম, উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক সায়েম, পৌরসভার মেয়র খায়রুল আলম ভূঞা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গাজিরভিটা ইউনিয়নের গাবরাখালী এলাকাটি প্রতিবেশী  পাহাড়গুলোর তুলনায় ব্যতিক্রমী। এখানে অনেক পাহাড়ের মধ্যে উচ্চতা সবচেয়ে বেশি। এর চূড়ায় শতাধিক হেক্টর ভূমি সমতল। সবুজ আর নীলের সংমিশ্রণ। যেনো মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

ছোট-বড় আকাশছোঁয়া বিশাল পাহাড়। এর নৈসর্গিক দৃশ্য মনকে করে আবেগতাড়িত। প্রাকৃতিকভাবেই গড়ে উঠেছে এ পাহাড়। শীতকালে ভোরের সূর্যের আলোয় ঝলমল করে ওঠে পাহাড়ের চূড়া। পরিবেশ হয়ে ওঠে কোলাহলপূর্ণ।

হিজল-করচসহ নানা প্রজাতির গাছের সমারোহ আছে এখানে, যেনো সবুজে আচ্ছাদিত। অনেকটাই মিঠাপানির বন সেই ‘রাতারগুলের’ মতোই। গাবরাখালী! নিঃসর্গের মাঝে লুকিয়ে থাকা এক অপরূপ বনাঞ্চল।

জলের সঙ্গে তার মিতালী। বর্ষার অথৈ জলে সে যেনো নবরূপে জেগে ওঠে। আপন সৌন্দর্যের সবটুকু মেলে ধরে, উজার করে দেয়। এসময় খুলে পড়ে তার বোরখার ঘোমটাও। আগন্তুক আর পথিকদের কাছ থেকে সে নিজেকে আড়াল করে রাখে ঠিকই, কিন্তু আপন ভূবনের বাসিন্দাদের কাছে সে খুবই আধুনিক-উদার। বনের বিচিত্র সব গাছ, জলচর-স্থলচর-উভচর প্রাণী আর মাছশিকারীদের নিয়ে তার একান্ত ভূবন। বর্ষার রাতে সীনি জল তার স্বজন, পরম আত্মার-আত্মীয়।

হালুয়াঘাট উপজেলায় একটি পর্যটনকেন্দ্র হলে ভ্রমণপিয়াসীদের চাহিদা পূরণে যোগ হবে নতুন মাত্রা। দেশের পর্যটনশিল্প উন্নয়নের তালিকায় আসবে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার গাবরাখালী পর্যটনকেন্দ্র। এখান থেকে আয় হবে বছরে কয়েক লাখ টাকা। প্রতিবেশী গ্রামের বেকারদের জন্যে হবে কর্ম সংস্থানের নতুন পথ। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হবে গাবরাখালী পর্যটনকেন্দ্র।

আমারসংবাদ/এআই