Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

২৫ পৌরসভায় নির্বাচন নেই বিদ্রোহী প্রার্থীর শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ২৬, ২০২০, ০৬:০০ পিএম


২৫ পৌরসভায় নির্বাচন নেই বিদ্রোহী প্রার্থীর শঙ্কা

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও বার্ধক্যজনিত কারণে গত কয়েক মাসে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক সংসদ সদস্য মৃত্যুবরণ করেন। ফলে বেশ কিছু আসন শূন্য হওয়ায় সেখানে উপনির্বাচন সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। বেশ কয়েকটি আসনে ইতোমধ্যে উপনির্বাচন শেষ হয়েছে।

এখন নতুন করে তোড়জোড় শুরু হয়েছে পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে। নির্বাচন কমিশনও ব্যস্ত সময় পার করছেন এই নির্বাচনকে ঘিরে। ইতোমধ্যে নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে কিছু কিছু পৌরসভায় প্রার্থীও চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রার্থীরাও নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।

তাই সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে ২৫ পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফলে এই নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। অধিকাংশ পৌরসভায়ই মনোনয়ন পেতে আগ্রহী এমন একাধিক প্রার্থীর ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে।

এদিকে দলীয় মনোনয়ন না পেলে বিদ্রোহী প্রার্থীর আশঙ্কা নেই বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। তবে, প্রার্থী মনোনয়নে বিএনপি দলের ত্যাগী, নিবেদিত ও এলাকায় জনপ্রিয় নেতাদের অগ্রাধিকার দেবে।

এদিকে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে— দলীয় মননোয়ন ছাড়া বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে জেলা কমিটির কাছে মনোনয়ন ফরম পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। ওই ফরম জেলা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পাওয়া যাবে। তবে, কেউ চাইলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকেও ফরম নিতে পারবেন।

এরপর পাঁচ সদস্যের জেলা কমিটির যৌথ সুপারিশসহ ফরম পূরণ করে কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ না ওঠে, তাকেই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মাধ্যমে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে।

যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাকে দলীয় তহবিলে অফেরতযোগ্য ১৫ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। পৌর নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্বে রয়েছেন সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদও।

তিনি বলেন, ‘যারা মনোনয়নপ্রত্যাশী, তাদের ফরম দিচ্ছি। এরপর দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী প্রার্থী ঠিক করবো। এক্ষেত্রে যিনি দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, স্থানীয়ভাবে যিনি জনপ্রিয়, তার জন্য সুপারিশ করবো। তবে বয়স ও অভিজ্ঞতাও বিবেচনায় নেবো।’

বিএনপির প্রার্থী বাছাইপ্রক্রিয়া সম্পর্কে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তরের দায়িত্বে থাকা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই  নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। এ জন্য জেলা কমিটির মাধ্যমে কেন্দ্রের নির্দেশনা পৌরসভায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

সেই অনুযায়ী কাজও শুরু করা হয়েছে। প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ পাঁচজন স্থানীয় নেতার ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তারা হলেন— নির্বাচনি এলাকার জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, স্থানীয় পৌরসভার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক। যেখানে আহ্বায়ক কমিটি রয়েছে, সেখানেও একইভাবে নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।’

সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স আরও বলেন, ‘পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর কোনো আশঙ্কা নেই। আমরা ঐকমত্যের ভিত্তিতেই প্রার্থী মনোনয়ন দেবো।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ভোটাররা ভোট দেবে না, কিন্তু নির্বাচন কমিশন বলবে ৬০-৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবু আমরা নির্বাচনে যাবো। আর আমাদের কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হবেন না। কারণ, ফল তো জনগণের ওপর নির্ভর করে না। এ জন্য কেউ প্রবলেম করবেন না বলেই আমার ধারণা।’

উল্লেখ্য, বর্তমানে পৌরসভার সংখ্যা ৩২৯টি।  গত ২২ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৮ ডিসেম্বর ২৫ পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২৮ ডিসেম্বর ২৫ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ১ ডিসেম্বর। মনোনয়ন বাছাই ৩ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১০ ডিসেম্বর। প্রথমবারের মতো এসব পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট নেয়া হবে। গত বুধবার থেকে ফরম বিতরণ শুরু করেছে বিএনপি। চলবে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত।

আমারসংবাদ/এআই