Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

জামায়াতের ‘প্রপাগান্ডা স্কোয়াড’: সতর্ক থাকার পরামর্শ আ.লীগের

আসাদুজ্জামান আজম

নভেম্বর ২৮, ২০২০, ০৬:০০ পিএম


জামায়াতের ‘প্রপাগান্ডা স্কোয়াড’: সতর্ক থাকার পরামর্শ আ.লীগের

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে মাঠের রাজনীতিতে পেরে উঠছে না বিরোধীপক্ষ জামায়াত-বিএনপি। মাঠের রাজনীতিতে ব্যর্থ হয়ে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করছে তারা। বিশেষ করে ভার্চুয়াল মাধ্যমকে একমাত্র হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

গড়ে তোলা হয়েছে সরকারবিরোধী ‘প্রপাগান্ডা স্কোয়ার্ড’। দেশের ভেতরে ও বিদেশে বসে এসবে চালানো হচ্ছে সরকারবিরোধী অপ্রপচার। আইনি মারপ্যাঁচের ভয়ে বিদেশে বসে ‘প্রপাগান্ডা স্কোয়ার্ড’ পরিচালনা করছে জামায়াতের প্রশিক্ষিত কর্মীরা। এসব নেতাকর্মীদের ভরণ পোষণসহ কার্যক্রম পরিচালনায় বিশাল অঙ্কের অর্থ পাঠানো হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

তথ্য মতে, প্রায় প্রতিদিন ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারবিরোধী নানা অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইতিহাস বিকৃত করাসহ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে বিষোদগার করা হচ্ছে। সরকারকে বেকায় ফেলতে সামনে আনা নানা ইস্যু তৈরির অপচেষ্টা করা হচ্ছে।

যা ট্রল করেন এক শ্রেণির মানুষ। এসব অপপ্রচারের প্রায় প্রতিটি কন্টেন্টের সূত্রপাত হয়েছে বিদেশে। যার কারণে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না। কনটেন্টগুলো বিদেশ থেকে আসায় আটকানোর সম্ভব হচ্ছে না।

সূত্র মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং লন্ডনে জামায়াত নিয়ন্ত্রিত  অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান আছে। এসব প্রতিষ্ঠানে জড়িতরা প্রত্যেকেই জামায়াতের নেতাকর্মী। যারা ফেসবুক, ইউটিউবে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কন্টেন্ট ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এই কন্টেন্টগুলো রাষ্ট্র এবং সরকারকে আক্রমণাত্মক কিছু আপলোড করার মুহূর্তের মধ্যেই মানুষের মোবাইলে ছড়িয়ে পড়ছে। পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াত শিবিরের কর্মীরা এটাকে ভাইরাল করছে। কন্টেন্টগুলোকে বুস্ট করা হচ্ছে। সুপরিকল্পিত নীল নকশার মাধ্যমে প্রপাগান্ডা স্কোয়াড পরিচালনা করা হচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যে সমস্ত ব্যক্তি এসব কনটেন্ট ছড়াচ্ছেন তারা সবাই একসময় বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে চাকরি করতেন। অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য তারা অভিযুক্ত হন, একপর্যায়ে তারা দেশত্যাগ করেন। এই দেশত্যাগ করে তারা সেখানে গিয়ে ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক ইত্যাদির মাধ্যমে সরকারবিরোধী প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। অতি সম্ক্রতি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণকে কেন্দ্র করে প্রপাগান্ডা চালানো হচ্ছে।

বিভিন্ন বিভ্রান্তমূলক তথ্য দিয়ে ধর্মীয় ইস্যু সামনে এনে জনগণকে ফুঁসিয়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর আগে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের নামে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার অপতৎপরতা চালায় জামায়াতের সাইবার টিম। বাম ছাত্র সংগঠনের আন্দোলনে ঢুকে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত ও বিএনপি সরকারকে মারমুখী অবস্থানে আনতে উস্কে দেয়ার চেষ্টা করে।

২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হয়। এর আগেও একাধিক অরাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলন ঘিরে অপরাজনীতি করেছে বিএনপি-জামায়াত।

বিশ্বব্যাপী করোনা সংকটে সরকার যখন সফলতা কুড়িয়েছে তখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে অপপ্রয়োগের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অন্যান্য মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ইসলামী দলটি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুললেই এখন সরকারবিরোধী নানা রকম তথ্য প্রপাগান্ডা গুজব পাওয়া যাচ্ছে।

সরকার যদি এখনই এসব ব্যাপারে উদ্যোগ না নেয় তাহলে জামাতের প্রপাগান্ডা স্কোয়াডের সামনের দিনগুলোর কর্মকাণ্ড আরো ভয়াবহ হবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে চলা সরকারবিরোধী অপপ্রচার রোধে দেশবাসীসহ নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছে আওয়ামী লীগ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতার নামে জনমনে বিভ্রান্তি ও বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি ও সাধারণ সম্কাদক হুমায়ুন কবির।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্কাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘দল এবং সরকারবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সবসময় প্রস্তুত আছে। কেউ যদি অপপ্রচারের মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়।

দেশের জণগনকে সাথে নিয়ে তাদের প্রতিহত করা হবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্কাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, পৃথিবীর অন্যান্য মুসলিম দেশে অনেক ভাস্কর্য আছে। সেখানে ভাস্কর্য নিয়ে কেউ কথা বলে না। বাংলাদেশেও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য প্রতিষ্ঠিত হবে, এটি ঠেকানোর শক্তি ও ক্ষমতা কারো নেই।

আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, মক্কা নগরীর মানুষই ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলে না। বাংলাদেশ একটা স্বাধীন রাষ্ট্র, এখানে পাকিস্তানের প্রেতাত্মা বা রাজাকারদের হুমকি শোনার জন্য ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হয়নি। এটা স্বাধীন দেশ, এখানে সরকার আছে, জনগণ আছে। উগ্রবাদী কথা জনগণ মানে না।

আমারসংবাদ/এআই