Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

বাড়ছে না রিটার্ন দাখিলের সময়

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

নভেম্বর ২৯, ২০২০, ০৬:০০ পিএম


বাড়ছে না রিটার্ন দাখিলের সময়

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, ‘জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সচেতনতার বিষয়টি মাথায় রেখে সীমিত পরিসরে এবার আয়কর মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

আজ সোমবার শেষ হচ্ছে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়। এ বছর রিটার্ন দাখিলে সময় বাড়ছে না। আজ আয়কর দিবস পালন করা হবে। কিন্তু র্যালি হচ্ছে না।

আলোচনা অনুষ্ঠান ক্ষুদ্র পরিসরে হবে। মাসব্যাপী কর সেবাদান এবং জাতীয় আয়কর দিবস-২০২০ উদযাপন’ উপলক্ষে সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন এনবিআর সদস্য (করনীতি) আলমগীর হোসেন, অপূর্ব কান্তি দাস, হাফিজ মোরশেদ প্রমুখ। এনবিআর চেয়ারম্যান মুনিম বলেন, জনসচতেনতা বৃদ্ধির জন্য আমরা ২০০৮ সাল থেকে জাতীয় আয়কর দিবস পালন করা হচ্ছে।


আর ২০১০ সাল থেকে আয়কর মেলা করা হচ্ছে। এবার করোনার কারণে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিয়ষটি মাথায় রেখে কেন্দ্রীয়ভাবে আয়কর মেলা করা হয়নি। সে জন্য আমরা প্রতিটি জোনে এবং সার্কেলে মেলার আবহ তৈরি করতে চেয়েছি।

সেই সার্কেল এবং জোন থেকে আয়কর সেবা দেয়া হচ্ছে। এই জোন এবং সার্কেলে রিটার্ন দিতে করদাতাদের তেমন কোনো অভিযোগ ছিলো না। কেন্দ্রীয় মেলার চেয়ে কম সময়ে করদাতারা সেবা পেয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমরা মেলায় ব্যাংক সার্ভিসটা দিতে পারেনি।    

তবে সেটার জন্য করদাতাদের কোনো অভিযোগ ছিলো না। এবার সরকার এ চালান (ইলেকট্রনিক চালান) চালু করেছে। যার মাধ্যমে ব্যাংকেও করাদাতাদের যেতে হবে না। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে সবকিছু করতে পারবেন তথা ব্যাংকের যাওয়ার প্রয়োজন নেই। মেলায় ব্যাংকের যে সেবা পাওয়া যাচ্ছে না সেটার অভাব আর থাকবে না। এ চালান হচ্ছে গ্রাহক ব্যাংকে না গিয়ে তার চালান সংগ্রহ করতে পারবেন।

আজ ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবস পালন করা হবে। এবারের আয়কর দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘উন্নত সেবার মাধ্যমে আয়করের আওতা বৃদ্ধি’। তবে এবার জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সচেতনতার বিষয়টি মাথায় রেখে সীমিত পরিসরে আয়কর মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সাজসজ্জা ও অন্যান্য বিষয় এবার পরিহার করা হয়েছে। আয়কর দিবসের র?্যালি হচ্ছে না। তবে আলোচনা অনুষ্ঠান ক্ষুদ্র পরিসরে হবে। বাকিটা অনলাইনের মাধ্যমে হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন জমা হয়েছে ১৩ লাখ ২০ হাজার। পরিশোধিত কর ২ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা। তবে, আমাদের সক্ষমতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় আয়করের ক্ষেত্র এখনো বাড়েনি।

এ বছর আমরা রিটার্ন দাখিলে সময় বাড়াচ্ছি না। আমাদের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আয়করের ক্ষেত্র আমরা বাড়াতে পারেনি। জনগণ যদি মনে করে আয়কর প্রদান একটি সামাজিক মযা?র্দার বিষয় সেটি বুঝলে আয়কর বাড়বেন। রিটার্ন জমা দেয়ার শেষ সুযোগ থাকছে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ে যারা আয়কর রিটার্ন দিতে পারবেন না তারা সংশ্লিষ্ট কর অফিসে আবেদন করতে পারবেন।

তবে দুই শতাংশ জরিমানা বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয়। গ্রাহক সঠিক সময়ে কেনো রিটার্ন জমা দিতে পারেনি। তার যৌক্তিক কারণ দেখালে জরিমানা মওকুফ করা হবে। কমিশনারের কাছে যদি কারণ যৌক্তিক মনে না হয়, তবে গ্রাহককে জরিমানা দিতে হবে।

তিনি বলেন, টিআইএনধারীদের রিটার্ন দেয়া বাধ্যতামূলক, না দিলে জরিমানা গুনতে হবে। আয়কর আইনানুযায়ী উপকর কমিশনার করদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রিটার্ন জমা দুই মান সময় দিতে পারে।

তবে করদাতাকে দুই শতাংশ হারে জরিমানা দিতে হবে। করোনা ভাইরাসের জন্য অনেক করদাতা সময় মতো কর দিতে পারেননি, তারা সময় বাড়ানোর দাবি করছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুর্যোগময় পরিস্থিতি বেশি দিন দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

তবে, কোভিড-১৯ এ বছর হয়েছে। এটি একটি অসুখ হিসেবে বিশ্ব এক বছর মেনে নিয়েছে। তবে, আমাদের কার্যক্রম কিন্তু বন্ধ হয়নি। ব্যবসা থেকে দৈনন্দিন কার্যক্রম সবই চলছে। যদিও একটু অসুবিধা হচ্ছে। সে কারণে রিটার্ন জমা দেয়া নিয়ে কোনো বিশেষ প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে বলে আমরা মনে করছি না।

 ক্ষেত্র বিশেষে এ ধরনের সমস্যায় যদি কেউ পড়ে তাহলে তাদের জন্য আলাদা নিয়ম রয়েছে। তারা আবেদন করতে পারবেন কমিশনারের কাছে। কমিশনারকে বলা হয়েছে যত আবেদন পাবে সময় দিয়ে দেবেন।

তবে, জরিমানা মেন্ডেটরি নয়। সেটা কমিশনারের ওপর নির্ভর করা হবে। তবে, সময় বাড়ানোর ক্ষেত্রে জরিমানার বিষয়টি নমনীয়ভাবে দেখা হয়।

তিনি বলেন, যারা আগে রিটার্ন জমা দিয়েছেন, বা টিআইএনধারী রিটার্ন জমা দেননি তাদের একটা বিরাট অংশ মনে করবে রিটার্ন জমা দেবেন না। তবে নিয়ম অনুযায়ী আইনে যা আছে রিটার্ন জমা না দিলে তাই হবে।

রিটার্ন জমার প্রক্রিয়া সহজ করা হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রিটার্ন সহজ করার চিন্তা করা হচ্ছে। এবার যারা রিটার্ন দেবে তাদের জন্য এক পাতার আবেদন ফরম করা হয়েছে। আর সঠিক কর দেয়া কিভাবে সবাইকে আনা যায় সেটা করা হচ্ছে।

চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের মোট টিআইএনধারী করদাতা সংখ্যা ৫০ লাখ ৭২ হাজার ৫৬৭ জন। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দাখিলকৃত রিটার্নের সংখ্যা ১৩ লাখ ২০ হাজার ৮২৫টি। যা গত বছর ছিলো ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৬২৬টি।

আমারসংবাদ/এআই