Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪,

১৭ হাজার কোটি টাকার গভীর সমুদ্রবন্দর: দ্রুতই এগিয়ে চলছে কাজ

ফুয়াদ মোহাম্মদ সবুজ, মহেশখালী

ডিসেম্বর ৪, ২০২০, ০৫:১৫ পিএম


১৭ হাজার কোটি টাকার গভীর সমুদ্রবন্দর: দ্রুতই এগিয়ে চলছে কাজ

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ির গভীর সমুদ্রবন্দরে বদলে যেতে পারে উপকূলের চেহারা। বন্দরে জেটি নির্মাণসহ যাবতীয় কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। শ্রমিকরা বিরামহীন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

জানা যায়, দেশের বৃহত্তর কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে অধিকগ্রহণকৃত ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ও সাধারণ মানুষের মাঝে অস্বস্তি থাকলেও গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের কারণে স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ মানুষের মাঝে।

এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মহেশখালী দ্বীপ দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক জোনে পরিণত হবে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। এছাড়া উপকূলের সাথে স্থাপিত হবে পরিকল্পিত সংযোগ। কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে সকল আলোচনা ও সমালোচনা ছাপিয়ে এখন আলোচনার শীর্ষে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর।

ধলঘাটা ও মাতারবাড়ি সীমান্তবর্তী এলাকায় নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ১৮.৫ মিটার গভীরতার বন্দর নির্মাণের কাজ বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা।

এদিকে মাতারবাড়িতে নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্রবন্দরের কারণে স্থানীয় লোকজনের মাঝে ভীতি কিছুটা কমেছে। কয়লা বিদ্যুৎ নিয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার এখন আমলেই নিচ্ছে না সাধারণ মানুষ। নিজেদের যা সহায় সম্পদ আছে তা গুছিয়ে রাখতেই কেবল ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।

 স্থানীয় চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ জানিয়েছেন, গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এই দ্বীপ হবে চট্টগ্রাম বিভাগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে। সবকিছুতেই আসবে পরিবর্তন। তবে সরকার টেকনিক্যাল কলেজসহ যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন হলে মানুষ আরও আশান্বিত হবে।

কালারমারছড়া ফকির জুমপাড়ার বাসিন্দা আব্বাস জানান, আমরা অপপ্রচারে আর বিভ্রান্ত হচ্ছি না। গভীর সমুদ্রবন্দরই ভাগ্য বদলে যাবে মহেশখালীর মানুষের। আমাদের মাঝে আর আতঙ্ক নেই, সবাই এখন গভীর সমুদ্রবন্দর নিয়ে আশাবাদী। আগামী প্রজন্ম এ প্রকল্পের সুফল পুরোপুরি ভোগ করবে।

মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রকল্প পরিচালক জাফর আলম বলেন, ২০২৬ সালে বন্দরের প্রথম পর্যায়ের কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। মাতারবাড়ি বন্দর নির্মাণের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে আমাদের অধিকার আরও বেশি শক্তিশালী হবে।

সুনীল অর্থনীতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে মাতারবাড়ি বন্দর নতুন উচ্চমাত্রায় নিয়ে যাবে। নির্মাণ সম্পন্ন হলে ১৮.৫ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারবে এবং প্রায় আট হাজার টিইইউস কন্টেইনার (বিশ ফুট দৈর্ঘের কন্টেইনার) নিয়ে জাহাজ ভিড়তে পারবে মাতারবাড়ি বন্দরে।

ফলে সামগ্রিক পরিবহন ব্যয়  হ্রাস পাবে আনুমানিক ১৫ শতাংশ। মাতারবাড়ি বন্দর সড়ক, রেল ও নদীপথ দিয়ে সংযুক্ত থাকবে। বন্দরকে কেন্দ্র করে একটি সুপরিকল্পিত কানেক্টিভিটি গড়ে উঠবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে পরিকল্পিত উন্নয়ন হচ্ছে।

সমুদ্র সম্পদ ও বঙ্গোপসাগরের বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে মাতারবাড়ী বন্দর সহায়ক হিসাবে কাজ করবে। মাতারবাড়ি বন্দরের বাস্তবায়ন একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে  বাংলাদেশ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

আমারসংবাদ/এআই