Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

কোভিডকালীন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ ও বাস্তবতা

মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম

ডিসেম্বর ২৬, ২০২০, ০৭:৪০ পিএম


কোভিডকালীন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ ও বাস্তবতা

স্বাধীনতার এই ৫০ বছরে পদার্পণ করে এখনো আমরা প্রতিনিয়ত লড়াই করে যাচ্ছি অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। এ দেশের মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার অর্জনের জন্যই স্বাধিকার আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ করেছে।

একাত্তরের ৭ মার্চের ভাষণের  প্রথমেই বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ অর্থনীতি, রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক মুক্তি পাবেন।

বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই যে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি মিলতো সেটি ১৯৭৪ সালে স্বাধীনতার পর পরই একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত ভঙ্গুর অর্থনৈতিক দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি (৭ দশমিক ৭ শতাংশ) দেখলেই বোঝা যায়।

এরই ধারাবাহিকতায় তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রয়েছে এক অন্তর্নিহিত শক্তি। তাই-তো এই বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি মোটামুটি পুনরুদ্ধারের পথে।

আইএমএফের মতে, ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা বিশ্বের তিনটি দেশের একটি হবে বাংলাদেশ। জিডিপি অর্থনীতি পরিমাপের গুরুত্বপূর্ণ হিসাব হলেও সামগ্রিক বিবেচনায় তা যে যথাযথ নয়, তা অনেকদিন ধরেই বলে আসছেন অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশের দ্বারপ্রান্তে। অর্থাৎ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত যোগ্যতা অর্জনের ঘোষণা আসতে পারে। জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) ২০২১ সালের ২২-২৬ ফেব্রুয়ারি ত্রিবার্ষিক মূল্যায়নে বসবে। এই উত্তরণের কারণে দেশ বেশকিছু বাণিজ্য অগ্রাধিকারসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা হারাবে। তা আমাদের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

প্রশ্ন হচ্ছে— এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা কতটা প্রস্তুত অথবা এলডিসি থেকে উত্তরণে যে তিনটি সূচক বিবেচনায় নেয়া হয়, বর্তমানে সব সূচকে ভালো অবস্থানে থাকলেও কোভিড-পরবর্তী দেশের আর্থ-সামাজিক বিবেচনায় কতটা টেকসই থাকবে— সেটি ভেবে দেখার বিষয়।

 ২০১৮ সালের সিডিপির মূল্যায়নে দেখা গেছে, মানবসম্পদ সূচকে ৬৬ বা এর বেশি পয়েন্ট পেতে হবে। আমাদের রয়েছে ৭২ দশমিক ৮ পয়েন্ট, অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে ৩২ পয়েন্ট বা এর নিচে থাকতে হবে।

বাংলাদেশের রয়েছে ২৫ পয়েন্ট। আর মাথাপিছু আয় এক হাজার ২৩০ মার্কিন ডলার থাকতে হয়, এখানেও আমরা অনেক এগিয়ে। সুখবর হচ্ছে সিডিপি বলছে, তিনটি সূচকেরই মান ২০১৮ সালের মতো থাকবে।

 তা হলে ধরে নেয়া যায়, এ অবস্থান থেকে আমাদের উত্তরণ অতিসহজে হবে। এ অবস্থান ধরে রাখার জন্য দেশের ভেতরে বড় ধরনের কর্মসূচি দরকার। সম্প্রতি সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) করোনাকালীন আয়, ব্যয়, বেকারত্বের প্রভাব তুলে ধরেছে।

সংস্থাটি বলছে, করোনায় মানুষের আয় কমেছে ২০ শতাংশ। জরিপে অংশ নেয়া পরিবারগুলোর মধ্যে প্রায় ৬৮ শতাংশ করোনায় কোনো না কোনোভাবে আর্থিক সমস্যায় পড়েছে। দুই-তৃতীয়াংশের বেশি পরিবার করোনাকালে জীবনধারণ করতে গিয়ে আর্থিকভাবে বিপাকে পড়েছে। করোনার কারণে মানুষের আয় কমেছে, কর্ম হারিয়ে বেকার বেড়ে গেছে, ফলে দারিদ্র্য বেড়েছে। অধিকাংশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাই জানাচ্ছে, দারিদ্র্য বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ১৯৯২ সালের পর এই প্রথম দারিদ্র্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উন্নয়ন অন্বেষণের গবেষণা বলছে, আয় কমে যাওয়ায় ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবার আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে পারে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য গৃহীত পদক্ষেপগুলো যদি যথাযথভাবে কাজে লাগানো না যায় তবে এ পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

সামনে ভয়াবহ দারিদ্র্য আসতে পারে। জনসংখ্যার এই বিশাল অংশকে দরিদ্র রেখে কাঙ্ক্ষিত আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয় এবং এটি টেকসই উত্তরণেরও অন্তরায়। এটা শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশেরও একই পরিস্থিতি। বিশ্বজুড়ে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়ে গেছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, এ সময়ে বিশ্বজুড়ে হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৪০ শতাংশ বেড়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে প্রবাসী আয়ের ওপর। প্রবাসে শ্রমবাজার ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে হুমকির মুখে পড়বে প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ প্রবাসী।

যাদের পাঠানো রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে অন্যতম নিয়ামক। ইতোমধ্যে লাখ লাখ প্রবাসী দেশে এসে আটকে পড়েছে। বিদেশে কাজের চাহিদা না থাকায় তারা ফিরতে পারছে না। অন্যদিকে এবছর এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত পাঁচ মাস ধরে জনসংখ্যা রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ ছিলো।

এর আগে তিন মাসে গড়ে প্রতিদিন দুই হাজারেরও বেশি কর্মী গেছেন বিদেশে। এ হিসাবে বিদেশে কর্মসংস্থান চালু থাকলে গত আট মাসে নতুন করে অন্তত পাঁচ লাখ কর্মী বিদেশ যাওয়ার কথা ছিলো।

দেশে ফেরা প্রবাসী কর্মী, অভ্যন্তরীণ পুরান বেকার ও করোনাকালীন নতুন বেকারদের নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার জরিপে কর্মসংস্থানের দুর্দশার চিত্র উঠে এসেছে। সরকার এ আর্থ-সামাজিক সংকট মোকাবিলায় বেকারদের পুনর্বাসন ও বিভিন্ন কর্মসৃজনমূলক ব্যবস্থা নিতে এক লাখ ২১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকার ২১টি খাতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে।

সিপিডির এক গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনা সংকট মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের ৫৬ শতাংশ অর্থই প্রত্যক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। আবার প্রণোদনার বড় অংশ সহায়তা পাওয়ার যোগ্য যারা, তাদের কাছে যাচ্ছে না বলে মনে করেন খোদ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। তার মতে, ‘ব্যাংকগুলো থেকে অনেকেই সহায়তা পাননি’। স্থানীয় সরকারের দুর্বলতার কারণেও প্রণোদনার অর্থ পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি।

আমরা জানি, করোনায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের চাকরির বাজার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। সরকার নতুন করে আবার এই খাতে ১০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে। যা অনুমোদনের জন্য আগামী মন্ত্রী পরিষদে তোলা হবে। শুধু প্যাকেজ ঘোষণা করলেই হবে না, তা বাস্তবায়নের জন্য চাই সঠিক নজরদারি ও সংশ্লিষ্ট খাতের আন্তরিকতা। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে বাংলাদেশের প্রধান করণীয় হলো বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়ানো ও বাণিজ্য-সুবিধা ধরে রাখা।

ইতোমধ্যে আফ্রিকার দেশ চাদ ৪৭টি এলডিসির পক্ষ থেকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছে এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী ১২ বছর একই বাণিজ্য-সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেছে। যা বাংলাদেশসহ প্রতিটি এলডিসির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ, করোনা ভাইরাসে উত্তরণমুখী দেশগুলোর যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে তা পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে উত্তরণ টেকসই করা যাবে। পাশাপাশি বাংলাদেশকে এখন থেকেই এই দেশগুলোর সঙ্গে মুক্তবাণিজ্যচুক্তি কিংবা অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্যচুক্তির ওপর জোর দিতে হবে।

এলডিসি থেকে বের হয়ে গেলে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার হিসাবে, বাংলাদেশের রপ্তানি বছরে ১৪ শতাংশ কমতে পারে। তাই করোনা সংকটে কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাময়িক প্রণোদনা প্যাকেজের পরিবর্তে টেকসই কাঠামো লাগবে।

করোনা কেটে গেলেও দুর্বল মানুষের ওপর প্রভাব শেষ হবে না। বিশেষ করে দারিদ্র্যসীমার একটু উপরে থাকা মানুষ করোনা ভাইরাসের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক অভিঘাতে আবারো গরিব হয়ে যেতে পারে। তাই অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার খসড়ায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে নতুন কর্মসংস্থানে।

সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় লক্ষ্য অনুযায়ী কর্মসংস্থান হয়নি। সেখানে ২০১৬-২০ সালের মধ্যে এক কোটি ২৯ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল কিন্তু কর্মসংস্থান হয়েছে ৯৫ লাখের।

আমাদের উচ্চ প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্যের তথ্যের যথেষ্ট অসংগতি রয়েছে। কর্মসংস্থান বাড়াতে বিনিয়োগ অপরিহার্য। অথচ দেশি বিনিয়োগ একেবারে তলানিতে রয়েছে। দেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি না পাওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগও সেভাবে আসছে না।

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (বিডা) দেশি-বিদেশি মিলিয়ে সামগ্রিকভাবে ৭২ শতাংশ বিনিয়োগ নিবন্ধন কমেছে।

সহজে ব্যবসা করার সূচকে উন্নতির জন্য বেশকিছু সংস্কার করা হলেও বাস্তবিক অর্থে সেগুলোর সুফল নেই। ফলে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানবিহীন প্রবৃদ্ধি হচ্ছে দেশে। যা এই করোনাকালীন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বা বিগত দশকের ধারাবাহিক সফলতার প্রধান প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

করোনার কারণে বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ বেড়েছে উপরন্তু আমাদের এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়ও প্রস্তুত থাকতে হবে। কর্মসংস্থানে শুধু সরকারি উদ্যোগ নয়; বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে।

শ্রমিকদের দক্ষতা, উদ্ভাবনী জ্ঞান ও উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে কারখানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ সার্বিকভাবে আমাদের শ্রমিকদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা কম। আমাদের পরিকল্পনামাফিক জনমিতিক লভ্যাংশকে কাজে লাগাতে হবে।

এ বিশাল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে। জাতীয় মাথাপিছু আয়, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা এ সূচকগুলো তখনই টেকসই হবে যখন মানবসম্পদ উন্নয়ন হবে। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মানবসম্পদ উন্নয়নের বিকল্প নেই।

কারণ মানবসম্পদ উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত খাতসমূহ দীর্ঘমেয়াদে একটি দেশের টেকসই সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। সারা পৃথিবীতেই কাজের ধরন বদলে যাচ্ছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব শুরু হয়েছে, সঙ্গে এসেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, যুক্ত হয়েছে কোভিড-১৯ এর ধাক্কা। ফলে অটোমেশন প্রক্রিয়া গতি পেয়েছে। শ্রমভিত্তিক কাজের প্রয়োজনীয়তা কমে আসছে।

শ্রমবাজারের গতিপ্রকৃতি ইঙ্গিত দেয় এই প্রবণতা ভবিষ্যতেও থাকবে। স্পর্শবিহীন কাজের চাহিদা বাড়ার ফলেও উৎপাদন ও সেবাকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তাই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতির সময়ও কমে গেছে। আমাদের খুব দ্রুততম সময়ে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।

বিশেষ করে প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ মানবসম্পদ নিশ্চিত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অঙ্গীকার করেছেন, এই বিপুলসংখ্যক তরুণ সমাজের জন্য একটি তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের।

তার ভাষায়— আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী সম্প্রতি তার একটি কলামে যথার্থই বলছেন, শেখ হাসিনার শাসনকালকে তিনি ৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, দণ্ডদান ও পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য ‘হাসিনা এরা’ বা হাসিনা যুগ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। মূলত এই যুগটি শুরু হয়েছে তিনি যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপান্তরে হাত দিয়েছেন সেই ২০০৮ সাল থেকে। ফলে আজ বাংলাদেশে ১২ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।

গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব দেশ ডিজিটাল প্রযুক্তিতে এগিয়ে গেছে অর্থনীতিতেও তারা অন্যদের তুলনায় ভালো করছে। ডিজিটাল বা প্রযুক্তিভিত্তিক কার্যক্রমে জোর দিয়ে এবং প্রযুক্তিভিত্তিক কার্যক্রমের সঙ্গে শতশত কোটি মানুষকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে তারা অর্থনৈতিক উন্নয়ন করেছে।

এই সুবিধা দক্ষ ও কার্যকর উপায়ে কাজে লাগিয়ে তারাই এখন বিশ্বে উদ্ভাবনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমাদের তরুণরাও একদিন এ ডিজিটাল শিল্পবিপ্লবে বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে, আর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ইতিহাস ঘেঁটে বলবে— আমরা হাসিনা যুগে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি।

তাই আমাদের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে, নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের প্রতিটি সূচকে অত্যন্ত টেকসই অবস্থান থেকে ২০২৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে পূর্ণ মর্যাদা নিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে হবে এবং পরবর্তী রূপকল্প-২০৪১ একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে নিরলসভাবে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

লেখক : পুঁজিবাজার বিশ্লেষক