Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫,

বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল

আসাদুজ্জামান আজম ও রফিকুল ইসলাম

জানুয়ারি ৫, ২০২১, ০৮:২৫ পিএম


বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল

আধুনিক প্রযুক্তির ডিজিটাল বাংলাদেশের রঙিন স্বপ্ন দেখিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতা ধরে রাখার ধারাবাহিকতার একযুগে বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল। প্রযুক্তির বদৌলতে প্রতিটি ঘরে এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া। মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে হাতের মুঠোয় বিশ্ব। বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটে যখন গোটা বিশ্ব বিচ্ছিন্ন, তখন মানুষে-মানুষে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হয়েছিল ইন্টারনেট।

ডিজিটাল প্রযুক্তির কল্যাণে দেশের জনগণ করোনা মহামারিতেও সংযুক্ত থাকতে পেরেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, আদালত, সরবরাহব্যবস্থা এমনকি বিচারিক কাজ সচল রাখা সম্ভব হয়েছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ ও মোকাবিলায় সতর্ক বার্তা প্রচারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে প্রযুক্তি। দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলেও পৌঁছে গেছে ডিজিটাল সেবা। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসেই ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে সেবা নিচ্ছে প্রতিটি মানুষ।

আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে এগিয়ে নিতে ডিজিটাল বাংলাদেশের নেপথ্য কারিগর প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ‘ভিশন ২০২১’ ইশতেহার প্রণয়নে মুখ্য ভূমিকাও পালন করেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখা তিনিই নির্ধারণ করেন। এ রূপরেখা বাস্তবায়নে মা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারকে সহযোগিতা দিয়ে আসছেন তিনি।

গত ২০০৮ সালে নবম জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে বঙ্গবন্ধুকন্যা নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। দীর্ঘ ১২ বছর পর নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী গোটা দেশ এখন ডিজিটালাইজড। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ‘দিনবদলের সনদ’ শিরোনামে দলের নির্বাচনি ইশতেহার তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ঐ ইশতেহারে ‘রূপকল্প ২০২১’ শিরোনামে বাংলাদেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা তুলে ধরা হয়েছিল, যার অন্যতম ছিলো ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মধ্যে এটা বাস্তবায়নই ছিলো আওয়ামী লীগের প্রধান নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি। বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের গড়ে তোলা ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পাচ্ছেন রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক।

সূত্র মতে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০০৭ সালে ডেভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক বিশ্বের ২৫০ জন তরুণ বিশ্ব নেতৃত্বের মধ্যে একজন হিসেবে নির্বাচিত হন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ। এরপর বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী আইটি ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলা, ই-গভর্ন্যান্স প্রবর্তন ও বৃহৎ পরিসরে আইটি শিক্ষা চালুর মাধ্যমে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি বিশদ ধারণাপত্র ও কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন এ প্রযুক্তি বিশারদ। বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধান কারিগর হিসেবে কাজ করছেন।

করোনা সংকটে জনজীবন সহজ করেছে ইন্টারনেট। করোনায় সব যখন অচল, একমাত্র ইন্টারনেটের মাধ্যমে সচল ছিলো সবক্ষেত্রই। ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসাসেবা, যোগাযোগ— সবই হয়েছে প্রযুক্তির মাধ্যমে। প্রতিটি নাগরিক এখন প্রযুক্তির সুবিধা ভোগ করছে। প্রতিটি ইউনিয়নপর্যায়ে তথ্যকেন্দ্রের সব ধরনের সরকারি সুবিধা পাচ্ছে জনগণ। এখন আর কোনো তথ্যের জন্য নাগরিককে ঘুরতে হয় না। সরকারি সব দপ্তরের তথ্য ও সেবা পাওয়া যায় সংশ্লিষ্ট ওয়েব সাইটের মাধ্যমে। দেশে প্রায় সাড়ে ছয় হাজারের বেশি ডিজিটাল সেবাকেন্দ্র থেকে মাসে গড়ে প্রায় ৬০ লাখ নাগরিক সেবা নেন। এসব ডিজিটাল সেন্টারে প্রায় ১৩ হাজার উদ্যোক্তা কাজ করছেন। যাদের মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি নারী উদ্যোক্তা।

২০২১ সালের মধ্যেই আট হাজার ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ৫০০টি সেবা প্রায় ৭০ লাখ নাগরিকের কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। একইসঙ্গে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রায় ২৫ হাজার ডিজিটাল সেন্টার চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। দুর্গম দ্বীপ ও পাহাড়ি অঞ্চলে ডিজিটালসেবা নিশ্চিতের উদ্যোগ নিয়েছে আইসিটি মন্ত্রণালয়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডিজিটাল ইকোনমিক হাব করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে দেশের ১৫৫টি দুর্গম দ্বীপ ও পাহাড়ি অঞ্চলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে ইন্টারনেটসেবা পৌঁছে দেয়া হবে। ডিজিটাল সেন্টারে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগের পাশাপাশি এগুলোকে ডিজিটাল ইকোনমিক হাব হিসেবে রূপান্তর করা হবে বলে আইসিটি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, বর্তমান সরকার ১৪শর অধিক ডিজিটালসেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। কম সময়ে, কম খরচে এবং হয়রানি মুক্তভাবে বর্তমানে ৬০০০ ডিজিটাল ডেলিভারি সেন্টারের মাধ্যমে প্রতি মাসে ৬ মিলিয়ন মানুষ ডিজিটালসেবা পাচ্ছে। বিগত ১২ বছরে দেশের যথাযথ ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলার কারণে করোনা পরিস্থিতিতেও দেশের অর্থনীতি সচল রয়েছে এবং জিডিপি গ্রোথ ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, বিনোদন, সরবরাহব্যবস্থাসহ বিচারিককাজ সচল ছিলো।

মুজিববর্ষে আইসিটি বিভাগ ১০০টি উদ্যোগসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ‘আইডিয়াথন’ একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। দেশের প্রায় ৭০ ভাগ জনগোষ্ঠী যাদের বয়স ৩৫-এর নিচে। এই তরুণ প্রজন্মকে ‘লেবার বেইজড্ ইকোনোমি’ থেকে ‘ডিজিটাল ইকোনমিতে’ পরিবর্তন করতে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করবে।

মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানায়, দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকার ৭৬২ ইউনিয়ন ইন্টারনেট সংযোগ দিতে কানেক্টেড বাংলাদেশ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ১৭ হাজার ৯৫৩টি সরকারি দপ্তর ওয়াইফাই জোন তৈরি করে ৮৮৩ ভিডিও কনফারেন্স সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ৬৪ জেলা ও উপজেলায় তাৎক্ষণিকভাবে ভিডিও কনফারেন্স আয়োজন করা যাচ্ছে, করোনা সংকটে তা প্রমাণও হয়েছে।

আইটি শিক্ষার বিস্তার ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের নির্বাচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চার হাজার ১৭৬টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলাপর্যায়ে ভাষা প্রশিক্ষণ এবং ১০০টি শেখ রাসেল ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপিত শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবসমূহের স্থায়ীভাবে সাইবার সেন্টার প্রশিক্ষণকেন্দ্র ও আইসিটি ক্লাব হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে। ফলে ইউনিয়নপর্যায়ে পর্যাপ্ত স্থাপনের মাধ্যমে এলাকার তরুণ-তরুণীরা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছে।

২০২০ ও ২০২৩ মেয়াদে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে আরও ৫ হাজার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।  ইতোমধ্যে উদ্ভাবনী সংস্কৃতিকে বেগবান করতে ১৩৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে নাগরিক সমস্যা সমাধানযোগ্য করে তৈরি করা হচ্ছে এবং একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে ও ৯৬টি প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। দ্বীপ জেলা কক্সবাজারের মহেশখালীর মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নে সরকার ডিজিটাল আইল্যান্ড মহেশখালী প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে তিনটি ইউনিয়নের ২৫টি সরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। কম্পিউটার প্রশিক্ষণকেন্দ্র প্রকল্প হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সোলার প্যানেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনলাইন স্কুল সিস্টেমের মাধ্যমে ইংরেজি বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের হাইটেক আইটি-আইটিইএস শিল্পের বিকাশ ও বিজ্ঞান দেশ-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করেছে। যশোরে গড়ে তোলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি। দেশের প্রথম সর্ববৃহৎ হাইটেক পার্ক এটি। পার্কটিতে ৪.২৫ লাখ বর্গফুট ফ্লোর নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে চল্লিশটি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ সালে পার্কটি উদ্বোধন করেন। এক হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্পের আওতায় দুই লাখ ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটারের দশতলা মাল্টিপ্লাগ ভবন নির্মাণ এবং শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হয়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ থেকে গণভবন থেকে কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিলেটে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক সিলেটের অবকাঠামো নির্মাণকাজ চলছে। গত ২১ জানুয়ারি ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্কটি ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করেন।

প্রতিটি জেলায় শেখ রাসেল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার : ২০১৫ সালের ১৫ মার্চ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে আইটি খাতে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি বিভাগে এবং পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলায় হাইটেক পার্ক স্থাপনের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম পর্যায়ে ৩৮টি শেখ রাসেল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের লক্ষ্যে ২০১৭ সালে একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়। এসব ইনকিউবেশন সেন্টার ৫০ হাজার জনের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১১টি জেলায় সেন্টার স্থাপনের লক্ষ্যে আরও একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।

দেশের ১২টি জেলা আইটি পার্ক স্থাপনের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়। জাতীয় পর্যায়ে সর্বস্তরের জনগণের জন্য মোবাইলফোন রিত্তিকের ব্রেক বাস্তবায়ন কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস ৯৯৯ চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। পরীক্ষামূলকভাবে চালু অস্থায়ী সার্ভিস মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে। ৯৯৯ ইমার্জেন্সি সার্ভিস চালুর মাধ্যমে দেশের সব নাগরিকের জন্য জরুরি পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এম্বুলেন্সসেবা প্রদান করা হচ্ছে । ঘরে বসেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সেবা পেতে পারে সেজন্য জাতীয় তথ্য বাতায়ন হেল্পডেক্স ৩৩৩ চালু করা হয়েছে।

দেশব্যাপী কৃষকের দোরগোড়ায় দ্রুত ও সহজে কার্যকর কৃষি সমপ্রসারণের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম কৃষি বাতায়ন এবং কৃষকবন্ধু সেবায় ৩৩৩১ কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিবছর দেশে প্রায় ২২ লাখ নামজারি মামলা হয়। এসব মামলা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পরিচালনার জন্য ই-নামজারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে জনগণের সময়, খরচ ও যাতায়াতের পাশাপাশি এ খাতের দুর্নীতি কমিয়ে আনা যাবে বলে মনে করছে সরকার। ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনিয়ন ও তথ্যসেবাকেন্দ্র ইউআইএসসি উদ্বোধন করেন। জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে ৬ হাজার ৯৯০ ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়। এসব কেন্দ্র থেকে ২৭০ ধরনের সরকারি-বেসরকারি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। প্রাথমিকপর্যায়ে ১০১৩টি বিদ্যুৎহীন ইউনিয়নে সৌরবিদ্যুৎ সুবিধা দিয়ে কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। যাত্রার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সব কেন্দ্রে ৫৪ কোটির বেশি সেবা প্রদান করা হয়েছে, গড়ে প্রতি মাসে ৭০ লাখ নাগরিক বিভিন্ন ধরনের সেবা নিয়ে থাকেন।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে গত ১২ বছরে অর্জিত স্বীকৃতি ও সম্মাননা পেয়েছে বাংলাদেশ। হংকংয়ে আন্তর্জাতিক ব্ল্যাক সাইন অলিম্পিয়াড ২০২০-এর প্রথম আয়োজনে নয়টি পুরস্কারের মধ্যে বাংলাদেশি তরুণরা দুটি পুরস্কার লাভ করে। আগামী বছর বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড আয়োজনের দায়িত্ব দেয়া হয়। দেশব্যাপী ই-মিউটেশন উদ্যোগ বাস্তবায়নের স্বীকৃতি হিসেবে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে ইউনাইটেড নেশন্স পাবলিক সার্ভিস ২০২০ পেয়েছে। আইসিটি ডিভিশনের কারিগরি সহযোগিতা এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় ও ভূমি সংস্কার বোর্ডের সহায়তায় ই-মিউটেশন বা ই-নামজারি প্রকল্প সারা দেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।  তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ জীবনমান উন্নয়নের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশের ৬টি প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল আইসিটি এক্সেলেন্স আওয়ার্ড ২০২০ পেয়েছে।

ডিজিটাল খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা বিশ্বময়। সজীব ওয়াজেদ জয়ের কর্মের গন্ডি বাংলাদেশ পেরিয়ে আজ বিশ্বব্যাপী। কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ তিনি পেয়েছেন আন্তর্জাতিক পুরস্কার। বাংলাদেশের পাশাপাশি প্রযুক্তি বিশারদ হিসেবে বিশ্বমণ্ডলেও তিনি সমাদৃত।

সজীব ওয়াজেদ জয় ভারতের নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ স্কুল, ব্যাঙ্গালোর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আর্লিংটনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ব্যাচেলর অব সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুল অব গভর্নমেন্ট থেকে লোকপ্রশাসনের ওপর মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম ২০১৭ সালে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘ইয়াং গ্লোবাল লিডার’ হিসেবে নির্বাচন করে। জয় ২০১৬ সালে জাতিসংঘের ‘ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ফর আইসিটি’ লাভ করেন।

আমারসংবাদ/জেআই