Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

টিকার অ্যাপের ব্যয় নিয়ে বিভ্রান্তি!

মাহমুদুল হাসান

জানুয়ারি ১৩, ২০২১, ০৮:৫৫ পিএম


টিকার অ্যাপের ব্যয় নিয়ে বিভ্রান্তি!

আলোচনার বিষয়বস্তু এখন করোনার টিকা। কখন আসবে এই প্রতিষেধক, কবে থেকে শুরু হবে প্রয়োগ? এ নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। চায়ের আড্ডা থেকে সরকারি দপ্তর— সবখানেই চলছে টিকার কথোপকথন। সরকার আশ্বস্ত করেছে— এ মাসেই আসবে টিকার প্রথম চালান।

এরপর সারা দেশে প্রয়োগ শুরু হবে আগামী মাসের শুরুতেই। করোনার টিকা বিতরণ ব্যবস্থাপনা সহজ করতে সরকার ডিজিটাল প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সহায়তায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম এবং সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি ‘সুরক্ষা প্ল্যাটফরম নামের একটি অ্যাপ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। যার মাধ্যমে ছবিযুক্ত জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ব্যবহার করে আঠারো বছরের ঊর্ধ্বের নারী-পুরুষ প্রত্যেকে টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। এরপর আবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে ধাপে ধাপে সবাইকে টিকার আওতায় আনা হবে। এক্ষেত্রে গর্ভবতী নারী ও আঠারো বছরের কম বয়সিরা টিকা প্রয়োগের বাইরে থাকবে। এ সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। প্রায় পাঁচ কোটির বেশি মানুষ টিকা প্রয়োগের বাইরে থাকবে। কারণ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজোনেকার টিকা আঠারো বছরের কম বয়সি ও গর্ভবতী নারীদের ওপর প্রয়োগ করা হয়নি।

এসব আলোচনার মধ্যেই সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর নিয়ে চারদিকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। প্রতিবেদনটিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমানের উদ্বৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, করোনার টিকা বিতরণ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক অ্যাপ সুরক্ষা প্লাটফর্মটি তৈরিতে প্রায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এতেই বেধেছে বিপত্তি।জনমনে বিভ্রান্তি কাটাতে গত মঙ্গলবার আইসিটি বিভাগ একটি প্রতিবাদ পাঠিয়েছে। তারা বলেছে, এটি মনগড়া অসত্য একটি সংবাদ। একইদিনে আরেকটি প্রতিবাদলিপি দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস।

তাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিবন্ধন অ্যাপটি সরকারের আইসিটি বিভাগ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিজস্ব উদ্যোগে, নিজস্ব জনবলের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে। যেখানে অর্থের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। অ্যাপ তৈরিতে ৯০ কোটি টাকার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। অ্যাপটি পরিচালনার জন্য হোস্টিং খরচ, এনআইডি ভেরিফিকেশন এবং মাস্কিংসহ এসএমএম প্রেরণে এক বছরে আনুমানিক ৯০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়। তবে এনআইডি ভেরিফিকেশন ও এসএমএম সরকারের অন্য বিভাগ পরিচালনা করায় ব্যয় সংকোচনের সুযোগ রয়েছে যে বিষয়ে আলোচনা চলমান আছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের লাইন ডাইরেক্টর মিজানুর রহমান বলেন, প্রকৃতপক্ষে সংবাদটি ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। কোভিড-১৯ টিকা নিবন্ধন অ্যাপ তৈরিতে নয়, তা পরিচালনার জন্য প্রাথমিকভাবে এক বছরে ৯০ কোটি টাকার মতো খরচ হতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, অ্যাপটি সরকারের আরেকটি দপ্তর তৈরি করে দেবে। এখানে অর্থ ব্যয়ের কোনো প্রশ্নই আসে না। এ নিয়ে তথ্যের ভুল উপস্থাপন হয়েছে। আমরা জনমনের বিভ্রান্তি কাটাতে একটি প্রতিবাদলিপি ছেপেছি।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ভ্যাকসিনবিষয়ক অ্যাপ তৈরিতে এক টাকাও খরচ হচ্ছে না। করোনা টিকা গ্রহীতাদের জন্য ডাটাবেজ তৈরিতে যে অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে তার জন্য টাকা খরচের খবরটি সঠিক নয়। আইসিটি বিভাগে একটি ডাটাবেজ সফটওয়্যার আগে থেকেই তৈরি আছে। সেই ডাটাবেজের ওপর ‘সুরক্ষা প্ল্যাটফর্ম’ তৈরি করা হবে। ওটাই হবে সেই অ্যাপ। আইসিটি বিভাগে কর্মরত প্রোগ্রামাররাই (ইনহাউস প্রোগ্রামার) অ্যাপটি তৈরি করবেন। নিজেদের জনবল, অফিস, রিসোর্স ব্যবহার করে কাজটি করা হবে। ফলে এর জন্য কোনো টাকাই খরচ হবে না। কারণ কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অ্যাপটি তৈরির জন্য আইসিটি বিভাগ থেকে কার্যাদেশ দেয়া হয়নি। একটি শুভ উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করতে এমন সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।

আমারসংবাদ/জেআই