Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

প্রশ্নবিদ্ধ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি!

জানুয়ারি ২৩, ২০২১, ০৭:০৫ পিএম


প্রশ্নবিদ্ধ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি!
  • ‘ভারতে আসামিকে রিমান্ডে নিলে আইনজীবী রাখার সুযোগ আছে। সেজন্য তারা সিআরপিসি সংশোধন করেছে। হাইকোর্ট থেকে আইন সংশোধনের কথা বললে নানান প্রতিক্রিয়া আসে’ : হাইকোর্ট
  • রাজনৈতিক মামলায় জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় বেশি হয়। এ কাজে পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে- অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

মো. আজম হোসেন। ঢাকার হাজারীবাগ থানার বটতলা মাজার রোডের বাসিন্দা। পঞ্চম শ্রেণিপড়ুয়া ছাত্র ছেলে আবু সাঈদ অপহরণ হয়। পরে হত্যার অভিযোগও আনা হয়। ২০১৪ সালের এপ্রিলে এ বিষয়ে একটি মামলাও দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। থানার মধ্যেই দুজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও আদায় করা হয়। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেয়ার পর পুলিশ গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। সেটার ভিত্তিতে শুরু হয় বিচার। বিচারের শেষ পর্যায়ে শিশুটি উদ্ধার হয়। জানা যায়, আবু সাঈদ অপহূত হয়নি। তাকে লুকিয়ে রেখে মিথ্যা মামলা করা হয়েছিল। ওই মামলার আসামিরা জানান, থানায় আটকে অমানুষিক নির্যাতনের পর তারা পুলিশের কথামতো স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য হন। এমন আরেক ঘটনা ঘটে নারায়ণগঞ্জে। যেটা দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনা হয়। শহরের দেওভোগ পাক্কা রোড এলাকার ১৫ বছরের স্কুলছাত্রী জিসা মণি গত ৪ জুলাই নিখোঁজ হয়। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান না মেলায় গত ৬ আগস্ট স্কুলছাত্রীর বাবা অপহরণ মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বন্দর উপজেলার বুরুন্ডি এলাকার আব্দুল্লাহ (২২) এবং তার বন্ধু রকিব (১৯) ও খলিল মাঝিকে (৩৬)। ওইদিনই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানায়, আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় এ ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দিতে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার কথা স্বীকার করে। কিন্তু ঘটনার ৫১ দিন পর সেই স্কুলছাত্রীকে খুঁজে পাওয়া যায়। পরে তাকে থানায় হাজির করা হয়। সঙ্গে ছিলেন কিশোরীর স্বামীও। তাকে জীবিত অবস্থায় পাওয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পুলিশের তদন্ত এবং আদালতে দেয়া জবানবন্দিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। কিশোরীকে অপহরণ ও ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে তিন আসামির কাছ থেকে জোরপূর্বক জবানবন্দি আদায় এবং ঘুষ গ্রহণের কারণে তদন্ত কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

শুধু হাজারিবাগ ও নারায়ণগঞ্জই নয়, দেশব্যাপী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায়ের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো ঘটনা অসংখ্য ঘটছে।  গ্রেপ্তার করা হচ্ছে ঘটনায় জড়িত নয় এমন ব্যক্তিদের। আবার তাদের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতেও বাধ্য করা হচ্ছে। ফলে বেড়েছে জবানবন্দি প্রত্যাহারের সংখ্যাও। আর গণমাধ্যমে উঠে আসছে আসামির আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন। সেই সাথে উচ্চ আদালতও মাঝেমধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতির ব্যাখ্যা চান। তবুও থামছে না জোর করে জবানবন্দি আদায়ের ঘটনা। প্রায়ই বিচার বিভাগীয় তদন্তে বেরিয়ে আসছে পুলিশের প্রভাব খাটানোর তথ্য। এ ঘটনায় হাইকোর্ট ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার ক্ষেত্রে ১৫ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয় হাইকোর্ট। ২০১৬ সালের ২৫ মে দেয়া রায়ে হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখে আপিল বিভাগ। তবে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের সেই ১৫ দফা নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। উপেক্ষিতই রয়ে গেছে উচ্চ আদালতের ১৫ দফা নির্দেশনা।

এমন অবস্থায় আইনজ্ঞরা মনে করেন, ধারাবাহিকভাবে এমন ঘটনা ঘটতে থাকায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় নেয়া এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দায় এড়াতে পারেন না সংশ্লিষ্ট কেউই। এ অবস্থায় তারা স্বীকারোক্তি আদায়ের সময় আইনজীবী উপস্থিত থাকার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পদ্ধতি-সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট আইনের ধারা সংশোধন হলেই নির্যাতন করে জবানবন্দি নেয়ার পথ বন্ধ হবে। তবে আইন সংশোধন হওয়ার আগ পর্যন্ত সর্বোচ্চ আদালতের রায় মানা বাধ্যতামূলক। এ দুটি ঘটনা ছাড়া এমন আরও বেশ কয়েকটি ঘটনা রয়েছে যেখানে ঘটনায় জড়িত নয়, এমন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে বা করছে। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বীকারোক্তির প্রধান কাজটিই হলো স্বেচ্ছায় নিজের দোষ স্বীকার করা, কেউ কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগ করেনি বা করবে না। কিন্তু দেশে এমন কোনো স্বীকারোক্তি পাওয়া যাবে না, যেটাতে চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। স্বীকারোক্তি মানেই হলো তাকে মারপিট করে কোর্টে পাঠিয়ে স্বীকার করানো যে, আমি এটা করেছি। বিষয়টা এমন যে দোষ স্বীকার করানোর জন্য নির্যাতন করা হচ্ছে, যেনো মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে (আইও) অন্য কোনো দিকে যাওয়া না লাগে। এটা থেকে বেরিয়ে না আসতে পারলে ভুক্তভোগীর সংখ্যা দিনদিন বাড়তেই থাকবে বলে মত দেয় তারা।

এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘটনা মীমাংসার কৃতিত্ব নেয়ার জন্য অথবা প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে ব্যর্থতা ঢাকার জন্য তদন্তকারীরা নানা কার্যকলাপ ঘটিয়ে থাকেন, তারই অংশ জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়, যেটাকে ১৬১ বা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি বলে চালিয়ে দেয়া হয়। এতে যে অনেক নিরপরাধ ফেঁসে যান, সেটাও ভাবেন না তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আইনের অপব্যবহারের ধারাবাহিকতার কুফলও এ ধরনের ঘটনার পেছনে দায়ী।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের মতে, কোনো আসামিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ ১৬১ ধারায় যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়, সেটার কোনো গুরুত্ব নেই। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজনই নেই। ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে আদালতে যে জবানবন্দি দেয়া হয়ে থাকে, সেটার গুরুত্ব রয়েছে। অপরাধ প্রমাণে যথাযথ সাক্ষী, মেডিকেল সার্টিফিকেট, অভিযোগপত্র, অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত এবং আইনি যুক্তিতর্কের বিষয় জড়িত। কিন্তু কিছু চাঞ্চল্যকর মামলা প্রমাণে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এই জবানবন্দি সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী প্রমাণ হিসেবে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রহণযোগ্য হয়। কিন্তু সামপ্রতিককালের কিছু ঘটনায় ১৬১ ও ১৬৪ ধারার জবানবন্দি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় হাইকোর্টের উদ্বেগ প্রকাশ : নারায়ণগঞ্জে মৃত স্কুলছাত্রীর জীবিত ফিরে আসার ঘটনাকে পুরো পুলিশ বাহিনীর গায়ে মাখানোর দরকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এ সময় আদালত বলেন, ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে বিচ্ছিন্নভাবেই দেখা উচিত। যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে সেটা থেকে কীভাবে উত্তরণ করা যায়, সেটা পুলিশ বাহিনীর ভেবে দেখা উচিত।’ হাইকোর্ট আরও বলেন, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে কটুকথা বলা হলে সেটা অপরাধ হিসেবে দেখা হয়।’ নারায়ণগঞ্জে মৃত স্কুলছাত্রীর জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে শুনানিতে ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।  আদালত বলেন, ‘জবানবন্দিতে আসামিরা যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা সত্য নয়। ভিকটিমকে মেরে নদীতে ফেলার যে জবানবন্দি দেয়া হয়েছে তাতে আসামিদের স্বার্থ কী? এদেশের মানুষ ক্ষুধিরামের ফাঁসি দেখতে চেয়েছিল। এজন্য কি সবাই ফাঁসিতে যেতে চায়? এ বিষয়ে আমাদের একটি সিদ্ধান্তে আসতে হবে।’ হাইকোর্ট বলেন, ‘আমরা বিচারপতি, আমরা এই মাটির সন্তান। আমরা সব কথা কোর্টে বলতে পারি না। এখানে শুনানির সময় সাংবাদিকরাও থাকেন। ফাঁসি হবে জেনেও আসামিরা কি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিয়েছেন? জবানবন্দিতে আসামিরা যদি মেয়েটিকে হত্যা করার কথা বলে তাহলে কি শখ করে বলেছেন? এটা দুর্ভাগ্যজনক। অভাগা তো এদেশের জনগণ। অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, ‘ভারতে কোনো আসামিকে রিমান্ডে নেয়া হলে সেখানে আইনজীবী রাখার সুযোগ আছে। সেজন্য তারা সিআরপিসি সংশোধন করেছে। আমাদের তো কোর্ট থেকে আইন সংশোধনের কথা বললে নানান প্রতিক্রিয়া হয়।’

রিভিশন মামলার আইনজীবী মো. শিশির মনির বলেন, ‘ব্লাস্ট বনাম রাষ্ট্র মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে যে রিভিউ চাওয়া হয়েছে সেখানে রিমান্ডে আইনজীবী রাখার বিষয়ে কোনো বিরোধিতা করা হয়নি।’ তাহলে কেন জবানবন্দি গ্রহণ করার সময় আইনজীবী রাখা হয় না। স্বচ্ছতা বজায় রাখতে আইনজীবী রাখা বাঞ্ছনীয় বলে মনে করেন এ আইনজীবী।

এ বিষয়ে সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে নিরীহ ব্যক্তিকে দিয়ে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় সম্ভব নয়।’ তিনি মনে করেন যে, এ ধরনের ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিলে এভাবে ভিন্ন ব্যক্তিকে দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায়ের প্রবণতা কমবে।

এ বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) চেয়্যারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, ফৌজদারি আইনে স্বীকারোক্তির যে বিষয়টা আছে, অপরাধীদের স্বীকারোক্তির বেসিসে সাজাটা নিশ্চিত করা যায়। তবে আমরা দেখেছি যে, প্রথম এটি খুব সামান্য ছিলো, পুলিশ এটার অপব্যবহার করতো কম। সেটার হার ছিলো ২ থেকে ৫ শতাংশ। কিন্তু রাজনৈতিক সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার পর থেকে যখন প্রতিপক্ষকে বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমায় জড়ানো শুরু হয়, ওই সময় থেকে কিন্তু স্বীকারোক্তির প্রচলনটাও বেশি হতে থাকে। অর্থাৎ পুলিশকে এই স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, এখন পুলিশ তাদের সুবিধা মতো মামলায় স্বীকারোক্তির হাতিয়ারটা খুব করে ব্যবহার করছে। মামলার আধিকাংশই বানানো, (এফআইআর) কম্পিউটারে টাইপ করা। যেহেতু এটা এফআইআর, সেহেতু আদালত এগুলোকে মামলা হিসেবেই ধরে নিচ্ছেন। আর আগে পুলিশকে হাতিয়ার হিসেবে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। এখন সেই হাতিয়ারটা অন্য কাজে ব্যবহার হচ্ছে।’

জবানবন্দি নেয়ার আগে ম্যাজিস্ট্রেটের করণীয় : ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আগে ম্যাজিস্ট্রেটের করণীয় বিষয়গুলো— ক. স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি কোনো পুলিশের সামনে রেকর্ড করা যাবে না, এটা অবশ্যই শুধু ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে এবং তার তত্ত্বাবধানে রেকর্ড হবে, এমনকি এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার সময় সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কক্ষেও কোনো পুলিশ উপস্থিত থাকতে পারবে না। খ. ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ (৩) ধারা মোতাবেক, সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আগে তিনি অবশ্যই জবানবন্দিদাতাকে এটা পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করবেন যে, এই জবানবন্দি প্রদান করতে তিনি কোনোভাবে বাধ্য নন এবং তাকে এ-ও পরিষ্কার করে বলতে হবে যে, যদি এ ধরনের কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন, তাহলে এটা তার বিরুদ্ধেও ব্যবহূত হতে পারে। গ. সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট জবানবন্দিদাতাকে প্রশ্ন করার মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে সন্তুষ্ট হতে হবে যে, এই জবানবন্দিদাতা সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় এবং কোনো প্রকার প্রভাবে প্রভাবিত না হয়ে এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করছেন। ঘ. ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড ও স্বাক্ষর করার যে পদ্ধতি বলা হয়েছে, সে মোতাবেক সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট জবানবন্দিদাতার স্বাক্ষর নেবেন এবং স্বাক্ষর নেয়ার আগে তিনি কী জবানবন্দি দিয়েছেন, তা তাকে অবশ্যই পড়ে শোনাবেন। ঙ. জবানবন্দি স্বেচ্ছাপ্রণোদিতভাবে প্রদান করা হয়েছে এবং তিনি জবানবন্দি দেয়ার ফলাফল সম্পর্কে ব্যক্তিটিকে অবহিত করেছেন কি-না  উল্লেখ করে একটি মেমোরেন্ডাম লিখবেন।

আমারসংবাদ/জেআই