Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

করোনা ও শিক্ষা ব্যবস্থা

অধ্যাপক আয়েশা পারভীন চৌধুরী

জানুয়ারি ২৩, ২০২১, ০৭:২৫ পিএম


করোনা ও শিক্ষা ব্যবস্থা

করোনা একটি বৈশ্বিক সমস্যা। চীনের অঙ্গরাজ্য উহানের একটি বাজার সংলগ্ন জায়গায় এই ভাইরাসটির জন্ম। কখন, কোথায়, কীভাবে ও কার মাধ্যমে করোনা ছড়িয়েছে কেউ জানে না। শুধু জানে চীনের উহান প্রদেশে করোনার বিস্তার শুরু হয়। সেই থেকে শুরু। এখন এটি বিশ্বব্যাপী একটি সমস্যায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন মৃত্যুর সংবাদে সবার মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব। জ্ঞান ও বিবেকের বিবেচনায় সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালা মানুষকে শ্রেষ্টত্ব দান করেছেন। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় মানুষ তার মেধার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। মানবের কল্যাণে শিক্ষা গবেষণার সুদৃঢ় প্রভাব প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হচ্ছে। অনেক সীমাহীন অসাধ্য সম্ভব করেছে। তবু কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষ একেবারে অসহায়। করোনার ভ্যাকসিন তৈরির জন্য উন্নত দেশগুলো যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। হয়তো এক সময় এই অসাধ্য চেষ্টার একটি সুন্দর সুরাহা হবে। আবার মানুষ নতুন করে বাঁচার চেষ্টা করবে।

করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে অবগত হতে বেশিদিন সময় লাগেনি। চীনের উহান প্রদেশে শুরু হলেও এক-দু মাসের মধ্যে বিশ্বের বিভন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষা-দীক্ষা-জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত দেশগুলো যথাক্রমে করোনা ভাইরাসকে পাত্তা দেয়নি। এমনকি মাস্ক পরা নিয়েও ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করতে থাকে। করমর্দনের নতুন পদ্ধতি ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে রসিকতা করতে থাকে। অর্থাৎ হাতে হাত না মিলিয়ে মুঠো বন্ধ অবস্থায় হাত স্পর্শ করে। কোলাকুলি থেকে বিরত থাকতে শুরু করে। আবার অনেক দেশের নিয়ম অনুযায়ী মুখে মুখ লাগিয়ে স্বাগত জানানো হয়। অভ্যর্থনা ও আতিথেয়তায় করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে ব্যতিক্রম দেখা যায়।

এখন কেউ আর অতিথি শব্দটা শুনলে খুশি হয় না। বরং আতঙ্কে থাকে। আবার কেউ কারো বাসায় বেড়াতে যেতেও ভয় পায়। মা-বাবা-ভাই-বোন— সবাই যে যার যার ঘরে অবস্থান করে। রোগ-শোক-বিপদ-আপদ, আনন্দ-বেদনায় কেউ সরাসরি আর কারো কাছে ছুটে যায় না। সব খবরা-খবর নেয়া হয় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। আপন পর চেনা-জানা-দেখা-অদেখা মানুষের মৃত্যু সংবাদ পড়তে পড়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটিকে শোকবার্তার বাহন মনে হয়। ফোন বেজে উঠলেই ভয় পেয়ে যায়। তাছাড়া বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে প্রতিনিয়ত প্রচারিত হচ্ছে মৃত্যু সংবাদ। কয়েকটি দেশ যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়।

করোনার ভয়াবহতা যখন চারদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখন আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনরা বেড়ানোর উদ্দেশ্যে দেশে ফেরে। বিশেষ করে ইতালী, স্পেন, ইংল্যান্ড, চিন ইত্যাদি দেশের প্রবাসীরা দলে দলে এদেশে ফিরতে থাকে। কিন্তু সঠিক নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে এই প্রবাসীরা যে যার জায়গায় অবস্থান করতে থাকে। ফলে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটতে থাকে। এমনকি জেনে-শুনে অনেক প্রবাসী করোনা উপসর্গ লুকাতে থাকে।

আমরা স্বীকার করি এই প্রবাসীদের পাঠনো রেমিটেন্স আমাদের জন্য বিরাট সম্পদ। আমাদের দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি এই রেমিটেন্সের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু মৃত্যুঘাতী করোনা ভাইরাস নিয়ে ছোটাছুটির ফলে এই রোগ দ্রুত ছড়াতে থাকে। তাছাড়া শত প্রচার-প্রচারণায়ও আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনাগ্রহী ছিলো। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষরা জীবন ও জীবিকার জন্য ঘর থেকে প্রতিনিয়ত বের হয়েছে। যদিও তাদের জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সাহায্য ও অনুদানের ব্যবস্থা আছে তবুও তার পরিমাণ ছিলো নগন্য।

বিশাল এ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সুন্দর ও সঠিক নিয়মে ত্রাণ বিতরণে অনেক অনিয়ম ছিলো। এখানে উল্লেখ করতে হয়, সরকারের বরাদ্দকৃত অনুদান ও সাহায্যের অধিকাংশ চেয়ারম্যান, মেম্বার, ওয়ার্ড কমিশনার ও অন্যদের কাছে চলে যায়। বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানা যায়, বস্তায় বস্তায় চাল, আলু, ডাল ইত্যাদি খাদ্য দ্রব্যগুলো তাদের আড়তে পাওয়া যায়। মানবিক দিক বিবেচনায় অনেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তাতে সাধারণ দরিদ্রদের অনেকেই উপকৃত হন।

সারা বিশ্বে এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাত চলছে। এ অবস্থায় আমাদের সমাজের কিছু কিছু মানুষ বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল, পর্যটন এলাকা ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যারা জীবন ও জীবিকার জন্য রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। কিন্তু বিলাসিতা ও আনন্দের জন্য যারা এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা শুধু করোনা ভাইরাসের আক্রমণ প্রতিরোধে বাধার সৃষ্টি করছে না বরং প্রশাসনকে বিপদের সম্মুখীন করছে। করোনার ভয়াবহতার কথা বিবেচনা ও দেশকে নিরাপদে রাখতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভার্চুয়াল মিটিংয়ের মাধ্যমে তাদের প্রয়োজনীয় কাজগুলো সম্পন্ন করছে।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজেই ভার্চুয়াল মিটিংয়ের মাধ্যমে সারা দেশের প্রয়োজনীয় কাজগুলো করে চলছেন। এক দেশ আরেক দেশের সাথে ভার্চুয়াল যোগাযোগ অব্যাহত রাখছে। ভয় নয়, সচেতনতার মাধ্যমে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণকে আমাদের অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। মানুষ সবকিছু নিজের মতো করে নিতে অভ্যস্ত। জীবন বাঁচানোর জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানাই শ্রেয়।

করোনার প্রাদুর্ভাবের সাথে সাথে দেশে ছিনতাই, রাহাজানি, ধর্ষণ, খুন-খারাবি ইত্যাদির প্রকোপ কমে যায়। পরিত্র রমজান মাসে তেমন কোনো ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি। রমজানের শেষের দিকে বিভিন্ন শপিং সেন্টার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো স্বল্প পরিসরে খোলা শুরু করে। বিশেষ করে পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। চাকরি হারানোর ভয়ে দলে দলে পোশাক শ্রমিকরা একবার শহরের দিকে আসে আবার গ্রামে চলে যায়। এভাবে মালিক ও কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তহীনতায় তৃণমূল পর্যায়ে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন খাবার দোকানগুলো প্রথমে বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে জীবন ও জীবিকার জন্য খোলা শুরু করে। জেলা ও বিভাগ পর্যায়ে যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও ধাপে ধাপে সীমিত পরিসরে যানবাহন চলাচল শুরু করে।

করোনার ভয়াবহতার দিক বিবেচনা করে গত ১৬/০৩/২০ তারিখ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১৭ মার্চ ক্ষুদ্র পরিসরে পালিত হলেও ছাত্র-ছাত্রীদের বিরত রাখা হয়। এরপর বিভিন্ন পর্যায়ে অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করা হয়। পরবর্তীতে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো খণ্ড খণ্ডভাবে খোলার ব্যবস্থা করা হয়।

এপ্রিলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা করোনার কারণে পেছানো হয়। পরবর্তীতে অনেক বার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে। কিন্তু কোমলমতী শিক্ষার্থী ও আগামী প্রজন্মের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে এখনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ও ৫ম, ৮ম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করা হয়। ২০২১ সালের অনুষ্ঠিত মাধ্যমিক পর্যায়ের চূড়ান্ত পরীক্ষার ব্যাপারটি অনিশ্চিত।

সরকার অনলাইন ক্লাসের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। তাছাড়া সরকারি টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের শিক্ষকরা অনলাইন ক্লাস নিচ্ছেন। প্রথমে স্কুল ও কলেজপর্যায়ে অনলাইন ক্লাস শুরু হলেও বর্তমানে স্লাতক ও স্নাতকোত্তরপর্যায়ে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ক্লাস নিচ্ছেন। অনলাইন ক্লাসের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ শিক্ষক রেকর্ডিং করে ক্লাস নেয়। জুম ও সরাসরি ক্লাস নেয়ার সুযোগ কম হলেও দিন দিন শিক্ষক ও শিক্ষর্থীদের কাছে অনলাইন ক্লাসের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিম্ন, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তান। তাদের পক্ষে অনলাইন ক্লাসের তেমন সুযোগ নেই। কারণ অনেক শিক্ষার্থীর কাছে মোবাইল ফোন নেই। আবার অনেক শিক্ষার্থীর মোবাইলের সুযোগ থাকলেও নেট কানেকশনের জন্য অনলাইন ক্লাস করা সম্ভব হয় না। আবার দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট কানেকশন থাকে না। মোবাইল, ইন্টারনেট কানেকশন ও ডাটা কেনার অভাবে আবার অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। অনলাইন ক্লাসের ফলে শিক্ষকও শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিশেজ্ঞরা তাদের মতামত জানিয়েছেন।

অনলাইন ক্লাসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সরাসরি যোগাযোগ না থাকলে একজন আরেক জনের সাথে পরিচিত হচ্ছে। লেখাপড়া বিষয়ে সমস্যাগুলো অভিহত হচ্ছে। যারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আছে তাদের বেতন ও অন্যান্য ভাতাদি নিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ বিষয়েও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে। বিশেষ করে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অনেকে নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না। ফলে অনেক শিক্ষককে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে যেখানে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে সেখানে গৃহশিক্ষককেও বিরত রাখা হয়েছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের উপক্রম হয়েছে। অনেক শিক্ষক জীবন ও জীবিকার জন্য ছোট-খাটো পেশায় নিয়োজিত হয়েছেন। মাঝে মাঝে সরকার কিছু অনুদান ও ভাতা দিলেও বাস্তবতার ভিত্তিতে এর পরিমাণ খুবই নগণ্য।

এক্ষেত্রে উল্লেখ করতে হয়, আর্থিক দুর্বল ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের কথা চিন্তা করে সরকার একটি নির্দিষ্ট অংশের টাকা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু দেশের শিক্ষার্থীর অনুপাতে সরকার কর্তৃক দেয়া টাকার পরিমাণ খুবই নগন্য। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সাথে সাথে অনেক শিক্ষার্থীকে গ্রামের বাড়ি চলে যেতে হয়। অনেকে শহরের হোস্টেলে থেকে ও অন্যান্য উপায়ে লেখাপড়া চালাতো। আবার অনেকে পার্ট টাইম চাকরি করতো। সেই সুযোগটিও অনেক শিক্ষার্থীকে হারাতে হয়। করোনার কারণে আর্থিক সংকটে অনেক পরিবার গ্রামে চলে যায়। নিয়মিত বাড়িভাড়া পরিশোধসহ অন্যান্য আর্থিক সমস্যার জন্য গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। ফলে শহারঞ্চলে বেড়ে ওঠা অনেক শিক্ষার্থীকে গ্রামীণ জীবনযাত্রায় নিজেকে নতুন করে মানিয়ে নিতে হয়। বিশেষ করে মেয়ে শিক্ষার্থীদের রান্নার পাশাপাশি অন্যান্য কাজে অভ্যস্ত হতে হয়। সামাজিক নিরাপত্তা ও আর্থিক সমস্যায় পড়ে অনেক অভিভাবক তাদের মেয়েদের বাল্যবিবাহ দিতে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। কিন্তু হিতে বিপরীত হচ্ছে। বাল্যবিবাহ ও যৌতুক দেয়া অপরাধ জেনেও অভিভাবকরা মেয়েদের বিয়ে দিচ্ছেন। ছেলেরাও যৌতুকের লোভে অসময়ে বিয়ে করছে। ফলে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

করোনা আক্রান্ত থেকে মুক্ত থাকার অন্যতম উপায় হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। অর্থাৎ নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে নিত্যদিনের কাজ সম্পাদন করতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রথমদিকে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছিল দিন দিন সে অভ্যাসটি কমে যাচ্ছে। করোনার ভয়াবহতা জানা সত্ত্বেও স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা অনেক কমেছে। জীবন ও জীবিকার তাগিদে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো প্রথম থেকে যেন বিধিনিষেধ মানতে রাজি ছিলো না। প্রশাসনের শত নজরদারিতেও তেমন কার্যকর ফলাফল পাওয়া যায়নি। যারা কিছুটা মেনে চলছিল তারাও কিছু দিন পর থেকেই অনিহা প্রকাশ করছে। রাস্তাঘাটে চলাচল করলে কোনোভাবেই বোঝার উপায় নাই যে, এদেশের মানুষের মাঝে করোনার আতঙ্ক আছে। যারা শুরু থেকে মেনেছে তারা এখনো কিছুটা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন। বিশ্ব এখন নিরাপদ করোনা ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষায়। করোনামুক্ত বিশ্ব গড়তে ভ্যাকসিনের পাশাপাশি সকলের সচেতনতা কাম্য।

লেখক : কলামিস্ট ও অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, ডা. ফজলুল-হাজেরা ডিগ্রি কলেজ, হালিশহর, চট্টগ্রাম

আমারসংবাদ/জেআই