Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

হল খোলার দাবিতে অনড় শিক্ষার্থীরা

মোতাহার হোসেন, ঢাবি

ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১, ০৭:০৫ পিএম


হল খোলার দাবিতে অনড় শিক্ষার্থীরা

করোনা ভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঈদুল ফিতরের পর ২৪ মে থেকে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ঘোষণা নিয়ে গতকালও দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। শিক্ষামন্ত্রীর এমন সিন্ধান্তে সাড়া দিয়ে ইতোমধ্যে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হল বন্ধ ও একাডেমিক পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা দিলেও সে ঘোষণা মানছে না অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষামন্ত্রীর বক্তেব্যে সাড়া দিয়ে ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় তাদের আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং তাদের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় চলমান পরীক্ষা ও রুটিন স্থগিত করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, আগামী ১৭ মার্চের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খোলা হবে না  এবং ২৪ মে’র আগে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হবে না।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে উঠতে চান। শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের পর আবাসিক হলে উঠার দাবিতে ইতোমধ্যে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। হল খোলার দাবিতে সরব হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোও। তারা দ্রুততম সময়ে হল খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: হল খোলার দাবিতে অনড় রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা হল খোলার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক একাডেমিক কাউন্সিলের সভা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান জানিয়েছেন,  ‘সরকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান নিশ্চিত করবে ১৭ মে’র পূর্বে। শিক্ষামন্ত্রীও একথা বলেছেন। সে কারণে ১৭ মে থেকে শিক্ষার্থীদেরকে আবাসিক হলে ওঠানোর উদ্যোগ নেব। প্রথম ডোজের চার সপ্তাহ পরে শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারে। ১৭ এপ্রিলের মধ্যে যাতে সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে টিকা প্রদান নিশ্চিত করা হয়, আমরা সে অনুরোধ করেছি।’ কিন্তু উপাচার্যের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছে, ৭২ ঘন্টার মধ্যে যদি হল খুলে না দেয়া হয় তাহলে তারা পরবর্তী কর্মসূচিতে যাবে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জুনায়েদ বলেন, ‘আমাদের আল্টিমেটাম চলছে, ৭২ ঘন্টা পর আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাব।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: হল খোলার দাবিতে অনড় রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে, তারা তাদের উপর হওয়া হামলার বিচারের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেছে বলে তারা জানিয়েছে। তবে আপাতত শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে অবস্থান করবেন। গতকাল দুপুরের দিকে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে এক ছাত্রী এ ঘোষণা দেন। ওই ছাত্রী জানান, ‘গত কয়েকদিনের হামলার যথাযথ বিচার এবং এর প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য হলে থাকতে দিতে হবে। আমাদের এসব দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা অধিকাংশ মেনে নিয়েছে। তারা বলছে, এসব বিচারকার্য সম্পন্ন করতে সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই কিছু সময় দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে আমাদের সব ধরনের আন্দোলন আপাতত স্থগিত করছি। তবে হলের থাকার সিদ্ধান্তটি এখনও বহাল রয়েছে।’

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তারা তাদের তিনদফা দাবিতে অনড় রয়েছেন। গতকালও তারা তাদের দাবিতে ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন এবং ক্যাম্পাসের হল খোলার দাবিতে ২৩ জন শিক্ষার্থী রাত্রি যাপন করেছেন। আজ বাস মালিক সমিতি, শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যায় প্রশাসন সহ স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে একটি আলোচনা সভায় রয়েছে। আলোচনা সভার পর তারা আন্দোলন থামাবে কিনা তা জানবে বলে শির্ক্ষাথীরা জানিয়েছে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: আবাসিক হল খুলে দিতে পাঁচ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। আলটিমেটাম শেষে আগামী ১ মার্চে হলে উঠতে চায় তারা। হল না খুলে দিলে জোর করে হলে প্রবেশ করবে বলেও জানিয়েছেন তারা। গতকাল সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝাল চত্বরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় দুটি দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা। প্রথমত, স্থগিত করে দেয়া পরীক্ষা কর্যক্রম পুনারায় চালু করা দ্বিতীয়ত, আগামী ১ মার্চের মধ্যে হল খুলে দেয়া। ক্যাম্পাস খুলে শিক্ষাকার্যক্রম স্বাভাবিক না করা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচী ঘষোণা করেন তারা। সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন সংসদের  সাধারণ সম্পাদক জিকে সাদিক শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার পর ইতিমধ্যে ইবিতে সব ধরণের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আমরা মনে করি এটি চরম হটকারী সিদ্ধান্ত। কারণ ইতোমধ্যে অনেক বিভাগের পরীক্ষা চলছে, কিছু বিভাগে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা করা হয়েছে। যার ফলে শিক্ষার্থীরা বাড়ি থেকে এসে মেস বা বাসা ভাড়া নিয়ে ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে অবস্থান করছে। এমন পরিস্থিতিতে পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিপাকে ফেলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের এমন আচরণ শিক্ষার্থীদের হতাশ করেছে। তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি জাবি ও ঢাবি শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে হলের তালা ভেঙে ঢুকে গেছে। ইবি প্রশাসনের আচরণ যেন শিক্ষার্থীদের এমন কাজের দিকে ঠেলে না দেয় সে আহবান করছি। যদি দ্রুত হল-ক্যাম্পাস খোলার সিদ্ধান্ত না নেয়া হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা সেই পথে হাটতে বাধ্য হবে। যে কোন অপ্রিতিকর পরিস্থিতির দায়ভারও প্রশাসনকে নিতে হবে। এর আগে গত রোববার ও সোমবার একই দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়: আটকে থাকা রুটিন পরীক্ষাগুলো দিতে চান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, চলতি বছরের জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরীক্ষা গ্রহণের আয়োজন করে। তবে গত সোমবার শিক্ষামন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হলেও আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো শেষ করতে না পারলে দীর্ঘ ভয়াবহ সেশনজটে পড়বে তারা। এতে করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফ তুলন বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানায়। কিন্তু রুটিন হয়ে যাওয়া বিভাগগুলোতে আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো গ্রহণ করা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উভয়েই সমস্যায় পড়বে। করোনার মধ্যে বন্ধ থাকাসহ এমনিতেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে তিন থেকে চার বছরের সেশনজট। এই পরীক্ষাগুলো নেয়া হলে অনেক বিভাগের অনার্স-মাস্টার্স ফাইনাল শেষ হবে এবং শিক্ষকরা ফল প্রকাশ করতে পারবে। পরীক্ষাগুলো এখন না গ্রহণ করলে শিক্ষার্থীরা আবারও দীর্ঘ সেশনজটে পড়বে। নাহলে ক্যাম্পাস খোলার পর আটকে থাকা এই পরীক্ষা নিতে শিক্ষকরা হিমশিম খাবে।’ এছাড়া অন্যান্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই দাবীতে অনড় রয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় হল খোলাকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হয়ে উঠছে ছাত্র সংগঠনগুলোও। ছাত্রলীগ বাদে সকল শিক্ষার্থীদের জন্য অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে আবাসিক হল খুলে দেয়ার সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একমত পোষণ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন এবং প্রগতিশীল ছাত্রজোটসহ অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন। এবিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক। আমরা তাদের দাবির সাথে একমত। অতিদ্রুত হল খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে অফিস, আদালত সবকিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে। সেই একই নিয়মে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলাও সম্ভব। আমরা শিক্ষার্থীদের দাবিকে সমর্থন করছি। আমরা চাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেয়া হোক।  প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক সোহাইল আহমেদ শুভ বলেন, আমরা অনেক আগে থেকেই দ্রুত সময়ের ভিতরে আবাসিক হল খোলার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আবাসিক হল খোলার জন্য যে সকল আয়োজন করা দরকার সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন করতে পারছে না। তারা সবকিছু শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। আর আমরা ১৭মে হল খোলার যে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত তাকে স্বাগত জানাতে পারছি না। তাই আমরাও ভাবছি যে হল খোলার দাবিতে দ্রুতই একটি কর্মসূচি দেবো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সদ্য সাবেক এজিএস সাদ্দাম হোসাইন বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের আবেগ অনুভতিকে সম্মান জানাই। এক বছরের বেশি সময় ক্যাম্পাসের বাইরে থাকায় স্বাভাবিকভাবে ক্যাম্পাসের প্রতি তাদের একটা অনুভূতি এটি রয়েছে সেটির বহিঃপ্রকাশ। আমরা সে সংকটগুলো মোকাবিলা করছিলাম গতকাল শিক্ষামন্ত্রণালয়ের ঘোষণার মাধ্যমে রাষ্ট্রের যে প্রচেষ্টা তা আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো হল বন্ধ থাকবে কিন্তু পরীক্ষা হবে। তবে শিক্ষামন্ত্রী বলে দিয়েছেন হলের পাশাপাশি পরীক্ষাও বন্ধ রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের আরো একটি সংকট ছিলো বয়স জনিত কারণে চাকরিতে  আবেদন করতে পারবে না সেটিরও আবদেনর বয়স বাড়ানোর ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা হল খোলার বিষয়টি যতটা না রাজনৈতিক সামাধানের বিষয় তার চেয়ে বেশি বৈশ্বিক বাস্তবতার সাথে তাল মিলিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে করা হবে। এবিষয়ে শিক্ষার্থীরা দায়িত্বশীল আচরণ করবে।

১ মার্চের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি নুর-রাশেদদের

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে আগামী ১ মার্চের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। গতকাল সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির সমাপ্তি শেষে এই আল্টিমেটাম দেয়া হয়। গতকাল বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন। তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষামন্ত্রীর গতকালকের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছি। সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি যে তারা যেন আগামী ১ মার্চের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেন। ১ মার্চের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা করবো।’ রাশেদ আরও বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরীক্ষাগুলো শেষ করতে হবে। এছাড়া আগামী মার্চে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অসমাপ্ত পরীক্ষা নেয়ার কথা ছিল সেগুলোও যথা সময়ে নিতে হবে। তা না হলে সারা দেশের ছাত্র সমাজকে সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’ এর আগে গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনতিবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। বিক্ষোভ শেষে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের ১ নং গেটের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক নুরুল হক নুর বলেন, ‘সরকারি দলের প্রত্যেকটি সমাবেশে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। এমন প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও সারাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেখানে কি করোনা সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’ নুর বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক পরীক্ষা চলছিল, কিন্তু গতকাল শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। দেশের সব কিছু যেখানে সচল রয়েছে, সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ রয়েছে সেটি আমার বোধগম্য নয়। দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।’