Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

পর্যটনের সব সম্ভাবনা কাজে লাগাতে মহাপরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১, ০৬:৪৫ পিএম


পর্যটনের সব সম্ভাবনা কাজে লাগাতে মহাপরিকল্পনা

পৃথিবীতে পর্যটন শিল্প আজ বৃহত্তম শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অপরূপ বাংলাদেশ দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিপাসুর কাছে অতি প্রিয়। বাংলাদেশের পথে-প্রান্তরে পর্যটন শিল্পে উন্নয়নের সম্ভাবনা অপরিসীম। পর্যটন শিল্পের সবটুকু সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে মডেল হতে পারে। এ জন্য পর্যটন খাতে সব ধরনের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে মহাপরিকল্পনা নিয়েছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন।

বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন সূত্র মতে, পর্যটন শিল্পের বিকাশের ওপর বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নও জড়িত। পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটলে কর্মসংস্থান ঘটবে ও বেকারত্ব দূরীকরণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব হবে। এ শিল্পের বহুমাত্রিকতার কারণে বিভিন্ন পর্যায়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এসব সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে গোটা দেশের পর্যটন এলাকা ঢেলে সাজাতে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। পর্যটন মহাপরিকল্পনায় পাল্টে যাবে দেশের পর্যটন শিল্পের চিত্র। যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে পর্যটন সম্ভাবনা এলাকাগুলো রয়ে যাচ্ছে অবহেলিত। অবহেলা আর অযত্নে থাকা পর্যটন এলাকাকে দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসুদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার কাজ হাতে নিয়েছে সরকার। জেলাভিত্তিক পর্যটন এলাকা গড়ে তোলার পাশাপাশি ঐতিহ্যের প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পর্যটন খাতের মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড।

পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ, তিন পার্বত্য জেলা, কুয়াকাটা ছাড়াও প্রতিটি জেলায় রয়েছে পর্যটন সম্ভাবনাময় এলাকা। প্রতিটি জেলায় প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন, ঐতিহাসিক মসজিদ,  মিনার, লেক, নদ-নদীর অববাহিকা, পাহাড়, অরণ্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে। বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলার বিভিন্ন এলাকা বিভিন্ন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের আকর্ষণ বৃদ্ধি, পর্যটন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পর্যটকদের  সারা দেশে মানসম্মত পর্যটন সুবিধাদি সৃষ্টি, দেশের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় স্থানে পর্যটন সুবিধাদি সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ উৎসাহিত করার উদ্যোগ নিয়েছে পর্যটন কর্পোরেশন। এর মধ্যে রয়েছে পর্যটন স্থাপনা উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও সংস্কার করা। পর্যটন কেন্দ্রের রাস্তা প্রশস্ত করার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সব কিছুর সমন্বিতভাবে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে।

করোনা সংকটে অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়ে পর্যটন খাত। ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসা ও কর্মসংস্থান। সবমিলিয়ে খাতটি অন্তত ১৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। পর্যটন এলাকায় সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের উদ্যোগ নেয় পর্যটন কর্পোরেশন। দীর্ঘ ছয় মাসের অধিক সময় পর্যটন এলাকা বন্ধ থাকার পর খুলে দেয়া হয়েছে। পর্যটন এলাকাগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের ব্যবস্থার ওপর জোর দেয়া হয়েছে।

পর্যটকদের নিরাপত্তা, করোনা সুরক্ষা নিশ্চিতের পাশাপাশি ভ্রমণকে আনন্দদায়ক করতে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন সুবিধা, যা আগে ছিলো না। বিশেষ করে- সব ধরনের হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ উপযোগী করা হয়েছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দিয়েছেন মাঠ প্রশাসনের এ দক্ষ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) মো. হান্নান মিয়া। দায়িত্ব নিয়েই করোনার প্রভাব কাটাতে পর্যটন কেন্দ্রগুলো আকর্ষণীয়, নিরাপত্তা জোরদার,  শিল্পের বিকাশ, উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উদ্যোগ নিয়েছেন। কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুরক্ষার পাশাপাশি গেস্টদের সুরক্ষা নিশ্চিকে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন সরকারি পর্যটন সংস্থা। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সুদূরপ্রসারি চিন্তার প্রতিফলন হিসেবে ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ১ জানুয়ারি ১৯৭৩ সাল থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন দেশে পর্যটনকে একটি শিল্প হিসেবে এর বিকাশ, উন্নয়ন এবং পর্যটন আকর্ষণগুলো বিপণনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আমারসংবাদ/জেআই