Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

বৃদ্ধি পেয়েছে দেশের বাণিজ্যিক সক্ষমতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১, ০৮:৪৫ পিএম


বৃদ্ধি পেয়েছে দেশের বাণিজ্যিক সক্ষমতা
  • দায়িত্ব গ্রহণের স্বল্প সময়ের মধ্যেই বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির নেতৃত্বে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে সফলতার পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ

বহুমুখী প্রতিবন্ধকতা ছাপিয়ে সফলভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে সড়ক, নৌ ও বিমান যোগাযোগে আধুনিকতার যে ছোঁয়া লেগেছে, তার মধ্য দিয়েই ইতোমধ্যে বহুগুণে বৃদ্ধিও পেয়েছে বাণিজ্যিক সমক্ষতা। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে আরও ভালো করার লক্ষ্য অর্জনে দেশের বাণিজ্য খাতের বর্তমান নেতৃত্বে রয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

দায়িত্ব গ্রহণের স্বল্প সময়ের মধ্যেই যার সফল নেতৃত্বে বিশ্ববাণিজ্যে সফলতার পথেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যেই তিনি সময়োপযোগী করেছেন ট্রেড পলিসি এবং দক্ষ করে গড়ে তুলছেন বাণিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্টদের। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার সিদ্ধান্ত ও পরামর্শ অনুযায়ী বাংলাদেশে বাণিজ্য ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচিও হাতে নিয়েছেন তিনি। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সুনামও অর্জন করতে শুরু করেছে। সর্বোপরি বর্তমান বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্যও খুবই উপযোগী স্থান। বিশ্বের অনেক দেশ ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এগিয়েও এসেছে। বিনিয়োগের পরিমাণও বাড়ছে দিন দিন। আর বিশ্ববাণিজ্য তথা দেশের বাণিজ্য খাতে সফলতার নেপথ্যের এই নায়ক মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশির বিষয়েই তুলে ধরছে আমার সংবাদ। 

দেশের বর্তমান রাজনীতিতে উজ্জ্বল এক নাম বাণিজ্যমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি। যার রয়েছে সুদীর্ঘকালের বর্ণিল রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। গণমুখী রাজনীতিরও কর্ণধার টিপু মুনশি। যিনি সংসদ সদস্য হলেও নেন না প্রাপ্য ভাতা ও সম্মানি। বরং অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিলিয়ে দিচ্ছেন। এমপি নির্বাচিত হয়েই প্রথম ভাতাও দান করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের প্রথম শহীদ শংকুরের মায়ের হাতে। টিপু মুনশির সুদীর্ঘকালের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে নেই কোনো কালিমা। নেই দুর্নীতির কোনো অপবাদও। দেশের জন্য নিবেদিত এই মানুষটির নেই কোনো বিলাসিতাও। রাষ্ট্রীয় শক্তিকে কখনোই ব্যক্তিগত কাজে লাগাননি টিপু মুনশি।

জানা যায়, ১৯৫০ সালে গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করা টিপু মুনশি বাবার হাত ধরে ১৯৬৪ সালে সপরিবারে রংপুরে চলে আসেন। ১৯৬৬ সালে ছয় দফার বছরে কলেজে ঢুকেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জেল থেকে বের করে আনার জন্য ’৬৯ সালে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, সেই অভ্যুত্থানেরও অন্যতম সংগঠক তিনি। দেশাত্মবোধে উজ্জীবিত সেই তরুণ টিপু মুনশি রাজনীতিতে এসে আর পিছপা হননি। 

১৯৬৯ সালে রাজধানীতে জোয়ারসাহারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি। এরপর তিতুমীর কলেজে (তৎকালীন সরকারি জিন্নাহ কলেজ) ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্ব দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখভাগে লড়াই করেন। তার বাবা রমজান আলী ছিলেন ব্রিটিশ সৈনিক। বাবা ছেলে দুজনই অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধে। যুদ্ধের বছর ১ মার্চ কারফিউ চলাকালে কয়েকজনকে নিয়ে সরকারি জিন্নাহ কলেজের নাম পরিবর্তন করে শহীদ তিতুমীর কলেজ নামকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন টিপু মুনশি। তিনি ৭৫ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। জীবিকার তাগিদে রাজনীতির পাশাপাশি ৮৫ সালে পোশাক শিল্পের সঙ্গেও যুক্ত হন। ’৯২ সালে তিনি বৃহত্তর গুলশান আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং দীর্ঘ ২৪ বছর ওই পদে ছিলেন। ধীরস্থির স্বভাবের টিপু মুনশি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিও ছিলেন। ২০০১ সাল থেকে রংপুরের পীরগাছা-কাউনিয়া আসনে চারবার নির্বাচনে পরপর তিনবার এমপি হন টিপু মুনশি।

টিপু মুনশি নবম জাতীয় সংসদে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। এর আগে ১৯৯৮ সালে তিনি বিজিএমইএর সহ-সভাপতি ও ২০০৫ সালে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন নিষ্ঠার সঙ্গে। বর্তমানে তিনি তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের যৌথ কমিটির প্রেসিডেন্সিয়াল সভাপতি।

২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন। টিপু মুনশি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে সফলভাবে সে দায়িত্ব পালনও করে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বাজার সৃষ্টির দ্বার উন্মোচিত করেছেন। স্বাধীনতার পর ৫৩ বছরের মধ্যে টিপু মুনশির নেতৃত্বেই প্রথম ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (এফটিএ) প্রারম্ভিকভাবে তিন দেশের সঙ্গে সম্পাদিত হয়। ক্রমান্বয়ে এর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ২০২৪ সালে এলডি থেকে উন্নীত হলে এফটিএর আওতায় রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পাবে। রংপুরে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তার।

এদিকে আসন্ন রমজান মাস নিয়েও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বেশ সতর্ক। কেউ যাতে পণ্য মজুদ করতে না পারে, পণ্যের সংকট যেনো না হয় সে ব্যাপারে সব সময়ই সোচ্চার তিনি। কেউ যাতে অতিরিক্ত মুনাফা না করতে পারে সে জন্য অতীতেও যেমন অসাধু সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছেন, আসন্ন রমজানকে কেন্দ্র করেও সোচ্চার অবস্থানে রয়েছেন তিনি। করোনা প্রাদুর্ভাব যখন তুঙ্গে ছিলো, সে সময়ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন টিপু মুনশি। ব্যক্তিগত অর্থায়নে ২৩ হাজার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। বাণিজ্য বিষয়ে সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করে ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস সূচকে বাংলাদেশ দ্রুতই এগিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করা হয়েছে। বর্তমানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সেবা প্রদান করছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। বেশির ভাগ কার্যক্রম ইতোমধ্যে ডিজিটাল সেবার আওতায়ও আনতেও সক্ষম হয়েছেন টিপু মুনশি। 

আমারসংবাদ/জেআই