Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

বাঙালি ঐতিহ্য ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ২, ২০২১, ০৭:৩৫ পিএম


বাঙালি ঐতিহ্য ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
  • নেতৃত্বে সফল সংস্কৃতিমনা প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ

দেশজ সংস্কৃতি, কৃষ্টি, সমকালীন শিল্প-সাহিত্য সংরক্ষণ ও বিকাশ এবং সংস্কৃতিমনস্ক জাতি গঠনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। যিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তরুণ ও যুবসমাজের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও পাঠপ্রবণতা বৃদ্ধি, বিশ্বব্যাপী বাঙালি সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ইতিহাস, ঐতিহ্যের প্রসার এবং অপসংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে দেশি সংস্কৃতি রক্ষায় সকল চ্যালেঞ্জের বিপরীতেই এগিয়ে যাচ্ছেন সাফল্যের পথে। বিশ্বব্যাপী বাঙালি ঐতিহ্য ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। দক্ষতা ও নেতৃত্ব গুণে অতুলনীয় সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের বিষয়েই তুলে ধরছে আমার সংবাদ।

ময়মনসিংহের সম্ভ্রান্ত এক সংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন কে এম খালিদ। তার মায়েরও সংস্কৃতিচর্চার প্রতি ছিলো ভীষণ ঝোঁক। সে অনুরাগেই পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সংস্কৃতিচর্চার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যান তিনি। তার বড়ভাই মাহমুদ সাজ্জাদও স্বনামধন্য মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আর মেজভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা ম. হামিদ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের সাবেক মহাপরিচালক, নাট্যচক্রেরও প্রতিষ্ঠাতা। শিক্ষাজীবনে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাস করা প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বর্ণাঢ্য এক রাজনৈতিক জীবনেরও অধিকারী। তৃণমূল রাজনীতিতে যিনি আদর্শবান রাজনীতিবিদ হিসেবেই সুপরিচিত। ধর্ম-বর্ণ, শ্রেণি-পেশানির্বিশেষে সকলের কাছেই যার রয়েছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা।

নেতৃত্ব, দক্ষতা ও জনপ্রিয়তার কারণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজ শাখার আহ্বায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর একই কলেজের ছাত্র সংসদেরও সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন কে এম খালিদ। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্বও সফলতার সঙ্গে পালন করে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সদস্য ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও সফলতার সঙ্গেই পালন করেছেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সহ-সভাপতিও নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমানে মুক্তাগাছা উপজেলা শাখা সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক কে এম খালিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন ১৫০, ময়মনসিংহ-৫ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও একই আসন থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। যা তার সততা, দক্ষতা ও নেতৃত্বগুণেরই ফল বলছেন সংশ্লিষ্টরা।  শুধু রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ নন শিক্ষানুরাগী কে এম খালিদ, সমাজসেবকও। শিক্ষা ও সমাজসেবামূলক অসংখ্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গেও জড়িত তিনি। রয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক কর্মকাণ্ডেও। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও সংস্কৃতিমনস্ক জাতি গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন কে এম খালিদ। যার দক্ষ নেতৃত্বে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই সাম্প্রতিক সময়ে একুশে পদক প্রদান, নজরুল, রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী উদযাপনসহ বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য সংরক্ষণে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়নে সক্ষমতার জানান দিয়েছেন বলে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া কে এম খালিদের দায়িত্ব গ্রহণের পর ও এর আগে গত তিন বছরে জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কো কর্তৃক ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা এবং সিলেটের শীতলপাটিকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ইন্ট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতেও সক্ষম হয়েছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এদিকে হালুয়াঘাট, দিনাজপুর ও নওগাঁ জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক একাডেমি নির্মাণ, ১৫টি জেলায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি নবায়ন, সংস্কার ও মেরামত, সাউথ এশিয়ান টুরিজম ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট, ৬ জেলায় জেলা গণগ্রন্থাগারও নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানা যায় সংশ্লিষ্ট সূত্রে।

এছাড়া গত তিন বছরে ৯১টি সাংস্কৃতিক দল বিদেশে প্রেরণ এবং ১৮টি বিদেশি দল বাংলাদেশে আগমন করে। ২৫ হাজার ৪৪৫টি আইএসবিএন প্রদান এবং ৩ হাজার ৭৮৫ আরকাইভাল নথিপত্রও সংগ্রহ করা হয়। জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী এবং ১৮তম দ্বি-বার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী, ঢাকা আর্ট সামিট ২০১৬, ঢাকা লিট ফেস্ট ২০১৯ আয়োজনও সফলভাবেই করেছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ৭ হাজার ৪৮৬ জন সংস্কৃতিকর্মী এবং ২ হাজার ২২৮টি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা প্রদান ছাড়াও ২ হাজার ১৫০টি বেসরকারি গ্রন্থাগারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং ১ লাখ ৫৫ হাজার ৫০টি বই বিতরণ করেছে মন্ত্রণালয়। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণা ও উন্নয়নে ৬২টি গবেষণামূলক বই ও সাময়িকী প্রকাশ, গুরুত্বপূর্ণ পুরাকীর্তিসমূহের খনন কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। জেলা-উপজেলা গ্রন্থাগারের জন্য ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯১০টি বই সংগ্রহ আর ৬৪টি জেলায় ১ হাজার ৬৮৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য হারমোনিয়াম ও তবলা সরবরাহ করা হয়েছে। জাতীয় জাদুঘরে তৈরি করা হয়েছে ভার্চুয়াল গ্যালারিও।

এছাড়া অন্যসব ক্ষেত্রের মতোই সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্যও করোনা মহামারি চ্যালেঞ্জের মুখে সমাজজীবনে যেমন স্বাভাবিক কাজকর্ম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডও। এর মধ্যেই পাঠাগার ব্যবহার, জাদুঘর ও প্রত্ন স্থাপনা পরিদর্শন সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও উন্নত সমাজ গঠনে দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় যথাযথ জনসম্পৃক্ততা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির চ্যালেঞ্জেও প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বে সফল হবে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়— এমনটাই আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে ঢাকা অপেরা হাউস, ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেনের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার, প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘর ও উপজেলা সাংস্কৃতিককেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে কে এম খালিদ নেতৃত্বাধীন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের। গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কেন্দ্রীয় ভবন নির্মাণ, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রদর্শন ও বাংলাদেশ উৎসব, জেলাপর্যায়ে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসসহ বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবিষয়ক গবেষণা ও গ্রন্থ প্রকাশ এবং বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী ও কবির নামে স্মৃতিকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নেও নিরলস কাজ করে যাচ্ছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

আমারসংবাদ/জেআই