Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

আমদানির প্রভাব পড়েনি বাজারে

এম এ আহাদ শাহীন

মার্চ ৪, ২০২১, ০৭:৩০ পিএম


আমদানির প্রভাব পড়েনি বাজারে
  • বাজারে এখন মিনিকেট ও নাজির শাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে

দেশে প্রতিদিন প্রায় চার হাজার টন চাল আমদানি হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত চাল আমদানি হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ টন। আরও ১৭ লাখ টন খাদ্যশস্য (চাল ও গম) আমদানির প্রক্রিয়া চলছে। তবে কোনো কিছুতেই কমছে না চালের দাম। প্রতিদিন চাল আমদানি হলেও বাজারে এখনো তার প্রভাব পড়েনি। বরং জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দুই মাসের ব্যবধানে কোনো কোনো চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের খুচরা বাজার দরে এসব তথ্য উঠে এসেছে। তবে মিলার ও আমদানিকারকরা বলছেন, আমদানিকৃত চালের দাম এরই মধ্যে কমতে শুরু করেছে। দ্রুতই চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে। কারণ এখন তারা চালের ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছেন না।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি মিনিকেট ৬৫ টাকা, ভারতীয় মিনিকেট ৬৪ টাকা, আটাশ ৫৫ টাকা, নাজির শাইল ৭০ টাকা ও পায়জাম ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের দোকানি হাসমত শেখ আমার সংবাদকে বলেন, চালের বাজার এখনো বাড়তি। বাজারে দেশি চাল নেই। সব ইন্ডিয়ান। কয়েকদিন আগে প্রতিবস্তা (৫০ কেজি) মিনিকেট তিন হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ১০০ টাকায়। একই বাজারের মেসার্স হাজি ইসমাইল অ্যান্ড সন্সের মালিক জসিম উদ্দিন বলেন, বাজারে চালের দাম এখনো বাড়তি রয়েছে। আমদানি করা চাল এলেও বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। নতুন করে চালের দাম কমেনি। সেই আগের মতোই আছে। মৌসুম আসতে আরও দুই মাস বাকি। মিলাররা চাইলে এই সময়ে চালের দাম আরও বাড়াতে পারে। তারা যা চাইছে তাই তো হচ্ছে। ভারতীয় চাল আসার পরও বাজার বাড়তির দিকে। আগে মিনিকেট তিন হাজার ৮০ টাকা বস্তায় বিক্রি হলেও এখন ৩১০০ থেকে ৩১২০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

টিসিবির তথ্য বলছে, বাজারে এখন মিনিকেট ও নাজির শাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে। ফেব্রুয়ারিতেও চালের দাম প্রায় একই ছিলো। আর জানুয়ারিতে এ ধরনের প্রতিকেজি চাল বিক্রি হয়েছে ৫৮ থেকে ৬২ টাকায়। অর্থাৎ দুই মাসের ব্যবধানে মিনিকেট ও নাজির শাইলের দাম কেজিতে প্রায় দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর গত বছরের মার্চে সরু জাতের মিনিকেট ও নাজির শাইল বিক্রি হয় ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে প্রতিকেজি মিনিকেট চালের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বা পাঁচ টাকা করে বেড়েছে।

এদিকে মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৮ টাকা কেজিতে। ফেব্রুয়ারিতে বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৫৬ টাকায়। আর জানুয়ারিতে এ ধরনের প্রতিকেজি চালের দাম ছিলো ৫২ থেকে ৫৬ টাকা। নতুন বছরে এ ধরনের চালের দাম খুব একটা বাড়েনি। তবে গত বছর এ জাতীয় চাল বিক্রি হয়েছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে। বর্তমানে প্রকারভেদে পাইজাম ও লতার দাম কেজিতে সর্বনিম্ন দুই থেকে সর্বোচ্চ আট টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর স্বর্ণা বা চায়না ইরির দাম গত বছরের চেয়ে বেড়েছে সর্বনিম্ন ১০ থেকে সর্বোচ্চ ১২ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে প্রতিকেজি মোটা স্বর্ণা ও চায়না ইরি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। ফেব্রুয়ারিতে বিক্রি হয় ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা। জানুয়ারিতেও দাম ছিলো একই। আর গত বছর একই সময়ে এ ধরনের প্রতিকেজি চাল বিক্রি হয় ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা। অর্থাৎ বছর ব্যবধানে এ ধরনের চালের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি।

বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী আমার সংবাদকে বলেন, চালের দাম কমে গেছে। চাহিদাও নেই আগের মতো। ফলে বাজারে চালের বেচাকেনা নেই। আর ধানের দামও কমেছে। চালের দাম কমেনি এটি ঠিক নয়। ভোক্তাপর্যায়ে চালের দাম না কমার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারের তো অনেক সংস্থা আছে। কোনো কিছুই তো তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তারা কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বাজারে আরও মনিটরিং বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের এই সাধারণ সম্পাদক।

আমারসংবাদ/জেআই