Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

মানবিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আ.লীগ

রফিকুল ইসলাম

এপ্রিল ৫, ২০২১, ০৮:৫০ পিএম


মানবিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আ.লীগ
  • করোনায় অসহায়, দরিদ্র  শ্রমজীবী, দুস্থ ও নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেবে

ফের ভয়াবহ রূপে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ। দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। সংকটে নিম্ন আয়ের মানুষ। জীবন-জীবিকার তাগিদে রাস্তায় নামছে নিম্ন আয়ের মানুষ। করোনার এমন পরিস্থিতিতে ফের মানবিক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তারা অসহায়, দরিদ্র, শ্রমজীবী, দুস্থ, নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ও নগদ অর্থ পৌঁছে দেবে। এজন্য দলীয় নেতাদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধুকন্যার এমন নির্দেশ বাস্তবায়নে মহানগর, জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিটের দায়িত্বশীল নেতাদের বার্তা দেয়া শুরু করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতারা। তারা বলছেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ সবসময় মানুষ ও মানবতার কল্যাণে কাজ করে আসছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ফের মানবিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সারা দেশেই ত্রাণ তৎপরতা শুরু করা হবে। 

তথ্যমতে, গত বছর মার্চ মাসে বাংলাদেশে আঘাত করে করোনা ভাইরাস। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই মাসেই সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। এমন পরিস্থিতিতে চরম বিপর্যয়ে পড়ে দেশের অসহায়, দরিদ্র, শ্রমজীবী, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। এ অবস্থায় তাদের পাশে দাঁড়াতে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সরকারের পাশাপাশি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে কেন্দ্র, মহানগর, জেলা-উপজেলা, ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দেন। দলীয় সভানেত্রীর এমন নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে মাঠে নামে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন ইউনিটের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। তারা চাল, ডাল, তৈল, লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেন। ত্রাণ তৎপরতায় সক্রিয় হয়ে ওঠেন স্থানীয় মন্ত্রী, এমপি, জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। তবে মাঝে করোনা সংক্রমণ কিছুটা স্বাভাবিক হলে সারা দেশে আওয়ামী লীগের ত্রাণ তৎপরতায় কিছুটা ভাটা পড়ে। কিন্তু বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ও সরকারের লকডাউনের সিদ্ধান্তকে সামনে রেখে সারা দেশে ত্রাণ তৎপরতা বৃদ্ধি করতে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকন্যার নির্দেশনার পর সারা দেশের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে জেলা-উপজেলাপর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছেন দলটির বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

করোনা শুরুর পর থেকেই ত্রাণ তৎপরতায় সব চেয়ে বেশি এগিয়ে আওয়ামী লীগের ত্রাণ উপকমিটি। দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এবং ত্রাণ উপকমিটির সদস্য সচিব সুজিত রায় নন্দীর নেতৃত্বে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে প্রথম থেকেই জাতি-ধর্ম-বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে ত্রাণ উপকমিটি রয়েছে সাধারণ মানুষের পাশে। তারা অসহায় মানুষের মাঝে চাল, ডাল, তৈল, লবণ ও ময়দাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী এবং নগদ টাকা অনুদান বিতরণের পাশাপাশি সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংগঠনের  মাঝে করোনার সুরক্ষাসামগ্রী হ্যান্ড স্যানিটাইজার, অক্সিজেন সিলিন্ডার, ফর্মাল থার্মোমিটার, পিপিই, উন্নতমানের কাপড় ও সার্জিক্যাল মাস্কসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। যা নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও প্রশংসা করেন। সর্বশেষ গত রোববার সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে করোনা প্রতিরোধসামগ্রী বিতরণ করে ত্রাণ উপকমিটি। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী আমার সংবাদকে বলেন, করোনার শুরু থেকেই দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনায় অসহায় মানুষের পাশে থাকতে সরকারের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। বৈশ্বিক মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় ত্রাণ কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে জানান আওয়ামী লীগের এই নেতা।         

আ.লীগ সূত্রে জানা যায়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সতর্ক আওয়ামী লীগের শীর্ষপর্যায়ের নেতারা। একদিকে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা, অন্যদিকে অসহায়, দরিদ্র, শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে থাকা। তাই মহানগর, জেলা-উপজেলা, ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন তারা। একই সাথে সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। মূলত তাদের লক্ষ্য- স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা এবং অসহায় মানুষের খাদ্যসামগ্রী নিশ্চিত করার মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করা।  জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান আমার সংবাদকে বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার শুরু থেকে আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দেশের অসহায়, দরিদ্র, শ্রমজীবী, নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে জেলা, মহানগর, উপজেলাসহ তৃণমূলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।  আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এম কামাল হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, করোনার অসহায় মানুষের পাশে থাকতে দলীয় নেতাকর্মীদের ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন। নেত্রীর ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দেশের সকল মানুষের পাশে আওয়ামী লীগ ছিলো। কেউ না খেয়ে থাকেনি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সকলের খাবার নিশ্চিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের এই মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম আমার সংবাদকে বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। যা দেশের অন্য কোনো রাজনৈতিক দল করতে পারে না। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে, এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ মানবিক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। সারা দেশে এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

আমারসংবাদ/জেআই