Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

ক্ষোভে ফুঁসছে ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থীরা

এপ্রিল ৬, ২০২১, ০৭:৫০ পিএম


ক্ষোভে ফুঁসছে ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থীরা
  • শুধু ব্যবসা-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে লকডাউন, উঠেছে অভিযোগ
  • ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ
  • শিগগিরই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হুমকি দিয়েছে ব্যবসায়ীরা
  • হল বন্ধের পরিস্থিতিতেও পরীক্ষা দিতে ঢাকায় এসে মহাবিপদে শিক্ষার্থীরা
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঠে নামার হুমকি
  • লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে যানজট প্রাইভেটকার-মোটরসাইকেলের দাপট

চলছে লকডাউন! আজ থেকে দেশের সব সিটিতে চলবে বাস। খোলা আছে সরকারি অফিস আদালত। কলকারখানাতেও শ্রমিকরা কাজ করছেন। বইমেলাও জমে উঠছে। হাটবাজারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিক রয়েছে। এখন মৌলিকভাবে লকডাউনে রয়েছে ব্যবসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

গতকাল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নেমেছেন। সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। ঈদ-পূজাসহ বিভিন্ন উৎসবে দোকান বন্ধ থাকায় দুর্বিসহ জীবনের কথা বলেছেন তারা। দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ থাকায় ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, ভ্যাট-ট্যাক্স দেয়া এবং কর্মচারীর বেতন দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ কারণে ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে রাস্তায় বসা ছাড়া উপায় থাকবে না বলে সরকারকে বলছেন ব্যবসায়ীরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে দোকান খুলতে চায় তারা। পাশাপাশি ঘোষণাও দেয়, দোকানপাট শিগগির খুলে না দিলে নিজেরাই দোকান খুলে ফেলবে। প্রয়োজনে রাজপথে নামবেন। অন্যদের মতো স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে তারাও ব্যবসা করবেন।

এদিকে ধাপে ধাপে সব খুলে দিলেও স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হচ্ছে না এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। একাধিকবার আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা কিছু পরীক্ষা আদায় করেছেন। এবার দ্বিতীয় দফায় লকডাউন ঘোষণা দেয়ায় আবারো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান পরীক্ষাগুলোও আটকে গেছে। হল বন্ধ থাকায় কঠিন সমস্যার মুখোমুখী হওয়া শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে ঢাকায় এসে মহাবিপদে পড়তে হয়েছে। করোনার অর্থনৈতিক সংকটে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত বাসা ভাড়া গুনতে হচ্ছে। ক্ষোভ জানিয়ে সাত কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ২০২১ সালে এসেও ২০১৮ ও ২০১৯ সালের পরীক্ষা এখনো তারা শেষ করতে পারেননি। অনেকে বিরক্ত হয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান ছেড়ে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চলে যাচ্ছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ— দেশের সব কিছুই স্বাভাবিক রয়েছে। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনো করোনার প্রভাব রয়েছে। প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হচ্ছে না। হল খুলে দেয়া হচ্ছে না। দাবি আদায়ে ঢাকা বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজসহ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামার ইঙ্গিত দিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য একত্রিত হতে বেশকিছু তৎপরতা দেখা যাচ্ছে।

এদিকে গতকাল দ্বিতীয় দিনে লকডাউন ছিলো বিস্ময়কর। সড়কে বাস ছাড়া সবই চলাচল করেছে। সেই সঙ্গে রাজপথে অনেক মানুষও চোখে পড়েছে। কেউ দৈনন্দিন কাজে বের হয়েছেন, আবার কেউ জীবন-জীবিকার তাগিদে। রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, আবুল হোটেল ও কাকরাইল এলাকা যানজটে পূর্ণ ছিলো। সাধারণ মানুষের ভিড়ও ছিলো চোখে পড়ার মতো। অনেকে মাস্ক ছাড়া ঘুরে বেড়াচ্ছেন। চা দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছে। কেউ কেউ রিকশায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ফাঁকা ঢাকাকে অনেকে উৎসব হিসেবে নিয়েছেন। ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলের দাপট ছিলো বেশি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজপথে মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। রিকশা-সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরবাইকে কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হন। কাউকে কাউকে হেঁটেও রওনা হতে দেখা গেছে বিভিন্ন স্থানে। রাইড শেয়ার অ্যাপ বন্ধ থাকলেও চুক্তিতে বিভিন্ন দূরত্বে যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে চালকদের। গণপরিবহন না থাকায় রিকশা-অটোরিকশাচালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, এমন লকডাউন কার্যত কোনো কাজে আসবে না। দেখা যাচ্ছে জনসমাগম হলো, দোকানপাট খোলা ছিলো, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য-সামগ্রীর বাজারে মানুষের ভিড়। মানুষ স্বাস্থ্যবিধিও যথাযথভাবে মানেনি। অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক ছিলো না। এমনকি সড়কেও যানজট হয়েছে। তাহলে লকডাউন কীভাবে হলো? এভাবে চললে সংক্রমণ কমবে না। মানুষকে ঘরে থাকতে হবে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধিও। তাহলেই কেবল এ ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অন্যথায় বিপদ আরও বাড়বে।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ : মার্কেট খুলে দেয়ার দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন সাভারের ব্যবসায়ীরা। গতকাল সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় ১ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা এমনিতেই ঋণগ্রস্ত বাধ্য হয়ে সড়কে নেমেছি। স্থানীয় এক কাপড় ব্যবসায়ী বলেন, আমরা ঋণ করে দোকানে মালামাল তুলেছি, মার্কেট বন্ধ থাকলে ভিখারি হয়ে যাবো। মার্কেটের দোকানদার আর সেলসম্যানের ঘরে খাবার থাকবে না। তারা না খেয়ে মারা যাবে। আমাদের দাবি, এখনই মার্কেট খুলে দেয়া হোক।

নিউমার্কেট এলাকায় বিক্ষোভ অব্যহাত : মার্কেট খুলে দেয়ার দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চাঁদনী চক শপিং কমপ্লেক্সের সামনে বিক্ষোভ করেন ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকরা। বিক্ষোভে অংশ নেয়া ব্যবসায়ীরা দিনের নির্দিষ্ট একটা সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট খোলা রাখার দাবি জানান। ‘সরকার ভাবুক, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান না টিকলে দেশও টিকবে না। আমরা নির্দিষ্ট একটা সময় মার্কেট খোলা রাখতে চাই। রমজানে দোকান খোলা না থাকলে কী হবে, জানি না। গত বছরের ক্ষতিই পুষিয়ে উঠতে পারিনি।’এমন কথা বলেই অনেকই কেঁদে ফেলেন ।

মিরপুর ও শিমরাইলে বিক্ষোভ : মার্কেট বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর মিরপুর ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইলে বিক্ষোভ করেন তারা। তারা মার্কেট খুলে দেয়ার দাবি জানান। দুপুর ১২টার দিকে মিরপুর ১ নম্বর চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা। তারা সেখান থেকে মিছিল নিয়ে সনি সিনেমা হলের সামনের মোড় হয়ে আবার ১ নম্বর মোড়ে ক্যাপিটাল টাওয়ার শপিং কমপ্লেক্সের সামনে এসে জড়ো হন। মিরপুর ১ নম্বর এলাকার কো-অপারেটিভ মার্কেটের ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, সরকার বিধিনিষেধ দিলেও অফিস-আদালত, বইমেলা, শিল্পকারখানা থেকে শুরু করে অনেক কিছুই খোলা রেখেছে। তারাও তাদের দোকান সীমিত আকারে খুলতে চান। এই দাবি নিয়ে তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় মার্কেট খোলার দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন ব্যবসায়ীরা। বেলা ১১টায় মহাসড়কের শিমরাইল মোড় হাজী আসহান উল্লাহ সুপার মার্কেটের সামনে ১৫ মিনিটের জন্য সড়ক অবরোধ করে দুই শতাধিক ব্যবসায়ী বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন।

দোকান খোলার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জের মালিকদের : নারায়ণগঞ্জে লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেটের দোকান খোলার দাবিতে মানববন্ধন করেছে নগরীর বিভিন্ন মার্কেটের দোকান মালিক ও শ্রমিকরা। এ সময় অবিলম্বে দোকান খোলার অনুমতি না দিলে, নিজেরাই নিজেদের মতো করে দোকান খোলা রাখবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা। গতকাল মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে নারায়ণগঞ্জ দোকান মালিক-শ্রমিকদের সমন্বয়ক আরিফ দিপু বলেন, আজকে যে সময় আমাদের দোকানে কাজ করার কথা, সেখানে রাস্তায় নামতে হচ্ছে। বিভিন্ন গার্মেন্ট, কল-কারখানায় আর্থিক অনুদান দেয়া হলেও আমাদের কোনো অনুদান, কোনো প্রণোদনা দেয়া হয়নি। আমরা কর্মচারীদের বেতন দিতে পারিনি। জেলা প্রশাসকের কাছে শ্রমিকদের ভোটার আইডি কার্ড পর্যন্ত আমরা জমা দিয়েছি। কিন্তু কোনো সাহায্য করা হয়নি।

লকডাউন ভেঙে সিলেটে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ : পথচলায় শারীরিক দূরত্ব না মানায় জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু সিলেটে লকডাউন ভেঙে রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন শতশত ব্যবসায়ী। সরকার ঘোষিত সাতদিনের লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে গতকাল মঙ্গলবার নগরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন সিলেটের সর্বস্তরের ব্যবসায়ীরা। মিছিল পরবর্তী মানববন্ধন থেকে তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা পরিচালনার জন্য দোকানপাট খুলে দেয়ার দাবি জানান। বিক্ষোভ-মিছিলটি নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কোর্ট পয়েন্টে এসে মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনা করে লকডাউন প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ দিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি। ব্যবসায়ীরা বলেন, আমাদের মধ্যে অনেকেই ঋণগ্রস্ত। গত বছর বিভিন্ন উৎসবে ব্যবসা করতে না পারায় এখনও অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত। দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, ভ্যাট-টেক্স দেয়া এবং কর্মচারী বেতন দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এ কারণে ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে তাদের রাস্তায় বসা ছাড়া উপায় থাকবে না। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

রাজশাহীতে লকডাউন ভেঙে দোকান খুলেছে ব্যবসায়ীরা : লকডাউন ভেঙে সচল রয়েছে বিভাগীয় শহর রাজশাহী। লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে সড়কে যানবাহন চলাচল আরও বেড়েছে। এছাড়া হাট ও বাজার, দোকান ও মার্কেট সর্বত্রই জনসমাগম বেড়েছে। প্রথম দিনের ঘোষণার পর গতকাল মঙ্গলবার থেকে আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও তাদের দোকান খুলে ব্যবসা করছেন। এছাড়া মার্কেটের সামনের ব্যবসায়ীরাও আগের মতো বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। এসব ব্যবসায়ীদের দাবি— তারা শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেই তাদের দোকানপাট খোলা রেখেছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অনেক ক্রেতাই জানেন না যে, দোকান খোলা আছে। তাই ক্রেতা কম। জানাজানি হলে আগের মতোই ক্রেতা থাকবে বলেও দাবি ব্যবসায়ীদের।

লকডাউন ভঙ্গ করে মার্কেটের দোকান খোলা— এমন প্রশ্নে রাজধানী ফ্যাশানের শহীদুল ইসলাম বলেন, গতবছর ঠিক এমন সময় দেশে লকডাউন ছিলো। এর মধ্যেই পহেলা বৈশাখ গেছে, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা গেছে। তারা ব্যবসা করতে পারেননি। ঈদের জন্য যখনই পণ্য কিনে মজুদ করেছেন ঠিক তার পরপরই লকডাউন দেয়া হয়েছিল। এতে ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েন। এরপর টানা একটা বছর কেটে গেছে করোনায়। এ সময়ে ব্যবসায়ীরা নিজেদের পুঁজি ভেঙে খেয়েছেন। এবছর আবার ঠিক ঈদের আগেই লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এখন ব্যবসা করতে না পারলে তাদের পথে বসতে হবে।

সিরাজগঞ্জে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন : লকডাউনে দোকানপাট খোলা রাখার দাবিতে সিরাজগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে শহরের এস এস রোডে সিরাজগঞ্জ শহর ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে তারা বলেন, এমনিতে দীর্ঘ এক বছর ধরে করোনা মহামারির কারণে ব্যবসায়ীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তার মধ্যে আবার যদি দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়, তাহলে চরম বিপর্যয়ে পড়বেন তারা। তাই মঙ্গলবারের মধ্যে দোকানপাট খোলার অনুমতি দিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সিরাজগঞ্জ শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোস্তফা তালুকদারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ফেরদৌস রবিনসহ সমিতির অন্যান্য নেতারা।

দোকান খোলার দাবিতে বরিশালে বিক্ষোভ : স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট সময় বেধে দিয়ে দোকান-পাট খোলা রাখার দাবিতে বরিশালে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ী ও দোকান শ্রমিকরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে চকবাজারে ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাদের সঙ্গে নগরের কাঠপট্টি, ফজলুল হক অ্যাভিনিউ, গীর্জামহল্লা এলাকার ব্যবসায়ীরাও যুক্ত হন।এ সময় তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট সময় বেধে দিয়ে দোকান-পাট খোলা রাখার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে নিবৃত করার চেষ্টা করেন।

বগুড়ায় ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ : বগুড়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে দিনের কিছু সময় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথা চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন ইলেকট্রিক ব্যবসায়ীরা। তারা নানা স্লোগান দিতে থাকেন। পরে তারা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত বছর লকডাউনের কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেটা পুষিয়ে না উঠতেই আবার লকডাউন হওয়ায় ঋণ নিয়ে পরিচালিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রায় চিরতরে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সামনে রমজান ও ঈদ উপলক্ষে সীমিত পরিসরে হলেও মার্কেট খুলে দেয়ার দাবি জানান তারা। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।

আমারসংবাদ/জেআই