Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

বাদ পড়েছে ৬.৫৮ লাখ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে ৩, ২০২১, ০৮:১৫ পিএম


বাদ পড়েছে ৬.৫৮ লাখ মানুষ

চলতি বছর করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন পেশার স্বল্প আয়ের প্রায় ৩৫ লাখ মানুষকে নগদ সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে সরকার। তবে উপকারভোগীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ও মোবাইল সিম নিবন্ধনের তথ্যের অমিলসহ নানা অসঙ্গতিতে সুবিধাভোগীর তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ছয় লাখ ৫৮ হাজার ৯২২ জন। গতকাল সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, বহুমুখী যাচাইয়ের পর বিভিন্ন ধরনের অসঙ্গতি থাকায় তাদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার অযোগ্য বিবেচনা করা হয়।

বিবরণে বলা হয়েছে, গত বছর দেয়া অর্থ উত্তোলন না করায় ফেরতপ্রাপ্ত ইলেকট্রিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) তিন লাখ ৩৪ হাজার ১৯৩ জন, সরকারি কর্মচারী ৮২ জন, সরকারি পেনশনভোগী ৫০৭, পাঁচ লাখ টাকার অধিক সঞ্চয়পত্রের মালিক দুই হাজার ৫৮৪ জন, অন্যান্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্তি তিন লাখ ২১ হাজার ৩৪৪ জন ও মোবাইল অ্যাকাউন্ট মিসম্যাচ যেমন-হিসাব বন্ধ, এজেন্ট অ্যাকাউন্ট, ব্লক অ্যাকাউন্ট ইত্যাদি কারণে ২১২সহ মোট ছয় লাখ ৫৮ হাজার ৯২২ জন।

সূত্র বলছে, ২০২০ সালের ১২ মে প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে সরকার থেকে ব্যক্তি (জিটুপি) পদ্ধতিতে ‘নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান কর্মসূচি’ উদ্বোধন করেন। এজন্য মাঠপর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে আইসিটি বিভাগের আওতায় সরকারের সেন্ট্রাল এইড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিএএমএস) সফটওয়্যারের মাধ্যমে মোট ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ১৫৪ জনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। পরে এই তালিকা অর্থ বিভাগে পাঠানো হয়। অর্থ বিভাগ পুনরায় বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাই শেষে আর্থিক সহায়তার জন্য ৩৪ লাখ ৯৭ হাজার ৩৫৩ জনের নাম তালিকাভুক্ত করে। তালিকাভুক্তদের জনপ্রতি ২৫০০ টাকা করে দেয়া হয়। এতে সরকারের ব্যয় হয় মোট ৮৭৯ কোটি ৫৮ লাখ ৪২ হাজার ৭৯৫ টাকা। বাদ যাওয়া ১৪ লাখ ৩২ হাজার ৮০১ জনের তথ্যে বিভিন্ন ক্রটি থাকায় তাদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়নি। চলতি বছরও একই কর্মসূচির আওতায় দ্বিতীয়বারের মতো নগদ সহায়তা দিতে গত বছরের তালিকাকে ভিত্তি ধরে করার নির্দেশনা দেয়া হয়। পরে অর্থ মন্ত্রণালয় ওই তালিকা অনুযায়ী সব তথ্য পুনরায় যাচাই-বাছাই করে। বহুমুখী যাচাইয়ের পর আগের উপকারভোগী ৩৪ লাখ ৯৭ হাজার ৩৫৩ জনের মধ্যে ২৮ লাখ ৩৮ হাজার ৪৩১ জনের তথ্য সঠিক পাওয়া যায়। এরাই ২০২১ সালে নগদ আর্থিক অনুদান পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হয়। আর আগের তালিকা থেকে বাদ পড়েন ছয় লাখ ৫৮ হাজার ৯২২ জন।

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে নগদ সহায়তার টাকা দেয়া হবে। এর মধ্যে ডাক বিভাগের ‘নগদ’র মাধ্যমে দেয়া মোট টাকার ৪৭ শতাংশ বা ৩৩৪ কোটি ৯১ লাখ ৮০ হাজার ২৩০ টাকা, বিকাশের মাধ্যমে ২৯ শতাংশ বা ২০৪ কোটি ৮৫ লাখ ৩২ হাজার ৮৯০ টাকা, রকেটে ২১ শতাংশ বা ১৫১ কোটি ২৩ লাখ ৬২ হাজার ৫৫৫ টাকা এবং ব্যাংক পেমেন্ট করা হবে তিন শতাংশ বা ২২ কোটি ৮৫ লাখ ৭৮ হাজার ২৯০ টাকা। এবার শিওর ক্যাশ এ সংক্রান্ত সেবা প্রদান না করায় প্রতিষ্ঠানটিকে বাদ দেয়া হয়। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে নগদ সহায়তার টাকা দিতে নানা ধরনের অনিয়মের তথ্য পাওয়া যায়। ওই সময় অনেক সচ্ছল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে।

আমারসংবাদ/জেআই