Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

সংকট মোকাবিলায় সফল শেখ হাসিনা

রফিকুল ইসলাম

মে ৫, ২০২১, ০৭:৫৫ পিএম


সংকট মোকাবিলায় সফল শেখ হাসিনা
  • তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে সুফল পাচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষক শ্রমিক ও হতদরিদ্ররা
  • করোনাকালীন সহায়তা বণ্টনে কঠোর অবস্থান গ্রহণ
  • কর্মঘণ্টা ভুলে সরকার-দলে কাজ করছেন সমান তালে
  • সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় কঠোর অবস্থান
  • জিরো টলারেন্স নীতিতে দৃঢ় ও সিদ্ধান্তে অটল
  • ভিডিও কনফারেন্সে সবার সাথে যোগাযোগ রাখছেন

প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। স্থবির বাংলাদেশও। তবে এই সংকটের শুরু থেকে মানুষকে বাঁচাতে বহুমাত্রিক উদ্যোগ গ্রহণ এবং একের পর এক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনায় মানুষের জীবন ও জীবিকা সচল রাখতে কর্মঘণ্টা ভুলে শক্ত হাতে একাই সামলে নিচ্ছেন সবকিছু। কঠোর পরিশ্রম ও দূরদর্শী নেতৃত্বে সবকিছুতেই সার্বক্ষণিক মনিটরিং করেছেন সরকারপ্রধান। 

তথ্যমতে, দীর্ঘ এক বছর করোনা থাকায় দিশাহারা দেশের অসহায়, দরিদ্র, শ্রমজীবী, নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের কর্মহীন মানুষ। কর্মহীন এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার ও দলের পক্ষ থেকে তাদের বাড়ি বাড়ি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী। করোনা সংকটে যেসব মানুষ চক্ষুলজ্জার ভয়ে অন্যের কাছে হাত পাততে পারেনি, তাদের তালিকা করে ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেয়া হয়। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে ফের ত্রাণ তৎপরতায় সক্রিয় হয়েছে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা। তারা প্রতিদিন ঈদসামগ্রী মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন। একই সাথে সাধারণ মানুষের করোনার সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করছেন।

ঈদকে সামনে রেখে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঈদ উপহার পাচ্ছেন কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিক, গৃহকর্মী, রিকশা ও ভ্যানচালক, মোটরশ্রমিকসহ কর্মহীন বিভিন্ন পেশার ক্ষতিগ্রস্ত ৩৬ লাখ পরিবার। গত রোববার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা সংক্রমণের এই দুঃসময়ে দেশব্যাপী সাংবাদিকদের সহযোগিতার জন্য ‘সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট’কে ১০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।  এর আগে দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে প্রণোদনা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে ছোট-বড়, মাঝারি-ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যেমন প্রণোদনা পেয়েছেন, বাদ যাননি করোনাযোদ্ধা চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টরাও। করোনায় শতভাগ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক নিয়োগ ও সুরক্ষাসামগ্রী নিশ্চিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা থেকে বাদ পড়েননি মসজিদের ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিন, মাদ্রাসার শিক্ষক, নন-এমপিও শিক্ষক, গার্মেন্ট শ্রমিক, গ্রামপুলিশ ও প্রতিবন্ধীরা। করোনাকালে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সহযোগিতা পেয়েছে দেশের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্যও বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছিলেন সরকারপ্রধান।

করোনার সংকটের শুরু থেকে মানুষকে বাঁচাতে বহুমাত্রিক উদ্যোগ গ্রহণ এবং একের পর এক কার্যক্রম ব্যস্তবায়ন করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কর্মঘণ্টা ভুলে শক্ত হাতে একাই সামলে নিচ্ছেন সবকিছু। মানুষের জীবন ও জীবিকা সচল রাখতে গণভবন থেকে তৃণমূলে মাঠ প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগাযোগ করছেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। স্বাস্থ্য, ব্যবসা-বাণিজ্যে, চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম, মানবিক সেবা সহ সবকিছুতেই সার্বক্ষণিক মনিটরিং করেছেন সরকারপ্রধান। এ ছাড়া এখন নিয়মিত মন্ত্রিসভার বৈঠকসহ নানা কর্মসূচিতে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি। করোনায় থেমে থাকতে দেননি চলমান মেগা প্রকল্পগুলোর নির্মাণকাজ। তার নেতৃত্বে অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠায় অর্থনীতিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। প্রয়োগ হচ্ছে করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ। বিনামূল্যে দেশের সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে টিকা দিচ্ছেন সরকারপ্রধান। অথচ এখনো অনেক দেশ করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করতে পারেনি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফল, আগে টিকা পেয়েছে এবং সফলভাবে প্রথম ডোজ প্রয়োগ শেষ করেছে।   করোনায় কৃষি উৎপাদন এবং শ্রমিক সংকটে থাকা কৃষকের ধান কেটে দিতে দল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনার পর কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দেন আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেক লীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মারা। তারা নিজ নিজ উদ্যোগে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন। আর এই সকল কার্যক্রম সরাসরি মনিটরিং করছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কৃষকের পাশে থাকায় দেশ ও দেশের বাইরে প্রশংসা কুড়িয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, টানা এক যুগের বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। ক্ষমতা  এই দীর্ঘ সময়ে কঠোর পরিশ্রম এবং সঠিক নেতৃত্বের কারণে দেশ ও দেশের বাইরে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ একযুগে এমন প্রশংসা থাকলেও হাতেগোনা কিছু নেতা এবং দলীয় প্রতীকের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ব্যক্তিগত অপকর্মের কারণে কিছুটা বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্য পড়তে হয় আওয়ামী লীগকে। তবে ওই সকল অপকর্মের সাথে যুক্ত নেতাদের ছাড় দেননি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। বহিষ্কার করেছেন ত্রাণ অনিয়মের সাথে জড়িত থাকা জনপ্রতিনিধিদের। সরকারের পাশাপাশি দলীয় বিষয়ে কঠোর অবস্থানে বঙ্গবন্ধুকন্যা। বিশেষ করে ক্ষমতার দীর্ঘ সময়ে বিএনপি-জামায়াত-ফ্রিডম পার্টি এবং স্বাধীনতাবিরোধীরা দেদারে আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছেন। তারা নানামুখী সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে কোন্দলে সৃষ্টি করেছেন। আর এই সকল সুযোগ-সন্ধানীদের সরাসরি মদদ দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের দলীয় এমপি-মন্ত্রী এবং জেলা উপজেলা পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতারা। তৈরি করেছেন ভাই-লীগ, এমপি-লীগ, হাইব্রিড-লীগ । তবে এই সকল হাইব্রিড ও তাদের মদদদাতাদের তালিকা তৈরি করেছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে এই তালিকা তৈরি করেছেন। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।      

করোনার এই সংকটের মধ্যেও সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদককারবারি, ক্যাসিনো, দুনীতিবাজ, চাঁদাবাজ, অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়া, ধর্মের নামে অপরাজনীতি সহ নানামুখী অপকর্মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে নীতিতে অটল রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ ও সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধেও কঠোর অবস্থানে রয়েছেন তিনি। এই সকল অপকর্মের সাথে জড়িতদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। সরকারপ্রধানের এমন নির্দেশনায় পর এই সকল অপকর্মের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বিশেষ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর ঘিরে গত ২৩ মার্চ থেকে হেফাজতে ইসলাম তাণ্ডব চালানো শুরু করে। তারা নরেন্দ্র মোদির বিরোধিতার নামে দেশব্যাপী তাণ্ডবলীলা অগ্নি-সন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও, সরকারি অফিস ভাঙচুর, বাড়িঘর ভাঙচুর, রেললাইনে অগ্নিসংযোগ, বাসে আগুন, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। তাদের এই তাণ্ডবে মৃত্যুবরণ করেন বেশ কিছু সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে রাখতে সরকার ‘ধীরে চলো’ নীতিতে থাকলেও নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়। হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকসহ বেশ কিছু শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্যোগ-দুর্বিপাকে বিপন্ন মানবতার পাশে দাঁড়িয়ে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন ‘৭৫ পরবর্তীকালে কোনো সরকারপ্রধান বা রাজনৈতিক নেতা এমন নজির স্থাপন করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা দেশে দলীয় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু একটা দল ঢাকায় বসে শুধু লিপ সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে। তারা একেক সময় একেক আন্দোলনের ওপর ভর করে ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতায় লিপ্ত। তারা করোনার এই সংকটের সময়েও সহিংসতায় উস্কানি দিচ্ছে।

আমারসংবাদ/জেআই