Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতা চায় বিজিএমইএ

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

জুন ৭, ২০২১, ০৬:৪০ পিএম


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতা চায় বিজিএমইএ

করোনা মহামারিতে পোশাক শিল্প একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আবারো তৈরি পোশাক শিল্পকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বৈরী প্রভাব মোকাবিলা করে পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে নীতি সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। গতকাল সোমবার বিজিএমইএ পক্ষ থেকে এক বার্তায় এ সহযোগিতার কথা জানানো হয়েছে।

এর আগে রোববার  বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে বিজিএমইএর একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কিছু প্রস্তাব দেন। বিজিএমইএ প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি এস এম মান্নান (কচি), সহ-সভাপতি মো. শাহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক আসিফ আশরাফ,পরিচালক মো. খসরু চৌধুরী এবং সাবেক পরিচালক মো. মুনির হোসেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনাকালে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, করোনা মহামারিতে পোশাক শিল্প একটি ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। এ অবস্থায় পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা অর্থনীতির চাকা সচল রাখা এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্যোক্তারা মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে পোশাক শিল্প সংক্রান্ত ইস্যুগুলো সহজীকরণের উদ্যোগ নেয়া হলে তা শিল্পকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিজিএমইএর প্রস্তাবগুলো হলো : পোশাক শিল্প খাতকে এ সংকটময় সময়ে টিকিয়ে রাখার নিমিত্তে আংশিক রপ্তানিমূল্য অপ্রত্যাবাসিত থাকলে অন্য প্রত্যাবাসিত রপ্তানিমূল্যের বিপরীতে রপ্তানি ভর্তুকি ও নগদ সহায়তার আবেদন গ্রহণপূর্বক প্রক্রিয়াকরণ করা। ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকের বন্ডেড ওয়্যার হাউজ লাইসেন্স এবং আইআরসি দাখিলের নিমিত্তে চাপ সৃষ্টি না করার জন্য সব তফসিলি ব্যাংকের অনুকুলে নির্দেশনা জারি করা। বৈদেশিক বাণিজ্য লেনদেনের ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা বিধি শিথিলকরণ বিষয়ে জারিকৃত সার্কুলারের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো। দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের স্বার্থে তারল্য সংকট নিরসনের লক্ষ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা প্রদানের জন্য সময় এক বছর বাড়িয়ে দেয়া। ইএক্সপি অভারডিউ হওয়ার ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেন রফতানিকারকদের ইডিএফ তহবিল ব্যবহার, নগদ সহায়তা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা অব্যাহত রাখে সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া। নগদ সহায়তার আবেদনের সঙ্গে পরিবহন ডকুমেন্ট হিসেবে এফসিআরকে গ্রহণযোগ্যতা দেয়ার বিষয়ে জারি করা এফই সার্কুলার সংশোধন করা।

শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য আর্থিক প্রণোদনা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণ পরিশোধের সময়কাল ২ বছরের পরিবর্তে ৫ বছর করা।

রপ্তানিকারকদের জন্য ব্যাংকিং সংক্রান্ত একটি বিশেষ আইনি সুরক্ষা ব্যবস্থা করা। যার মাধ্যমে রপ্তানিকারকরা দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের বাতিল ও অনিশ্চিত হয়ে যাওয়া রপ্তানি কার্যাদেশ বা পেমেন্টের বিপরীতে ব্যাক টু ব্যাক এলসির দায়-দেনা পরিশোধ সংক্রান্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে আইনগতভাবে সুরক্ষা পাবেন। পোশাক শিল্পের তারল্য সংকট নিরসনে সহায়তা ও রপ্তানি সক্ষমতা বজায় রাখতে প্যাকিং ক্রেডিটের বিপরীতে সুদের হার ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা। করোনাভাইরাসের অতিমারি সময়ে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতকে টিকিয়ে রাখতে ইডিএফ ফান্ডের সুদের হার ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে দেড় শতাংশ করা। ঋণ শ্রেণিকরণের সময়সীমা বাড়ানো।

গভর্নর ফজলে কবির বলেন, পোশাক শিল্প জাতীয় অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এই শিল্পকে সম্ভাব্য সব সহযোগিতা প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, বিজিএমইএ সভাপতির প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে যেগুলো যৌক্তিক, সেগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করবে। আর যেগুলো বিষয়ে আদেশ জারি করা সম্ভব হবে, সেসব বিষয়ে আদেশ জারির জন্য ব্যাংক উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

আমারসংবাদ/জেআই