Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

মানসম্মত বিদ্যুৎ নিশ্চিতে তৎপর পাওয়ার সেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ৮, ২০২১, ০৫:৫৫ পিএম


মানসম্মত বিদ্যুৎ নিশ্চিতে তৎপর পাওয়ার সেল

বর্তমান সরকারের গত সাড়ে ১২ বছরে সর্বোচ্চ সাফল্য এসেছে বিদ্যুৎ খাতে। খাতটির অভাবনীয় সাফল্যে ইতোমধ্যে ৯৯ শতাংশ জনগোষ্ঠী বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। বিদ্যুতে গ্রাহক সংখ্যা এখন ৪ কোটি। সরকারের যাত্রাকালে ২০০৯ সালে গ্রাহক সংখ্যা ছিলো ১ কোটি ৮ লাখ অর্থাৎ ২ কোটি ৯২ লাখ গ্রাহক বেড়েছে। গ্রাহক বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সেবার মান। বিশাল অঙ্কের ৪ কোটি গ্রাহক সকলকেই নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে নানামুখি উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২০২১ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ঘর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করার টার্গেটও নিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎ বিভাগের এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করছে পাওয়ার সেল। 

পাওয়ার সেল সূত্র মতে, ২০২১ সালে ২৪ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করেছিল সরকার। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। গত ৩ জুন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিলো ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট, বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৫২২৭ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভ ও নবায়ণযোগ্য জ্বালানিসহ), অর্থাৎ ২০ হাজার ২৮৫ মেগাওয়াট বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত ২৫ এপ্রিল এযাবৎকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ ১৩,৫২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল সর্বোচ্চ ১৩,৩৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছিল। সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সময় ২০০৯ সালে  দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ছিলো ২৭টি। বর্তমানে ১৪৯টি, ১২ বছরের নতুন স্থাপিত হয়েছে ১২২টি। গ্রামীণ বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণে বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণের পর বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর হার ৩৬ শতাংশ থেকে ৯৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। মোট সঞ্চালন লাইন ২০০৯ সালে ছিলো ৮ হাজার সা.কি.মি., বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৭৪৪, অর্থাৎ বেড়েছে ৪ হাজার ৭৪৪ সা.কি.মি.। বিতরণ লাইন ছিলো ২ লাখ ৬০ হাজার, বর্তমানে হয়েছে ৬ লাখ ১২ হাজার, বেড়েছে ৩ লাখ ৫২ হাজার। বিদ্যুৎ সুবিধাভোগীদের হার ছিলো ৪৭ শতাংশ, বর্তমানে হয়েছে ৯৯ শতাংশ। এর মধ্যে সোলার হোম সিস্টেমে গ্রাহক রয়েছেন ৬০ লাখ। ইতোমধ্যে  প্রি-পেইড মিটারস্থাপন করা হয়েছে ৩৮ লাখ ৭১ হাজার। গত ১২ বছরে বিতরণ সিস্টেম লস কমেছে ৫.৬০ শতাংশ। ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে সিস্টেম লস ছিলো ১৪.৩৩, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে সিস্টেম লস হয়েছে ৮.৭৩। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৫১২ কিলোওয়াট ঘণ্টা। ২০০৯ সালে ছিলো ২২০ কিলোওয়াট ঘণ্টা। অর্থাৎ বেড়েছে ২৯২ কিলোওয়াট।

বিদ্যুৎ সংযোগ, অভিযোগ সেবা, বিলিং ও মিটারিং— এই চারটি বিষয়ের ওপর ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিটেশন কোম্পানি (আইআইএফসি)র উদ্যোগে ‘গ্রাহক সন্তুষ্টি জরিপ’ করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার ৭০০ গ্রাহক ও কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ৭০০ গ্রাহক অর্থাৎ মোট ১৪০০ গ্রাহক নিয়ে এ জরিপ পরিচালিত হয়েছে। এর মধ্যে আবাসিক গ্রাহক ৭১ শতাংশ এবং বাণিজ্যিক ও অন্যান্য গ্রাহক ২৯ শতাংশ। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)-এর ৩৯ শতাংশ, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর ৩৯ শতাংশ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)-এর ২২ শতাংশ গ্রাহক এ জরিপে অংশগ্রহণ করেছে। সার্বিকভাবে ৮৮ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ সেবায় সন্তুষ্ট বলে জরিপে উঠে এসেছে। বিদ্যুৎ সংযোগে ৯৪ শতাংশ, অভিযোগ সেবায় ৭৭ শতাংশ , বিলিং-এ ৯৫ শতাংশ ও মিটারিং সেবায় ৮৮ শতাংশ গ্রাহক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

পাওয়ার সেল সূত্র মতে, শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ স্লোগানকে ধারণ করে শতভাগ গ্রাহককে সন্তুষ্ট সেবার আওতায় আনার জন্য সরকার কাজ করছে। বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এমপি নির্দেশনায় পাওয়ার সেল মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইনের নেতৃত্বে  কাজ করছে পাওয়ার সেলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আগামী  ২০৩০ সাল নাগাদ ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ৪১ সাল নাগাদ ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সে লক্ষ্য পূরণের কাজ করছে পাওয়ার সেল।

আমারসংবাদ/জেআই