Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

সগৌরবে এগিয়ে যাচ্ছে বিএসএমএমইউ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ৯, ২০২১, ০৯:৩৫ পিএম


সগৌরবে এগিয়ে যাচ্ছে বিএসএমএমইউ

মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হলো চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, গুণগত সেবা আর গবেষণা। ১৯৯৮ সালে দেশের একমাত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) যাত্রা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিএসএমএমইউ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। শুধু কথায় নয়, বাস্তবেই দেশের মানুষের চিকিৎসাসেবার আশা-ভরসা ও আস্থার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের চিকিৎসা জগতের বড় মাইলফলক স্পর্শ করা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা, শিক্ষা, উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, চিকিৎসাসেবা, চিকিৎসার মান উন্নয়ন, প্রশাসনিক, সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক সংরক্ষণমূলক কার্যক্রম, বিভিন্ন প্রকল্প ও ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম, স্বীকৃতিসহ সকল ক্ষেত্রেই রয়েছে অভাবনীয় সাফল্য। দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায়ও দেশসেরা এই প্রতিষ্ঠানের রয়েছে অভাবনীয় সাফল্য। ইতোমধ্যে করোনা রোগীর চিকিৎসায় সাধারণ ও আইসিইউ শয্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। পোস্ট কোভিড রোগীদের চিকিৎসাও এগিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি দেশে শনাক্ত হওয়া ব্ল্যাক ফাঙ্গাসেরও চিকিৎসা হচ্ছে বিএসএমএমইউতে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশের প্রথম রোগী বান্ধব সবুজ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কাজ শেষের দিকে। চলতি বছরের ডিসেম্বরে নতুন এই হাসপাতালের কার্যক্রম উদ্বোধনের কথা রয়েছে। একইসাথে আরও একটি মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি অ্যান্ড সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বিএসএমএমইউ ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট ক্যাপাবিলিটি সম্পন্ন নেতৃত্বের প্রয়োজন ছিলো। যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত উচ্চশিক্ষা ও সর্বাধুনিক রোগীর সেবা নিশ্চিতে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম। যার অতীত রেকর্ড, অভিজ্ঞতা এবং একাডেমিক এক্সিলেন্স বিশেষ করে সততা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে যাবেন অনন্য উচ্চতায়। শেষ পর্যন্ত এমন গুণের মানুষ কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন হিসেবে গত মার্চের শেষ সপ্তাহে বিএসএমএমউর ১১তম উপাচার্য হিসেবে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদের আদেশপ্রাপ্ত হয়ে আগামী তিন বছরের জন্য নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগ। গত ২৯ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিলন হলে অনুষ্ঠানিকভাবে ভারপ্রাপ্ত ভিসি অধ্যাপক ডা. রফিকুল আলমের কাছ থেকে তিনি এ দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এর আগে তিনি বিএসএমএমইউর কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়াও তিনি ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। দায়িত্ব গ্রহণের পরই নেমে পড়েন সংস্কারে। সম্প্রতি তার হাত ধরেই কেবিনের শয্যা সংখ্যা ২০০-তে এবং আইসিইউ বেড বৃদ্ধি করে ২০টিতে উন্নীত করা হয়। বেতার ভবনে ১০০ শয্যার নতুন করোনা ইউনিট চালু করা হয়। বেতার ভবনে রোগী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৫০টি শয্যা চালু রয়েছে এবং আরও ৫০টি শয্যা চালুর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কেবিন ব্লকে আরও ১০টি আইসিইউ বেড বৃদ্ধির কার্যক্রম চলছে। এখানে করোনা ইউনিটের শয্যা আরও বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে।

ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএসএমএমইউর সকল উন্নয়ন শেখ হাসিনার হাত ধরেই হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ চিকিৎসক গড়ে তোলা হচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল হিসেবে বাস্তবায়িত হলে চিকিৎসার জন্য রোগীদের বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা একেবারেই হ্রাস পাবে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ব্লকে কেবিনের শয্যা সংখ্যা ২০০-তে এবং আইসিইউ বেড বৃদ্ধি করে ২০টিতে উন্নীত করা হয়। বেতার ভবনে ১০০ শয্যার নতুন করোনা ইউনিট চালু করা হয়। বেতার ভবনে রোগী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৫০টি শয্যা চালু রয়েছে এবং আরও ৫০টি শয্যা চালুর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কেবিন ব্লকে আরও ১০টি আইসিইউ বেড বৃদ্ধির কার্যক্রম চলছে। এখানে করোনা ইউনিটের শয্যা আরও বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে। কিন্তু এই নিরন্তর প্রচেষ্টার পরও কেউ কেউ তার মনগড়া বক্তব্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। অপপ্রচার করছে। গুজব ছড়াচ্ছে। অহেতুক সমালোচনা করছে। যা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়।

বিএসএমএমইউ সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশের প্রথম ৭০০ শয্যাবিশিষ্ট সবুজ সুপার বিশ্বমানের স্পেশালাইজড হাসপাতাল চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে। হাসপাতালটিতে একজন রোগী একই সেন্টার থেকে সব ধরনের সেবা নিতে পারবেন। হার্ট, কিডনি, লিভারসহ বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগে অক্রান্ত রোগীদের একই সেন্টার থেকে বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব হবে। বিশ্বমানের সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতিতে সমৃদ্ধ থাকবে হাসপাতালটি। রোগীদের সব রেকর্ড রাখা হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও রাখা হবে। ইনফরমেশন সেন্টার চালু করার মাধ্যমে রোগী ও হাসপাতাল পরিচালনা হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে। বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধাসহ জনসাধারণ এখানে সাশ্রয়ীমূল্যে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসাসেবা পাবেন। এদিকে প্রথম সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কাজ শেষ না হতেই বিএসএমএমইউতে আরও একটি মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি অ্যান্ড সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বপাশে বাংলাদেশ বেতার ভবনে ‘ইস্টাবলিশমেন্ট অব মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি সুপার স্পেশালাইজড হসপিটাল আনডার বিএসএমএমইউ, ফেজ-২’ এর অধীনে এই হাসপাতালটি নির্মিত হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এই হাসপাতালটি নির্মাণ করা হবে। এ উপলক্ষে সম্ভাব্য হাসপাতালটির ফিজিবিলিটি স্টাডিবিষয়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ সভাও গেলো ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আমারসংবাদ/জেআই