Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

নির্ভরযোগ্য সঞ্চালনে পাওয়ার গ্রিড

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ১২, ২০২১, ০৬:১০ পিএম


নির্ভরযোগ্য সঞ্চালনে পাওয়ার গ্রিড

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২০২১ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ঘর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করতে কাজ করছে সরকার। লক্ষ্যপূরণে ২০২১ সালে ২৪ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করেছিল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। গত ৩ জুন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে, বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এসে দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ২২৭ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ)। উৎপাদিত বিদ্যুৎ মানসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্যভাবে সঞ্চালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। অর্থাৎ সরকারের গত সাড়ে ১২ বছরে বিদ্যুৎ খাতে যে সাফল্য এসেছে তার অন্যতম অংশীদার পিজিসিবি। দক্ষতার সাথে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের কারণে সারা দেশে নিরাপদ বিদ্যুৎ সরবরাহের পাশাপাশি গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে।

পিজিসিবি সূত্র মতে, সরকারের দায়িত্বগ্রহণকালে ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিলো চার হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। বর্তমান সরকারের সময়ে নেয়া পদক্ষেপে আধুনিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির ব্যবহারে ২০ হাজার ২৮৫ মেগাওয়াট উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ৪১ সাল নাগাদ ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সে লক্ষ্য পূরণে কাজ করছে পিজিসিবি। বর্তমানে সারা দেশে সঞ্চালন লাইন রয়েছে ১২ হাজার ৭৪৪ কি.মি। সরকারের দায়িত্ব গ্রহণকালে ছিলো আট হাজার কি.মি, অর্থাৎ বেড়েছে চার হাজার ৭৪৪ কি.মি। ১৫৬টি উপকেন্দ্র পরিচালনা করে পিজিসিবি।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ একমাত্র বিদ্যুৎশক্তি সঞ্চালন প্রতিষ্ঠান। এটি একটি সরকারি সংস্থা, বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সংস্থা। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ গ্রিডগুলো পরিচালনা করে থাকে। বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতের দক্ষতা বৃদ্ধি, জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা এবং উদ্দেশ্য পূরণে গতিশীলতাসহ কার্যকর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশব্যাপী মানসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সঞ্চালন নিশ্চিত করাই সংস্থাটির প্রধান লক্ষ্য।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র মতে, সরকারের গত সাড়ে ১২ বছরে সর্বোচ্চ সাফল্য এসেছে বিদ্যুৎ খাতে। খাতটির অভাবনীয় সাফল্যে ইতোমধ্যে ৯৯ শতাংশ জনগোষ্ঠী বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা এখন চার কোটি। সরকারের যাত্রাকালে ২০০৯ সালে গ্রাহক সংখ্যা ছিলো এক কোটি আট লাখ। অর্থাৎ দুই কোটি ৯২ লাখ গ্রাহক বেড়েছে। গ্রাহক বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সেবার মান। বিশাল অঙ্কের চার কোটি গ্রাহক সকলকেই নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে নানামুখী উদ্যোগ নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ। ২০০৯ সালে দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ছিলো ২৭টি। বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ১৪৯টি, ১২ বছরে নতুন স্থাপিত হয়েছে ১২২টি। ২০০৯ সালে গ্রিড সাব-স্টেশন ক্ষমতা ছিলো ১৫ হাজার ৮৭০ এমভিএ। বর্তমানে হয়েছে ৫০ হাজার ৭৪। অর্থাৎ বেড়েছে ৩৪ হাজার ২০৪ এমভিএ। গ্রামীণ বিদ্যুতায়ন সমপ্রসারণে বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণের ফলে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর হার মাত্র ৩৬ শতাংশ থেকে ৯৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। মোট সঞ্চালন লাইন ২০০৯ সালে ছিলো আট হাজার কি.মি, বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৭৪৪, অর্থাৎ বেড়েছে চার হাজার ৭৪৪ কি.মি। বিতরণ লাইন ছিলো দুই লাখ ৬০ হাজার, বর্তমানে হয়েছে ছয় লাখ ১২ হাজার, বেড়েছে তিন লাখ ৫২ হাজার। বিদ্যুৎ সুবিধাভোগীদের হার ছিলো ৪৭ শতাংশ, বর্তমানে হয়েছে ৯৯ শতাংশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিদ্যুৎ খাতের সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি। বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া যোগদান করার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটির কাজে নতুন গতি এসেছে। দক্ষতা কাজে লাগিয়ে প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছেন তিনি। নানা উদ্যোগ এবং কঠোর নির্দেশনায় করোনা সংকটেও ঝুঁকি নিয়েই মাঠে কাজ করছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পিজিসিবির কোম্পানি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আজাদ বলেন, বিদ্যুৎ খাতের কার্যক্রম সারা দেশে বিস্তৃত। বিদ্যুতের সঙ্গে প্রতিটি মানুষ সম্পৃক্ত। বিস্তৃত খাতটিতে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সঞ্চালন নিশ্চিতে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি কাজ করে থাকে।

আমারসংবাদ/জেআই