Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

প্রণোদনা ঋণ বিতরণে জয়িতা ফাউন্ডেশন

জুন ২০, ২০২১, ০৬:৪৫ পিএম


প্রণোদনা ঋণ বিতরণে জয়িতা ফাউন্ডেশন

করোনা পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করা এবং পল্লী এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের দ্বিতীয় দফার প্রণোদনার আওতায় নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে স্বল্পসুদে সহজ শর্তে ঋণ বিতরণ করতে যাচ্ছে জয়িতা ফাউন্ডেশন। ক্ষুদ্র, মাঝারি, প্রান্তিক, কুটিরশিল্প নিয়ে যেসব নারী উদ্যোক্তা কাজ করছেন তাদের জন্যই চলতি জুনের মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে দেশব্যাপী ১০ কোটি টাকার এই ঋণ বিতরণ করবে সংস্থাটি।

এর আগে গত মার্চ মাস নাগাদ ২৯ জন উদ্যোক্তাকে পাঁচ লাখ টাকা হারে অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করেছে সংস্থাটি। তবে এবারের ঋণ বিতরণ কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকছে ব্র্যাক ব্যাংক। ব্যাংকটির যাচাই-বাছাইয়ে যেসব উদ্যোক্তা ঋণ প্রাপ্তির উপযুক্ত হবেন, তাদের মাঝেই এ ঋণ বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এর মধ্যে যাদের দোকান, প্রোডাকশন হাউস, পশু-পাখিসহ যেমন— কবুতরের খামার, গরুর ফার্ম, মুরগির ফার্ম ও মৎসচাষসহ এ যাবতীয় সকল শ্রেণির উদ্যোক্তাসহ নতুন উদ্যোক্তাদের মাঝেই বিতরণ করা হবে করোনাকালীন সরকারের দেয়া অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দকৃত ১০ কোটি টাকার এই ঋণ। জয়িতা ফাউন্ডেশন ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে উদ্যোক্তাদের মাঝে ঋণ প্রদানের এই কার্যক্রমের তথ্য জানিয়ে আসছে। এও জানিয়েছে যে, সংস্থাটির নিবন্ধন ফরম পূরণ করে ফাউন্ডেশনে জমা দিলেই গৃহীত হবে ঋণ আবেদন এবং আবেদন করা উদ্যোক্তাদেরই এ ঋণ  দেয়া হবে।

জয়িতা ফাউন্ডেশনের সহকারী ব্যবস্থাপক (আর্থিক ব্যবস্থাপনা শাখা) মোছা. রাফিকা সুলতানা আমার সংবাদকে বলেন, ‘প্রথম দফার ঋণ বিতরণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গত মার্চ মাস নাগাদ জয়িতা ফাউন্ডেশন ২৯ জন উদ্যোক্তাকে পাঁচ লাখ টাকা হারে ঋণ দিয়েছে। তবে দ্বিতীয় দফায় ১০ কোটি টাকার যে ঋণ বিতরণ করার কথা তা এখন পর্যন্ত কাউকেই দেয়া হয়নি। যা চলতি জুন মাসের মধ্যেই দিতে হবে। আশা করছি, জুনের মধ্যেই এর বিতরণ কার্যক্রম শেষ হবে। যেটা দেশব্যাপী দিতে যাচ্ছে জয়িতা ফাউন্ডেশন। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র, মাঝারি, প্রান্তিক, কুটির শিল্প নিয়ে যেসব নারী উদ্যোক্তা কাজ করছেন তাদেরই এ ঋণ দেয়া হবে। নতুন উদ্যোক্তারাও পাবেন। যাদের প্রোডাকশন হাউস, দোকান কিংবা এরকম আছে, তাদেরই আমরা দিচ্ছি। পশু-পাখি যেমন— কবুতর পালন, মুরগি পালন, গরু পালন— যারা করছেন তারাও পাবেন।’   জানতে চাইলে জয়িতা ফাউন্ডেশনের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘যারা মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন যেমন- মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, জয়িতা ফাউন্ডেশন, শিশু একাডেমিসহ জাতীয় মহিলা সংস্থা, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অধীনেও আবার সমিতি রয়েছে, তার মধ্যে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাদের অধীনেও সমিতি রয়েছে। সেখানকার নিবন্ধিত নারী উদ্যোক্তাদেরও আমরা এই ঋণ দেবো। আবার সেসব সমিতি কিংবা দপ্তরেও যারা নিবন্ধিত নয়, সেসব উদ্যোক্তারাও এ ঋণ পাবেন। আর সে জন্য গণমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে ঋণ আবেদন ফরম পূরণের জন্য আমরা জানানোর চেষ্টা করেছি। আমরা এও জানানোর চেষ্টা করেছি যে, নিবন্ধন ফরম পূরণ করে আমাদের অফিসে জমা দিলেই গৃহীত হবে ঋণ আবেদন এবং ফাউন্ডেশনেও নিবন্ধিত হবেন। আর তাদেরও আমরা ঋণ দেবো।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে ফাউন্ডেশনের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘উদ্যোক্তাদের সম্পদের কী পরিমাণ স্টক আছে, আর স্টক থেকে কী পরিমাণ প্রফিট আসছে, তার ওপর নির্ভর করেই বিতরণের দায়িত্বে থাকা ব্যাংক ঋণ দেবে। টাকা জয়িতা ফাউনেন্ডশনের হলেও লোকবল সংকটের কারণে ব্যাংকের মাধ্যমেই  এই ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমেই বিতরণ করা হবে। ব্র্যাক ব্যাংক যাচাই-বাছাই করে যাদেরকে মনে করবে দেয়া যায় এবং পরিশোধ করতে পারবে, শুধু তাদেরই দেবে। সে ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদি কারও খামার হয় এবং সেখান থেকে প্রতিদিন প্রোডাকশন হয়, প্রচুর পরিমাণ সরবরাহও হয়ে থাকে, এরকম হলে অবশ্যই তার ট্রেড লাইসেন্সও থাকবে। তাদের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। আর এরকম উদ্যোক্তাদেরই এই ঋণ দেয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে একেবারেই যারা তৃণমূল পর্যায়ে উদ্যোক্তা হতে চান, এই ঋণ তাদের জন্য নয়। কারণ ঋণ দেয়ার পর পরিশোধেরও একটা বিষয় রয়েছে। যেহেতু ব্যাংকের মাধ্যমেই এই ঋণ দেয়া হচ্ছে।’ জয়িতা ফাউন্ডেশনের আর্থিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জয়িতা ফাউন্ডেশনের অনুকূলে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু টাকা বিতরণের জন্য যদি ধরেন, একজন উদ্যোক্তার ১০ লাখ কিংবা এক কোটি টাকা লোন আছে এবং সে ঋণখেলাপি। এ বিষয়টা তো জয়িতা ফাউন্ডেশনের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমেই সেটা যাচাই-বাছাই করে দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে জয়িতা ফাউন্ডেশনের এতো লোকবলও নেই। যারা ডিফল্টার আছেন, তারা এই ঋণ পাবেন না। আর ব্যাংকই সেটা খোঁজ নিয়ে ঋণ দেবে।’

আমারসংবাদ/জেআই