Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

মন্ত্রীর নেতৃত্বে সফল সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ১৮, ২০২১, ০৬:০৫ পিএম


মন্ত্রীর নেতৃত্বে সফল সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়

ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার ও উদ্ভাবনীর মাধ্যমে শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত নাগরিক সেবা প্রদানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের টার্গেটে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। যে টার্গেট পূরণের মধ্য দিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘ইনোভেটিভ বাংলাদেশ’ নামে বিশ্বব্র্যান্ডে প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু সেই টার্গেটেরই প্রতিবন্ধক হয়ে আবির্ভূত হয়েছে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া চলমান করোনা মহামারি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ইতোমধ্যে তছনছ হয়ে গেছে। এরপরও চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের সামর্থ্যের মধ্যে সমাজের নিপীড়িত নিগৃহীত মানুষের পাশে থেকে দিনের পর দিন নিরলস কাজ করে যাচ্ছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ যেমন নিজ উদোগে দাঁড়িয়েছেন অসহায়-বঞ্চিত মানুষের পাশে, তেমনি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে শতভাগ জিটুপি ভাতা ও সুরক্ষা সেবায়ও যেনো এ এক নিবেদিতপ্রাণ।

মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের তৎপরতায় একইভাবে চলমান করোনাকালীন সময়েও ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভাতাভোগীদের ভাতা প্রদান করা হচ্ছে, ভাতাভোগীদের কভারেজ বাড়াতে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও কাজ করছে মন্ত্রণালয়ের কর্মীরা, বেড়ে গেছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি পরিচালনায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার, গ্রামীণ পরিবেশে এসেছে শৃঙ্খলা এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির সফল ব্যবহারে গ্রামের সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায়ও পৌঁছে গেছে শহরকেন্দ্রিক সুযোগ-সুবিধা। বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে গত আড়াই বছরে মন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কর্মকাণ্ডে এসেছে সফলতা।

জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়া বর্তমান সরকারের নির্বাচনি অঙ্গীকারের মধ্যে অন্যতম একটি। সেই অঙ্গীকার বাস্তবায়নেরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে চালু হয় প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য বয়স্কভাতা কার্যক্রম, ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে চালু হয় বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা। পরবর্তীতে সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার ‘দিন বদলের সনদ-ভিশন ২০২১’ এর প্রতিশ্রুতি ছিলো গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনয়ন ও টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সকল সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া। দ্বিতীয় মেয়াদে আবার সরকার গঠন করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তির পরিমাণ বাড়ানো হয় কয়েকগুণ। এরই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সুদক্ষ তত্ত্বাবধানে গত অর্থবছরে (২০২০-২১) জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে ৪৯ লাখ বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাকে ভাতা প্রদান করা হয় বলে জানিয়েছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ খাতে বাজেট ছিলো দুই হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। বিধবা ভাতা দেয়া হয় জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা করে ২০ লাখ ৫০ হাজার নারীকে, যা শুরুতে ছিলো চার লাখ জন। এ খাতে বাজেট ছিলো এক হাজার ২৩০ কোটি টাকা। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জনপ্রতি ভাতা ২০০ টাকা বর্তমানে ৭৫০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ভাতাভোগীর সংখ্যা এক লাখ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৮ লাখ, বাজেট ছিলো এক হাজার ৬২০ কোটি টাকা। প্রতিবন্ধী জরিপ কর্মসূচির আওতায় এ পর্যন্ত প্রায় ২২ লাখ ৯৬ হাজার ৪৮০ জন প্রতিবন্ধী শনাক্ত করা হয়েছে এবং প্রত্যেক প্রতিবন্ধীকেই ভাতার আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ২০৯ জন থেকে এক লাখে উন্নীত করা হয়েছে। গত অর্থবছরে ১১২ উপজেলায় শতভাগ বয়স্ক ও বিধবা ভাতার জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য উপজেলায়ও শতভাগ বরাদ্দ নিশ্চিত করা হবে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। 

২০২০-২১ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি খাতে মন্ত্রণালয়ের বাজেট ছয় হাজার ৪৩১ টাকা। এ বছরের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে জুন পর্যন্ত ভাতা ব্যবস্থাপনা সিস্টেমে ৮৮ লাখ ৫০ হাজার জনের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে ৮৭ লাখ ৬৩ হাজার জন ভাতাভোগীর মোবাইল ব্যাংক হিসেবে ভাতার অর্থ প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও একই বছরে করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করতে সুদমুক্ত পল্লী (সমাজসেবা) কার্যক্রম খাতে ৭৫ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চলতি মাসেও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ থেকে দেশের ১১টি জেলায় অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্যও ৫০ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। এছাড়াও জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ থেকে ৫২৪টি রোগীকল্যাণ সমিতিকে ইএফটির মাধ্যমে ১৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকার অনুদান প্রদান করা হয়েছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে মন্ত্রণালয়াধীন আটটি সেবাকে ডিজিটালাইজড করার কাজ চলমান রয়েছে। ইন্টিগ্রেটেড ডিজিটাল সার্ভিস ডেলিভারি প্লাটফর্ম বাস্তবায়িত হলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দপ্তর-সংস্থা সমূহের ৮৫ ভাগ ডিজিটাল হবে এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সেবাগ্রহীতারা বিনা ভোগান্তিতে সব ধরনের সেবা পাবে। এছাড়াও মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমকে ডিজিটাল করতে অর্থায়ন ব্যবস্থাপনা সিস্টেম সফটওয়্যার, অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেম ফর ডিসঅ্যাবিলিটি স্কুল অ্যাপ্রোভাল সফটওয়্যার, থেরাপি সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সফটওয়্যার, অনলাইন ট্রেইনিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ফর সোশ্যাল সার্ভিস একাডেমি সফটওয়্যার ও ই-বুলেটিন চালু করা হয়েছে। এ সফটওয়্যার সমূহের মাধ্যমে সেবা প্রত্যাশীদের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি প্রশাসনিক কার্যক্রমেও স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা এসেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সফটওয়্যারের পাশাপাশি দুস্থ, অসহায়, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক সাহায্য ও চিকিৎসা অনুদান প্রদানের কার্যক্রমও অনলাইনে চালু করা হয়েছে। ক্যান্সার, কিডনি, লিভারসিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হূদরোগ এবং থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি সহজীকরণে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে। যার ফলে প্রায় পাঁচ লাখ সেবাপ্রত্যাশী উপকৃত হচ্ছেন বলে জানান সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা।

আমারসংবাদ/জেআই