Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

সাত মাসে টিকাদান পাঁচ কোটি ডোজ

মাহমুদুল হাসান

অক্টোবর ১, ২০২১, ০৬:৩৫ পিএম


সাত মাসে টিকাদান পাঁচ কোটি ডোজ
  • বিশেষ গণটিকা কার্যক্রমে এসেছে গতি
  • মজুত আছে প্রায় পৌনে এক কোটি ডোজ
  • প্রক্রিয়াধীন ২৪ কোটি ডোজ টিকা ক্রয়
  • ভারতে আছে দুই কোটি ৩০ লাখ ডোজ

সাত মাসে পাঁচ কোটির বেশি কোভিড-১৯ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। এ সময় দুই ডোজের অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম, মডার্না ও ফাইজারের টিকা দেয়া হয়। এদিকে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করলেও গত সাত মাসে মাত্র এক কোটি ৬৯ লাখের সামান্য বেশি টিকা পেয়েছে।

অভিযোগ আছে, নিবন্ধনের পর সপ্তাহ থেকে মাস গড়িয়ে গেলেও মিলছে না টিকা প্রাপ্তির এসএমএস। আবার এসএমএস পেয়েও নেই স্বস্তি। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রের বাইরে লম্বা সারি। চাহিদার অনুপাতে টিকা সরবরাহ কম বলেও বিস্তর অভিযোগ। মজুত আছে মাত্র পৌনে এক কোটি ডোজ। নিবন্ধন করে প্রতিক্ষায় আছেন প্রায় দেড় কোটির বেশি মানুষ।

এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে সবসময় বলা হচ্ছে, করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ, রোগীর চিকিৎসা ও টিকাদানে সরকার বদ্ধপরিকর। তাই কিছুটা বিলম্ব হলেও দেশের ৮০ শতাংশের বেশি মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (অফিসার ইনচার্জ) বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারের আন্তরিকতায় ঘাটতি নেই। সংক্রমণ শনাক্তের হার কমলেও বৈশ্বিক মহামারি মোকাবিলায় সরকার টিকায় জোর দিচ্ছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ক্যাম্পেইনে গত মঙ্গল ও বুধবার ৭৮ লাখের বেশি ডোজ টিকা নিয়েছে। আজ শনিবার কোভ্যাক্সের সহযোগিতার আওতায় জার্মান থেকে আরও সাত লাখ ৯০ হাজার ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রাপ্তির কথা রয়েছে। ক্রয়চুক্তির আলোকে চীন থেকে প্রতি মাসে দুই কোটি ডোজ করে ছয় কোটি ডোজ টিকা আসবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) সহায়তায় আরও ১০ কোটি ডোজ টিকা কেনা হচ্ছে। ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই কোটি ৩০ লাখ ডোজ টিকা আটকে আছে। এ ছাড়াও আরও ২৪ লাখ ডোজ টিকা ক্রয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এ ধারা অব্যাহত থাকলে ও সুপরিকল্পনার মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রম বাস্তবায়ন করলে সবার টিকায় অধিকার নিশ্চিত হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্মা, মডার্না ভ্যাকসিনসহ ক্রয়কৃত ও কোভ্যাক্সের সহযোগিতার আওতায় দেশে মোট টিকা এসেছে পাঁচ কোটি ৬৯ লাখ ৯৬ হাজার ৬০৭ ডোজ।

আজ শনিবার কোভ্যাক্সের আওতায় জার্মান থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার সাত লাখ ৯০ হাজার ডোজ টিকা দেশে আসার কথা রয়েছে। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এদিকে অপর এক বার্তায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত চার কোটি ৯০ লাখ ৮৭ হাজার ৭২৮ জন করোনা টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে চার কোটি ৮৪ লাখ ৪৫ হাজার ২৪৩ জন এবং পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে ছয় লাখ ৪২ হাজার ৪৮৫ জন নিবন্ধন করেছেন। নিবন্ধন শেষে টিকার অপেক্ষায় আছে আরও এক কোটি ৫৭ লাখ ৬২ হাজার ৭২১ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইস বিভাগের তথ্যমতে, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে পাঁচ কোটি দুই লাখ ৪৫ হাজার ২৫৫ ডোজ করোনার টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। তার মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছে তিন কোটি ৩৩ লাখ ২৫ হাজার সাতজন। আর দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছে এক কোটি ৬৯ লাখ ২০ হাজার ২৪৮ জন।

এ পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা গ্রহীতার মধ্যে পুরুষ এক কোটি ৭৯ লাখ ৯৬ হাজার ২৪৭ জন। আর নারী এক কোটি ৫৩ লাখ ২৮ হাজার ৭৬০ জন। দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহীতার মধ্যে পুরুষ ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৫ জন। আর নারী ৭২ লাখ ৩২ হাজার ৫৭৩ জন।

এরমধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড প্রয়োগ করা হয়েছে এক কোটি ২৯ লাখ ৫৫ হাজার ৭০ ডোজ। ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে এক লাখ ৯০ হাজার ৯৫৫ ডোজ। চীনের সিনোফার্মের টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে তিন কোটি ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৯ ডোজ। আর মডার্নার টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে ৫১ লাখ ৮১১ ডোজ।