Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

করোনায় মৃত্যুঝুঁকি থাকছেই দ্রুত টিকা নিশ্চিত করতে হবে

অক্টোবর ২৫, ২০২১, ০৯:৫০ পিএম


করোনায় মৃত্যুঝুঁকি থাকছেই দ্রুত টিকা নিশ্চিত করতে হবে

বৈশ্বিক করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাংলাদেশে ক্রমেই কমে এলেও গত ২২ ও ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ও মৃত্যু দুই-ই বেড়েছে। ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৭৮ জন। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল আর নতুন শনাক্ত হয়েছিল ২৩২ জন। কাজেই সংক্রমণের মাত্রা কখন বাড়বে আর কখন কমবে— তা কারো জানা নেই।

তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করার কোনো বিকল্প নেই। সাথে প্রতিষেধক দুই ডোজ টিকা গ্রহণ করে সবাইকে নিরাপদ করতে হবে। সরকার দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে চেষ্টা করছে। তবে টিকাদানের ধীরগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। দেশের দুই কোটি দুই লাখের বেশি মানুষ পূর্ণ দুই ডোজ টিকা পেয়েছে। এ নিয়ে ১২ শতাংশ মানুষ পূর্ণ দুই ডোজ টিকার আওতায় এসেছে।

টিকা গ্রহণের জন্য এ পর্যন্ত ৫ কোটি ৬০ লাখ ২১ হাজার ৭৪৬ জন নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৬৮ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২ কোটি ২ লাখ ৬৪ হাজার ৫১৩ জন। এ পর্যন্ত দেশে টিকা এসেছে প্রায় সাড়ে সাত কোটি ডোজ। গত ১০ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, চলতি মাসে তিন কোটির বেশি টিকা আসবে। নভেম্বরে আসবে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টিকা। ডিসেম্বরে আসবে পাঁচ কোটি। আর জানুয়ারিতে আসবে পৌনে চার কোটি টিকা। অর্থাৎ জানুয়ারির মধ্যে কম-বেশি ১৬ কোটি টিকা আসবে।

শুধু প্রাপ্তবয়স্ক নয়, শিশু-কিশোরদেরও টিকা দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। আসলে করোনা সংক্রমণের প্রথমদিকে আমরা একটি উৎসের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় টিকাদানে পিছিয়ে পড়েছি। বিকল্প টিকার উৎস থেকে সংগ্রহের জন্য আমরা দেরিতে যোগাযোগ করায় এক সঙ্গে বেশি টিকা পাচ্ছি না। দুই ডোজ টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। দুদিন আগে ভারত ১০০ কোটি ডোজ টিকা দিয়েছে। বিশ্ব গণমাধ্যম এটা খুব বড় করে দেখছে। এর আগে ১০০ কোটি ডোজ টিকা দিয়েছিল চীন। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের ২১ শতাংশ জনগোষ্ঠী পূর্ণ দুই ডোজ টিকার আওতায় এসেছে। কোভিড-১৯ টাস্কফোর্স বলছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পূর্ণ দুই ডোজ টিকা দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ভুটান। দেশটির ৬৮ শতাংশ মানুষ পূর্ণ দুই ডোজ টিকা পেয়েছে। এরপর ৬৪ শতাংশ মানুষকে দুই ডোজ টিকা দিয়ে এগিয়ে আছে মালদ্বীপ। সবচেয়ে পেছনে রয়েছে মিয়ানমার। সেখানে মাত্র ৮ শতাংশ মানুষ দুই ডোজ টিকা পেয়েছে।

বাংলাদেশে টিকা পাওয়ার জটিলতার কারণে টিকাদানে একটু পিছিয়ে আছে। এখানে কিছু টিকা এসেছে উপহার হিসেবে, কিছু পেয়েছে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে। আর কিছু টিকা  কেনা হয়েছে। এখন অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্ম ও মডার্না— এ চার ধরনের টিকা দেয়া হচ্ছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বলছে, দ্রুত টিকা সংগ্রহ করে দেশের সিংহভাগ মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সংক্রমণ ও মৃত্যু কমেছে বলে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। সচেতনতার সাথে টিকা দিয়ে সবাইকে নিরাপদ করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এতে সরকারের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই।