Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

ইতিহাসের আলোয় ঢাকা কলেজ

ওবাইদুর সাঈদ

নভেম্বর ১৯, ২০২১, ০৬:০০ পিএম


ইতিহাসের আলোয় ঢাকা কলেজ

ঢাকা কলেজ। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ‘নিজেকে জানো’ মূলমন্ত্র ধারণ করে দীর্ঘ ১৮০ বছরের পথচলায় সময়ের সাথে শিক্ষার আলো বিতরণের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্বের গুণাবলিসম্পন্ন মানুষ তৈরির কারখানা হিসেবেই পরিচিত দেড়শ বছরেরও বেশি পুরোনো এই বিদ্যাপীঠ। ১৮৪১ সালের ২০ নভেম্বর প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কলেজটি হয়ে ওঠে পূর্ব বাংলার শিক্ষা বিস্তারের মূল কেন্দ্রবিন্দু। শুধু ঢাকা নগরীই নয়, এই উপমহাদেশের বিদ্যারণ্যে প্রবীণ এক বৃক্ষের নাম ‘ঢাকা কলেজ’।

১৮৬৬ সালে ঢাকায় কর্মরত ইংরেজ জয়েন্ট কালেক্টর আর্থার লয়েড ক্লের লেখা  ‘Principal Heads of the History and statistics of the Dacca Division’ নামক এক প্রতিবেদনে ঢাকা কলেজের প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে চমৎকার তথ্য পাওয়া যায়। তার লেখা এই প্রতিবেদনটি পরবর্তী ১৮৬৮ সালে প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়— ‘Founded by the British ‰overnment of India, for the instruction of the native youths of the Eastern Districts of Bengal in European literature and Science.The first stone of the edifice is laid by the Right Reverend Daniel, Lord Bishop of Calcutta, and Metropolitan of India. On the 20th day November, A.D. 1841, in the reign of Her most Majesty.’ অর্থাৎ এখানে ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠার তারিখ হিসেবে ২০ নভেম্বরের কথাই উল্লেখ আছে।

 ১৮৪১ সালের ২০ নভেম্বর কলকাতার বিশপ রেভারেন্ড ড্যানিয়েল ঢাকা কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও ওই ভবনের নকশা করেছিলেন কর্নেল গ্যাসটিন। খাঁটি ব্রিটিশ ঢঙ আর বিলাতি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আদলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানটি পালন করা হয়। তবে ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠার পটভূমিও বেশ চমৎকার। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ইংরেজরা ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ১৭৬৫ সালে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এ অঞ্চলের শাসকে পরিণত হয় তারা। ইংরেজরা নিজেদেরকে শাসক হিসেবে পরিচয় না দিলেও ১৭৭২ সালে গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস এই মুখোশ খুলে দিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হয়ে সরাসরি এ দেশের শাসনভার গ্রহণ করেন। পরবর্তী ৬২ বছর পর্যন্ত তারা এই অঞ্চলের অধিবাসীদের জন্য     কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। 

এত দীর্ঘ সময়ে এই অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থা ঐতিহ্যগতভাবেই চলছিল। এরপর ১৮২৮ সালের ২০ আগস্ট রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্মধর্ম প্রতিষ্ঠা করেন। মানুষের এই আগ্রহ দেখে ১৮৩০ সালে সরকার এক শিক্ষানীতি গ্রহণ করে। পরবর্তীকালে ১৮৩৫ সালে ২০ এপ্রিল দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কিত দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ ‘জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন (General Committee of Public Instruction) লর্ড বেন্টিকের কাছে একটি প্রতিবেদন পেশ করে। 

প্রতিবেদনটিতে ইংরেজি সাহিত্য ও বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য যতগুলো সম্ভব বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করে। ওই প্রতিবেদনের হাত ধরেই ১৮৩৫ সালের ১৫ জুলাই থেকে বুড়িগঙ্গার তীরে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় ‘ঢাকা ইংলিশ সেমিনারি’ যেটি বর্তমানে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল নামে পরিচিত।’ শিক্ষা-দীক্ষায় তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে থাকা এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে তৎকালীন সিভিল সার্জন ড. জেমস টেইলর ও ঢাকা জেলার ম্যাজিস্ট্রেট মি. গ্রান্টের ভূমিকা ছিলো প্রশংসনীয়। দীর্ঘ প্রচেষ্টায় এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফলে সমাজের সামগ্রিক চিত্র বদলে যেতে থাকে।

পাশ্চাত্যের কলাবিদ্যা, বিজ্ঞান এবং দর্শন বিষয়ে জ্ঞান লাভের পথ উন্মুক্ত হয় এ দেশের মানুষের মাঝে। মানুষের ব্যাপক আগ্রহ আর সাড়া দেখে ঢাকা ইংলিশ সেমিনারি স্কুলকে একটি কলেজে বা একটি আঞ্চলিক উচ্চতর ইংরেজি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করা হয়। যার নাম দেয়া হয় ঢাকা সেন্ট্রাল কলেজ বা সংক্ষেপে ঢাকা কলেজ। এরপর ঢাকা কলেজের জন্য নির্মাণ করা হয় কার্জন হল। ভিক্টোরীয় স্থাপত্যরীতি, মোগল স্থাপত্যশৈলী আর বাংলার স্বতন্ত্র সংবেদনশীল বৈশিষ্ট্য নিয়ে তৈরি এই ভবনটি ১৯০৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রতিনিধি ভাইসর লর্ড কার্জন ঢাকায় এসে এর উদ্বোধন করেন। ১৯০৮ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। ওই বছরই ঢাকা কলেজ কার্জন হলে অভিবাসিত হয়। 

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার পর ঢাকা কলেজ তার সর্বস্ব দিয়ে ঠাঁই নেয় পুরাতন হাইকোর্টের লাট ভবনে (বর্তমান সুপ্রিম কোর্টে)। ১৯৩৯ সালে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে সশস্ত্র সেনারা হাইকোর্ট ভবন দখল করে তাঁবু হিসেবে ব্যবহার করে। ১৯৪৩ সালে ইসলামিয়া ইন্টারমিডিয়েট কলেজের (বর্তমান কবি নজরুল কলেজের মূল ভবনে) কিছু দিন অস্থায়ীভাবে কার্যক্রম চালায়। এর অল্পদিন পরেই ফুলবাড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন সিদ্দিকবাজারে খান বাহাদুর আবদুল হাইয়ের মরচে ধরা পুরাতন দালানে কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৫৫ সালে তার আপন গৃহের সন্ধান পায় ঢাকা কলেজ। স্থায়ী ঠিকানা হয় মিরপুর রোড, ধানমন্ডি ঢাকা-১২০৫-এ। সে সময়ে ঢাকা কলেজের আয়তন ছিলো ২৪ একর। তবে স্বৈরশাসক এরশাদ সরকারের সময় ছয় একর জমি ছেড়ে দিতে বাধ্য করা হয় ঢাকা কলেজকে। বর্তমানে ঢাকা কলেজের মোট জমির পরিমাণ ১৮ একর। ১৮৪১ সালে ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠার পর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং হিন্দু কলেজের শিক্ষক জে. আয়ারল্যান্ডকে ঢাকা কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ নিযুক্ত করা হয়। তিনি ১৮৪১ থেকে ১৮৪৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

ঢাকা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এই তিন ধরনের শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। ইতিহাসের অন্যতম এই বিদ্যাপীঠে ১৯৭২ সালে ছয়টি বিষয়ে স্নাতক কোর্স শুরু হলেও এখন ১৯টি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর বিষয়ে পাঠদান করা হয়। বিভাগসমূহ হলো— দর্শন, ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, প্রাণিবিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি, সমাজবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, বাংলা, পরিসংখ্যান, ইংরেজি, উদ্ভিদবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ইসলামি শিক্ষা, ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান। এ ছাড়াও কলেজের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্সে বাধ্যতামূলক আইসিটি কোর্স করানো হয়।

১৮৪১ সালে পথচলা শুরুর পর ১৮৫৯-৬০ সালে কলেজের ছাত্রসংখ্যা ৫২ জনে দাঁড়ায়। ১৯১৭-১৮ সালে তা ৯৯৫ জনে গিয়ে দাঁড়ায়। বর্তমানে কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। ২৫০ জন শিক্ষক আর প্রায় ১৯০ কর্মচারী মিলিয়ে ঢাকা কলেজ যেনো রাজধানীর বুকে এক চিলতে ভালোবাসার পরশ দিয়ে কাছে ডেকে নেয়। বর্তমানে ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাসের সংখ্যা আটটি। উত্তর ছাত্রাবাস, দক্ষিণ ছাত্রাবাস, দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাস, শহীদ ফরহাদ ছাত্রাবাস, আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস, পশ্চিম ছাত্রাবাস, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ছাত্রাবাস, শেখ কামাল ছাত্রবাস। ছাত্রাবাসগুলোতে প্রায় দুই হাজারের মতো আবাসিক শিক্ষার্থী রয়েছেন। এসব ছাত্রাবাসে কত যে দেশবরেণ্য মানুষের বসবাস ছিলো তার সংখ্যা নির্ধারণ করা কঠিন। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য কলেজের পরিবহন পুলে আটটি বাস রয়েছে। 

দক্ষিণ ছাত্রাবাসের ২০৬ নং কক্ষ। এই কক্ষে থেকেই উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েছেন দেশবরেণ্য খ্যাতিমান লেখক হুমায়ূন আহমেদ। বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান লেখক ‘চিলেকোঠার সেপাই’ খ্যাত আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২ থেকে ৪ জানুয়ারি ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। এই লেখকের স্মরণে নির্মিত হয়েছে ‘আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ছাত্রাবাস’। ‘পশ্চিম ছাত্রাবাস’ স্থাপিত হয় ১৯৬৪ সালে। এই ছাত্রাবাসে শুধু সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থীদের বসতি। পাশেই রয়েছে ‘আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস’। এই ছাত্রাবাস একটা বিশেষ কারণে বিখ্যাত। এই ছাত্রাবাসের দ্বিতীয় তলায় ২০৯ নং কক্ষে নিজের শিক্ষাজীবন কাটিয়েছেন মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইয়ুম। 

আরেক ছাত্রাবাসের নাম ‘শহীদ ফরহাদ হোসেন ছাত্রাবাস’। শহীদ ফরহাদ সম্পর্কে জানা যায়, তিনি ছিলেন ১৯৯১-৯২ সেশনে দ্বাদশ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। ১৯৯২ সালের ২৫ আগস্ট নীলক্ষেতের বাকুশাহ মার্কেটে ঘাতকরা নির্মমভাবে ফরহাদকে হত্যা করে। তারই স্মরণে নামকরণ করা হয় এই ছাত্রাবাসের। এ ছাড়াও উত্তর ছাত্রাবাস, দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাস ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে শেখ কামাল ছাত্রাবাস।

পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশে রয়েছে বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী এবং সামাজিক সংগঠন। ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপ, ঢাকা কলেজ সাংবাদিক সমিতি, বিএনসিসি, রেড ক্রিসেন্ট, ঢাকা কলেজ অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব, বিজনেস ক্লাব, ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, ডিবেটিং সোসাইটি,  রাইটার্স ফোরাম, মিউজিক স্কুল, আবৃত্তি সংসদ, সোস্যাল সাইন্স ক্লাব, সায়েন্স ক্লাবসহ আরও অনেক সংগঠন। শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য বড় বড় দুটি মাঠ। টেনিস গ্রাউন্ড রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভেতর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে স্বাধীনতা চত্বর, বিজয় চত্বর। রয়েছে শান বাঁধানো পুকুর ঘাট। শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পানি সরবরাহের জন্য রয়েছে পানির পাম্প।

কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় ১৮৪১ সালে ঢাকা কলেজের পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। লাইব্রেরিতে সজ্জিত পাঠকক্ষসহ ৫০ হাজার বই রয়েছে। গ্রন্থাগারটি প্রতিদিন দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে পাঠ্য সহায়তা সরবরাহ করে। এটি সকাল ৮টায় খোলে এবং বিকেল ৪টায় বন্ধ হয়। দেশ ও জাতির দুর্দিনে ঢাকা কলেজ দুঃশাসনের মরণযন্ত্রণা আর কষ্ট সংগ্রামকে ধারণ করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাজপথে। 

১৯৩৯-৪৫ সালের বিশ্বযুদ্ধ, ১৯৪১ সালের দোল দাঙ্গা, ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬২ সালের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তথা শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, এমনকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনে এই কলেজের ছাত্রদের অংশগ্রহণ ছিলো অগ্রভাগে।

১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঢাকা কলেজের আট ছাত্র শহীদ হয়েছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া এই আট বীরকে শ্রদ্ধায় জড়িয়ে রাখতে মূল ভবনের প্রবেশদ্বারের বাম পাশে দেয়ালে পাথরখচিত স্মৃতিফলক রাখা আছে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদ আ ন ম নজীব উদ্দিন খান খুররমের নামে ঢাকা কলেজের মূল অডিটোরিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে। শহীদদের প্রতি সম্মান ও তাদের স্মৃতি অমলীন রাখতে পর্যায়ক্রমে আবাসিক হলসমূহের নাম এই বীর শহীদদের নামে নামকরণ করা হবে বলেও জানায় কলেজ প্রশাসন। ঢাকা কলেজে এখন পর্যন্ত ৭৩ জন অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। 

এর মধ্যে ড. টি ওয়াইজ, ডব্লিউ ব্রেনাড, ডব্লিউ বুথ, এফ সি টার্নার, এ জে আর্চিবল্ড এবং ড. পি কে রায় অন্যতম। এ ছাড়া শওকত ওসমান, আশরাফ সিদ্দিকী, সৈয়দ আবু রুশদ মতিনউদ্দিন, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের মতো খ্যাতিমান ব্যক্তিরাও এ কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের তালিকায় আছেন খান বাহাদুর বজলুর রহিম, চট্টগ্রাম বিভাগের স্কুল পরিদর্শক আবদুল আজিজ, কলকাতার অতিরিক্ত প্রধান প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট জাহেদুর রহমান, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নিবন্ধক নাজিরউদ্দীন আহমদ, লেখক হুমায়ূন আহমেদসহ বহু নামি রাজনৈতিক, খেলোয়াড় ও সরকারি আমলা।

সময়ের সাথে সাথে ১৮০ বছরের পথচলায় ঐতিহ্য-গৌরবের ঢাকা কলেজ। অনেক কাঁটাযুক্ত আর বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে ১৮১ বছরে পদার্পণ করেছে কলেজটি। কালের আবর্তে দুই শতাব্দীর কাছাকাছি চলে এসেছে এই প্রতিষ্ঠান। মেধাবীদের পছন্দের তালিকায় এখনো শীর্ষে ঢাকা কলেজ। অতীতের মতো এখনো দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্বে এই কলেজের ছাত্ররাই। গৌরবের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে আগামী প্রজন্মও এমনই আশাবাদ।