Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

নতুন মেয়রের কাছে প্রত্যাশা আমাদের অনেক বেশি

ফারুক আলম

জুলাই ৫, ২০২০, ০১:৪২ পিএম


নতুন মেয়রের কাছে প্রত্যাশা আমাদের অনেক বেশি

মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে কার্যালয়ে দিনরাত অবস্থান করে এলাকাবাসীর পাশে ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২০ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন। এইসময় মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন তিনি।

বর্তমানেও তিনি পরিবার-পরিজন ছেড়ে ২৪ ঘন্টা কার্যালয়ে অবস্থান করে মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।  

করোনাকালীন সময়ে নিজ ওয়ার্ডের কার্যক্রম নিয়ে আমার সংবাদের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন।

বিশেষ সাক্ষাৎকারে করোনাকালীন কার্যক্রম নিয়ে তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ডে যারা ছিন্নমূল, হতদরিদ্র, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী যারা আমার এখানে বসবাস করে তাদের প্রত্যেকের ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। পাশাপাশি সরকারি যেসব সাহায্য এসেছে বিশেষ করে ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে চাল, খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে ওএমএস চাল এগুলো আমরা তাদেরকে পৌঁছে দিচ্ছি। এর বাহিরেও আমাদের নবনির্বাচিত মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস সাহেবও আমাদের ওয়ার্ডে খাদ্যসামগ্রী পাঠিয়েছেন। এটাও আমরা দিয়েছি। সেগুনবাগিচা সোসাইটি ১০০ পরিবারকে দিয়েছে। এটাও আমরা দিয়েছি। ব্যক্তিগত ভাবে একজন কাউন্সিলর হিসেবে নয়, একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার সামর্থ্য অনুযায়ী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মানার জন্য কাজ করছি। নেত্রী বলেছেন, ভোট যেভাবে তোমরা চেয়েছো, ঠিক সেভাবে প্রত্যেকটা ঘরে ঘরে গিয়ে খাবার পৌঁছে দেও। আমি চেষ্টা করেছি আমার প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশকে বাস্তবায়ন করার জন্য। আমার নিজস্ব অর্থায়নের মাধ্যমে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। এটাই হচ্ছে আমার সফলতা। নেত্রীর নির্দেশ পালন করতে পেরেছি এটায় আমি সার্থকতা। এজন্য আমি নিজেকে ধন্য মনে করি।

এ পযর্ন্ত প্রায় ৬ হাজার পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন বলে জানান জনপ্রিয় এ কাউন্সিলর।

বাসায় না গিয়ে দীর্ঘ এই সময় কার্যালয়ে অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর রতন বলেন, আমি যদি বাসায় থাকতাম এইমানুষগুলো আমাকে পেত না। কারণ আমি যে বাসায় থাকি সেখানে অনেকগুলো পরিবার থাকে। কোনো পরিবারেই আমাকে সেখানে এলাউ করত না। বিশেষ করে আমার ৩ কন্যা সন্তান ও আমার স্ত্রী আছে। প্রতিদিন আমার শতশত মানুষের সাথে মিশতে হয়। মহান আল্লাহ আমাকে মাফ করুন আমার যদি কিছু হয় তাহলে আমি চাই না আমার জন্য আমার পরিবার কোনো সংকটে পড়ুক। দ্বিতীয় হচ্ছে আমি যদি আমার পরিবারকে সময় দেই তাহলে আমি এখন পর্যন্ত যে ৬ হাজার পরিবারের কাছে যেতে পেরেছি এটা আমার দ্বারা সম্ভব হত না। আমার লক্ষ্য মানুষের সেবা করা। আমার রাজনীতি মানুষের জন্য। আমি একজন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। আমি নেত্রীর একজন সিনিয়র কর্মী হিসেবে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছি।

আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে যদি মানুষের পাশে না থাকি তাহলে আমি মানুষের কাছে বেইমান হিসেবে পরিচিত হবো, বলেন কাউন্সিলর রতন।

করোনাভাইরাসের ভীতিকর সময়ে কার্যালয়ে অবস্থান করে জনগণের সেবার বিষয়ে পরিবার থেকে কোনো আপত্তি করা হয়েছিলো কিনা জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২০ নং ওয়ার্ডের এই কাউন্সিলর বলেন, আমার ফ্যামিলি থেকে কোনো আপত্তি করা হয়নি। যেহেতু এটি আমার নৈতিক দায়িত্ব। জনগণের ভোটাধিকার আমার পক্ষে সুতরাং মানুষের জন্য আমার কাজ করতে হবে। নৈতিক দায়িত্ব থেকেই আমার পরিবার আমাকে সমর্থন দিয়েছে এবং আমার জন্য নিয়মিত খাবার পাঠিয়ে দেয়। এজন্য আমি আমার পরিবারের কাছেও কৃতজ্ঞ।

করোনার সময় কর্মহীনদের জন্য কার্যক্রমের বিষয়ে কাউন্সিলর রতন বলেন, কর্মহীনদের জন্য সিটি করপোরশেন থেকে যা বরাদ্ধ আসছে তা সবাইকে দিয়েছি এবং দিয়ে যাচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি শক্ত হাতে দেশের এই দুর্যোগ মহামারী সামাল দিয়ে যাচ্ছেন। সারাবিশ্বের সংকটময় মুহূর্তে আমাদের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা হিসেবে যে দায়িত্ব তিনি পালন করছেন আমি ওনার কাছে চির কৃতজ্ঞ। সারা বাঙ্গালী জাতি ওনার কাছে কৃতজ্ঞ। এই দুযোর্গে কেউ না খেয়ে মারা যায়নি। আমাদের নেত্রী দলীয় নেতাকর্মী ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং সেই নির্দেশ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী পালন করে যাচ্ছে। আমরা জনপ্রতিনিধিরাও কাজ করে যাচ্ছি।

নতুন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে প্রত্যাশার বিষয়ে ২০ নং ওয়ার্ডের এই কাউন্সিলর বলেন, নতুন মেয়রের কাছে প্রত্যাশা আমাদের অনেক বেশি। কারণ তিনি দীর্ঘ ১১ বছর মহান জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। ওনি ৪টি থানা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। সেখানে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যারা ছিলো এবং যেহেতু তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত সংসদ সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং সকল সহযোগী সংগঠন এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি প্রত্যেকেই ওনার কর্মকান্ডে দলীয় নেতা থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা কর্মী পযর্ন্ত সকলেই সন্তুষ্ট ছিলেন। ঢাকা শহরে ওনার ৪টি থানায় কোনো কোন্দল ছিলো না।

কাউন্সিলর রতন বলেন, আমি বিশ্বাস করি তখন যিনি ৬ জন কাউন্সিলর যারা দায়িত্ব পালন করেছিলেন সেই এলাকার সবাইকে খুশি রাখতে পেরেছিলেন। এখন ২৫টি থানা। ১০০জন কাউন্সিলরকে তিনি অবশ্যই খুশি রাখতে পারবেন।

যিনি ৪টি থানার নেতাকর্মীকে খুশি রাখতে পেরেছেন। সেখানে তিনি ২৫টি থানার নেতাকর্মীকেও খুশি রাখতে পারবেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে শতভাগ বিশ্বাস করি কাউন্সিলররা বা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের সম্মান পাবে। যোগ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২০ ওয়ার্ডের এই জনপ্রতিনিধি।

আমারসংবাদ/জেআই